النحل

تفسير سورة النحل

الترجمة البنغالية

বাংলা

الترجمة البنغالية

ترجمة معاني القرآن الكريم للغة البنغالية ترجمها د. أبو بكر محمد زكريا، نشرها مجمع الملك فهد لطباعة المصحف الشريف بالمدينة المنورة. عام الطبعة 1436هـ.

﴿بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ أَتَىٰ أَمْرُ اللَّهِ فَلَا تَسْتَعْجِلُوهُ ۚ سُبْحَانَهُ وَتَعَالَىٰ عَمَّا يُشْرِكُونَ﴾

আল্লাহ্‌র [১] আদেশ আসবেই [২]; কাজেই তা [৩] তাড়াতাড়ি পেতে চেয়ো না। তিনি মহিমান্বিত এবং তারা যা শরীক করে তিনি তা থেকে উর্ধ্বে [৪]।

﴿يُنَزِّلُ الْمَلَائِكَةَ بِالرُّوحِ مِنْ أَمْرِهِ عَلَىٰ مَنْ يَشَاءُ مِنْ عِبَادِهِ أَنْ أَنْذِرُوا أَنَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا أَنَا فَاتَّقُونِ﴾

তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার প্রতি ইচ্ছে [১] স্বীয় নির্দেশে রূহ [২]- ওহীসহ ফিরিশতা- পাঠান এ বলে যে, তোমরা সতর্ক কর, ‘নিশ্চয় আমি ছাড়া কোন সত্য ইলাহ নেই [৩]; কাজেই তোমরা আমার ব্যাপারে তাকওয়া অবলম্বন কর [৪]।

﴿خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ بِالْحَقِّ ۚ تَعَالَىٰ عَمَّا يُشْرِكُونَ﴾

তিনি যথাযথভাবে [১] আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টি করেছেন; তারা যা শরীক করে তিনি তার উর্ধ্বে [২]।

﴿خَلَقَ الْإِنْسَانَ مِنْ نُطْفَةٍ فَإِذَا هُوَ خَصِيمٌ مُبِينٌ﴾

তিনি শুক্র হতে মানুষ সৃষ্টি করেছেন [১]; অথচ দেখুন, সে প্রকাশ্য বিতন্ডাকারী [২] !

﴿وَالْأَنْعَامَ خَلَقَهَا ۗ لَكُمْ فِيهَا دِفْءٌ وَمَنَافِعُ وَمِنْهَا تَأْكُلُونَ﴾

আর চতুষ্পদ জন্তুগুলো, তিনি তা সৃষ্টি করেছেন; তোমাদের জন্য তাতে শীত নিবারক উপকরণ ও বহু উপকার রয়েছে। এবং সেগুলো থেকে তোমরা আহার করে থাক [১]।

﴿وَلَكُمْ فِيهَا جَمَالٌ حِينَ تُرِيحُونَ وَحِينَ تَسْرَحُونَ﴾

আর তোমরা যখন গোধুলি লগ্নে তাদেরকে চারণভুমি হতে ঘরে নিয়ে আস এবং প্রভাতে যখন তাদেরকে চারণভূমিতে নিয়ে যাও তখন তোমরা তাদের সৌন্দর্য উপভোগ কর [১]।

﴿وَتَحْمِلُ أَثْقَالَكُمْ إِلَىٰ بَلَدٍ لَمْ تَكُونُوا بَالِغِيهِ إِلَّا بِشِقِّ الْأَنْفُسِ ۚ إِنَّ رَبَّكُمْ لَرَءُوفٌ رَحِيمٌ﴾

আর তারা তোমাদের ভার বহন করে নিয়ে যায় এমন দেশে যেখানে প্রাণান্ত কষ্ট ছাড়া তোমরা পৌছতে পারতে না [১]। তোমাদের রব তো অবশ্যই দয়ার্দ্র, পরম দয়ালু [২]।

﴿وَالْخَيْلَ وَالْبِغَالَ وَالْحَمِيرَ لِتَرْكَبُوهَا وَزِينَةً ۚ وَيَخْلُقُ مَا لَا تَعْلَمُونَ﴾

আর তোমাদের আরোহনের জন্য এবং শোভার জন্য সৃষ্টি করেছেন ঘোড়া, খচ্চর ও গাধা [১] এবং তিনি সৃষ্টি করেন এমন অনেক কিছু, যা তোমরা জান না [২]

﴿وَعَلَى اللَّهِ قَصْدُ السَّبِيلِ وَمِنْهَا جَائِرٌ ۚ وَلَوْ شَاءَ لَهَدَاكُمْ أَجْمَعِينَ﴾

আর সরল পথ আল্লাহ্‌র কাছে পৌছায় [১], কিন্তু পথগুলোর মধ্যে বাঁকা পথও আছে [২]। আর তিনি ইচ্ছে করলে তোমাদের সবাইকেই সৎপথে পরিচালিত করতেন।

﴿هُوَ الَّذِي أَنْزَلَ مِنَ السَّمَاءِ مَاءً ۖ لَكُمْ مِنْهُ شَرَابٌ وَمِنْهُ شَجَرٌ فِيهِ تُسِيمُونَ﴾

তিনিই আকাশ থেকে বারি বর্ষণ করেন। তাতে তোমাদের জন্য রয়েছে পানীয় এবং তা থেকে জন্মায় উদ্ভিদ যাতে তোমরা পশু চারণ করে থাক [১]।

﴿يُنْبِتُ لَكُمْ بِهِ الزَّرْعَ وَالزَّيْتُونَ وَالنَّخِيلَ وَالْأَعْنَابَ وَمِنْ كُلِّ الثَّمَرَاتِ ۗ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَةً لِقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ﴾

তিনি তোমাদের জন্য তা [১] দ্বারা জন্মান শস্য, যায়তূন, খেজুর গাছ, আঙ্গুর এবং সব রকমের ফল। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য রয়েছে নিদর্শন [২]।

﴿وَسَخَّرَ لَكُمُ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ وَالشَّمْسَ وَالْقَمَرَ ۖ وَالنُّجُومُ مُسَخَّرَاتٌ بِأَمْرِهِ ۗ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَاتٍ لِقَوْمٍ يَعْقِلُونَ﴾

আর তিনিই তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন রাত, দিন [১], সূর্য ও চাঁদকে; এবং নক্ষত্ররাজিও তাঁরই নির্দেশে নিয়োজিত। নিশ্চয় এতে বোধশক্তি সম্পন্ন সম্প্রদায়ের জন্য রয়েছে অনেক নিদর্শন [২]।

﴿وَمَا ذَرَأَ لَكُمْ فِي الْأَرْضِ مُخْتَلِفًا أَلْوَانُهُ ۗ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَةً لِقَوْمٍ يَذَّكَّرُونَ﴾

আর তিনি তোমাদের জন্য যমীনে যা সৃষ্টি করেছেন, বিচিত্র রঙের করে, নিশ্চয় তাতে সে সম্প্রদায়ের জন্য নিদর্শন রয়েছে, যারা উপদেশ গ্রহন করে [১]।

﴿وَهُوَ الَّذِي سَخَّرَ الْبَحْرَ لِتَأْكُلُوا مِنْهُ لَحْمًا طَرِيًّا وَتَسْتَخْرِجُوا مِنْهُ حِلْيَةً تَلْبَسُونَهَا وَتَرَى الْفُلْكَ مَوَاخِرَ فِيهِ وَلِتَبْتَغُوا مِنْ فَضْلِهِ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ﴾

আর তিনিই সাগরকে নিয়োজিত করেছেন [১] যাতে তোমরা তা থেকে তাজা (মাছের) গোশত খেতে পার এবং যাতে তা থেকে আহরণ করতে পার রত্নাবলী যা তোমরা ভূষণরূপে পরে থাক [২]; এবং তোমরা দেখতে পাও, তার বুক চিরে নৌযান চলাচল করে [৩] এবং এটা এ জন্যে যে, তোমরা যেন তাঁর অনুগ্রহ সন্ধান করতে পার এবং তোমরা যেন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর;

﴿وَأَلْقَىٰ فِي الْأَرْضِ رَوَاسِيَ أَنْ تَمِيدَ بِكُمْ وَأَنْهَارًا وَسُبُلًا لَعَلَّكُمْ تَهْتَدُونَ﴾

আর তিনি যমীনে সুদৃঢ় পর্বত স্থাপন করেছেন, যাতে যমীন তোমাদের নিয়ে হেলে না যায় [১] এবং স্থাপন করেছেন নদ-নদী ও পথসমূহ, যাতে তোমরা তোমাদের গন্তব্যস্থলে পৌছতে পার [২];

﴿وَعَلَامَاتٍ ۚ وَبِالنَّجْمِ هُمْ يَهْتَدُونَ﴾

এবং পথ নির্দেশক চিহ্নসমূহও। আর তারা নক্ষত্রের সাহায্যে পথনির্দেশ পায় [১]।

﴿أَفَمَنْ يَخْلُقُ كَمَنْ لَا يَخْلُقُ ۗ أَفَلَا تَذَكَّرُونَ﴾

কাজেই যিনি সৃষ্টি করেন, তিনি কি তার মত যে সৃষ্টি করে না? তবুও কি তোমরা শিক্ষা গ্রহণ করবে না [১]?

﴿وَإِنْ تَعُدُّوا نِعْمَةَ اللَّهِ لَا تُحْصُوهَا ۗ إِنَّ اللَّهَ لَغَفُورٌ رَحِيمٌ﴾

আর তোমরা আল্লাহ্‌র অনুগ্রহ গুণলে তার সংখ্যা নির্ণয় করতে পারবে না। নিশ্চয় আল্লাহ্‌ ক্ষমাপরায়ণ, পরম দয়ালু [১]।

﴿وَاللَّهُ يَعْلَمُ مَا تُسِرُّونَ وَمَا تُعْلِنُونَ﴾

আর তোমরা যা গোপন রাখ এবং যা ঘোষণা কর আল্লাহ্‌ তা জানেন।

﴿وَالَّذِينَ يَدْعُونَ مِنْ دُونِ اللَّهِ لَا يَخْلُقُونَ شَيْئًا وَهُمْ يُخْلَقُونَ﴾

আর তারা আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্য যাদেরকে ডাকে তারা কিছুই সৃষ্টি করে না, বরং তাদেরকেই সৃষ্টি করা হয় [১]।

﴿أَمْوَاتٌ غَيْرُ أَحْيَاءٍ ۖ وَمَا يَشْعُرُونَ أَيَّانَ يُبْعَثُونَ﴾

তারা নিষ্প্রাণ, নির্জীব এবং কখন তাদেরকে পুনরুত্থিত করা হবে সে বিষয়ে তাদের কোন চেতনা নেই [১]।

﴿إِلَٰهُكُمْ إِلَٰهٌ وَاحِدٌ ۚ فَالَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِالْآخِرَةِ قُلُوبُهُمْ مُنْكِرَةٌ وَهُمْ مُسْتَكْبِرُونَ﴾

তোমাদের ইলাহ্ এক ইলাহ্, কাহেই যারা আখিরাতে ঈমান আনে না তাদের অন্তর অস্বীকারকারী [১] এবং তারা অহংকারী [২]।

﴿لَا جَرَمَ أَنَّ اللَّهَ يَعْلَمُ مَا يُسِرُّونَ وَمَا يُعْلِنُونَ ۚ إِنَّهُ لَا يُحِبُّ الْمُسْتَكْبِرِينَ﴾

নিঃসন্দেহ যে, আল্লাহ জানেন যা তারা গোপন করে এবং যা তারা ঘোষণা করে। নিশ্চয় তিনি অহংকারীদের পছন্দ করেন না।

﴿وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ مَاذَا أَنْزَلَ رَبُّكُمْ ۙ قَالُوا أَسَاطِيرُ الْأَوَّلِينَ﴾

আর যখন তাদেরকে বলা হয়, তোমাদের রব কী নাযিল করেছেন? তখন তারা বলে, পূর্ববর্তীদের উপকথা! [১]’

﴿لِيَحْمِلُوا أَوْزَارَهُمْ كَامِلَةً يَوْمَ الْقِيَامَةِ ۙ وَمِنْ أَوْزَارِ الَّذِينَ يُضِلُّونَهُمْ بِغَيْرِ عِلْمٍ ۗ أَلَا سَاءَ مَا يَزِرُونَ﴾

ফলে কিয়ামতের দিন তারা বহন করবে তাদের পাপের বোঝা পূর্ণ মাত্রায় এবং তাদেরও পাপের বোঝা যাদেরকে তারা অজ্ঞতাবশত বিভ্রান্ত করেছে [১]। দেখুন, তারা যা বহন করবে তা কত নিকৃষ্ট !

﴿قَدْ مَكَرَ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِهِمْ فَأَتَى اللَّهُ بُنْيَانَهُمْ مِنَ الْقَوَاعِدِ فَخَرَّ عَلَيْهِمُ السَّقْفُ مِنْ فَوْقِهِمْ وَأَتَاهُمُ الْعَذَابُ مِنْ حَيْثُ لَا يَشْعُرُونَ﴾

অবশ্যই তাদের পূর্ববর্তীগণ চক্রান্ত করেছিল; অতঃপর আল্লাহ্‌ তাদের ইমারতের ভিত্তিমূলে আঘাত করেছিলেন; ফলে ইমারতের ছাদ তাদের উপর ধ্বসে পড়ল এবং তাদের প্রতি শাস্তি আসল এমনভাবে যে, তারা উপব্ধি করতে পারেনি [১]

﴿ثُمَّ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يُخْزِيهِمْ وَيَقُولُ أَيْنَ شُرَكَائِيَ الَّذِينَ كُنْتُمْ تُشَاقُّونَ فِيهِمْ ۚ قَالَ الَّذِينَ أُوتُوا الْعِلْمَ إِنَّ الْخِزْيَ الْيَوْمَ وَالسُّوءَ عَلَى الْكَافِرِينَ﴾

পরে কিয়ামতের দিন তিনি তাদেরকে লাঞ্ছিত করবেন [১] এবং তিনি বলবেন, কোথায় আমার সেসব শরীক [২] যাদের সম্বন্ধে তোমরা ঘোর বিতণ্ডা করতে? যাদেরকে জ্ঞান দান করা হয়েছিল তারা বলবে [৩], আজ লাঞ্ছনা ও অমঙ্গল কাফিরদের উপর--

﴿الَّذِينَ تَتَوَفَّاهُمُ الْمَلَائِكَةُ ظَالِمِي أَنْفُسِهِمْ ۖ فَأَلْقَوُا السَّلَمَ مَا كُنَّا نَعْمَلُ مِنْ سُوءٍ ۚ بَلَىٰ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ بِمَا كُنْتُمْ تَعْمَلُونَ﴾

যাদের মৃত্যু ঘটায় ফিরিশতাগণ তারা নিজেদের প্রতি যুলুম করা অবস্থায়; তখন তারা আত্মসমর্পণ করে বলবে, ‘আমরা কোন মন্দ কাজ করতাম না।‘ [১] অবশ্যই হ্যাঁ, নিশ্চয় তোমরা যা করতে সে বিষয়ে আল্লাহ্‌ সবিশেষ অবগত।

﴿فَادْخُلُوا أَبْوَابَ جَهَنَّمَ خَالِدِينَ فِيهَا ۖ فَلَبِئْسَ مَثْوَى الْمُتَكَبِّرِينَ﴾

কাজেই তোমরা দরজাগুলো দিয়ে জাহান্নামে প্রবেশ কর, তাতে স্থায়ী হয়ে। অতঃপর অহংকারীদের আবাসস্থল কত নিকৃষ্ট !

﴿۞ وَقِيلَ لِلَّذِينَ اتَّقَوْا مَاذَا أَنْزَلَ رَبُّكُمْ ۚ قَالُوا خَيْرًا ۗ لِلَّذِينَ أَحْسَنُوا فِي هَٰذِهِ الدُّنْيَا حَسَنَةٌ ۚ وَلَدَارُ الْآخِرَةِ خَيْرٌ ۚ وَلَنِعْمَ دَارُ الْمُتَّقِينَ﴾

আর যারা তাকওয়া অবলম্বন করেছিল তাদেরকে বলা হল, ‘তোমাদের রব কী নাযিল করেছেন?’ তারা বলল, ‘মহাকল্যাণ [১]।’ যারা সৎকাজ করে তাদের জন্য আছে এ দুনিয়ায় মঙ্গল এবং আখিরাতের আবাস আরো উৎকৃষ্ট। আর মুত্তাকীদের আবাসস্থল কত উত্তম [২]!

﴿جَنَّاتُ عَدْنٍ يَدْخُلُونَهَا تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ ۖ لَهُمْ فِيهَا مَا يَشَاءُونَ ۚ كَذَٰلِكَ يَجْزِي اللَّهُ الْمُتَّقِينَ﴾

সেটা স্থায়ী জান্নাত, যাতে তারা প্রবেশ করবে; তার পাদদেশে নদী প্রবাহিত; তারা যা কিছু চাইবে তাতে তাদের জন্য তা-ই থাকবে [১]। এভাবেই আল্লাহ্‌ পুরস্কৃত করেন মুত্তাকীদেরকে,

﴿الَّذِينَ تَتَوَفَّاهُمُ الْمَلَائِكَةُ طَيِّبِينَ ۙ يَقُولُونَ سَلَامٌ عَلَيْكُمُ ادْخُلُوا الْجَنَّةَ بِمَا كُنْتُمْ تَعْمَلُونَ﴾

ফিরিশতাগণ [১] যাদের মৃত্যু ঘটায় উত্তমভাবে। ফিরিশতাগণ বলবেন, তোমাদের উপর সালাম! তোমরা যা করতে তার ফলে জান্নাতে প্রবেশ কর [২]।

﴿هَلْ يَنْظُرُونَ إِلَّا أَنْ تَأْتِيَهُمُ الْمَلَائِكَةُ أَوْ يَأْتِيَ أَمْرُ رَبِّكَ ۚ كَذَٰلِكَ فَعَلَ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِهِمْ ۚ وَمَا ظَلَمَهُمُ اللَّهُ وَلَٰكِنْ كَانُوا أَنْفُسَهُمْ يَظْلِمُونَ﴾

তারা তো শুধু তাদের কাছে ফিরিশতা আসার প্রতীক্ষা করে অথবা আপনার রবের নির্দেশ আসার। তাদের পূর্ববর্তীরা এরূপই করত [১]। আর আল্লাহ্‌ তাদের প্রতি কোন যুলুম করেননি, কিন্তু তারাই নিজেদের প্রতি যুলুম করত।

﴿فَأَصَابَهُمْ سَيِّئَاتُ مَا عَمِلُوا وَحَاقَ بِهِمْ مَا كَانُوا بِهِ يَسْتَهْزِئُونَ﴾

কাজেই তাদের উপর আপতিত হয়েছে তাদের মন্দ কাজের পরিণতি এবং তাদেরকে পরিবেষ্টন করেছে তা-ই যা নিয়ে তারা ঠাট্টা – বিদ্রুপ করত।

﴿وَقَالَ الَّذِينَ أَشْرَكُوا لَوْ شَاءَ اللَّهُ مَا عَبَدْنَا مِنْ دُونِهِ مِنْ شَيْءٍ نَحْنُ وَلَا آبَاؤُنَا وَلَا حَرَّمْنَا مِنْ دُونِهِ مِنْ شَيْءٍ ۚ كَذَٰلِكَ فَعَلَ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِهِمْ ۚ فَهَلْ عَلَى الرُّسُلِ إِلَّا الْبَلَاغُ الْمُبِينُ﴾

আর যারা শির্ক করেছে, তারা বলল, আল্লাহ্‌ ইচ্ছে করলে আমরা ও আমাদের পিতৃপুরুষেরা তাঁকে ছাড়া অন্য কোন কিছুর ইবাদাত করতাম না [১]। আর কোন কিছু তাঁকে ছাড়িয়ে হারামও ঘোষণা করতাম না [২]। তাদের পূর্ববর্তীরা এরূপ করত। রাসূলদের কর্তব্য কি শুধু সুস্পষ্ট বাণী পৌছে দেয়া নয় [৩]?

﴿وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَسُولًا أَنِ اعْبُدُوا اللَّهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوتَ ۖ فَمِنْهُمْ مَنْ هَدَى اللَّهُ وَمِنْهُمْ مَنْ حَقَّتْ عَلَيْهِ الضَّلَالَةُ ۚ فَسِيرُوا فِي الْأَرْضِ فَانْظُرُوا كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الْمُكَذِّبِينَ﴾

আর অবশ্যই আমরা প্রত্যেক জাতির মধ্যে রাসূল পাঠিয়েছিলাম এ নির্দেশ দিয়ে যে, তোমরা আল্লাহ্‌র ইবাদাত কর এবং তাগূতকে বর্জন কর [১]। অতঃপর তাদের কিছু সংখ্যককে আল্লাহ্‌ হিদায়াত দিয়েছে, আর তাদের কিছু সংখ্যকের উপর পথভ্রান্তি সাব্যস্ত হয়েছিল; কাজেই তোমরা যমীনে পরিভ্রমন কর অতঃপর দেখে নাও মিথ্যারোপকারীদের পরিণাম কী হয়েছে [২]?

﴿إِنْ تَحْرِصْ عَلَىٰ هُدَاهُمْ فَإِنَّ اللَّهَ لَا يَهْدِي مَنْ يُضِلُّ ۖ وَمَا لَهُمْ مِنْ نَاصِرِينَ﴾

আপনি তাদের হিদায়াতের জন্য ঐকান্তিকভাবে আগ্রহী হলেও [১] আল্লাহ্‌ যাকে বিভ্রান্ত করেন, তাকে হিদায়াত দেন না এবং তাদের জন্য কোন সাহায্যকারীও নেই [২]।

﴿وَأَقْسَمُوا بِاللَّهِ جَهْدَ أَيْمَانِهِمْ ۙ لَا يَبْعَثُ اللَّهُ مَنْ يَمُوتُ ۚ بَلَىٰ وَعْدًا عَلَيْهِ حَقًّا وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ﴾

আর তারা দৃঢ়তার সাথে আল্লাহ্‌র শপথ করে বলে, যার মৃত্যু হয় আল্লাহ্‌ তাকে পুনর্জীবিত করবেন না [১]। অবশ্যই হ্যাঁ, তাঁর নিজের উপর কৃত প্রতিশ্রুতি তিনি সত্যে রূপ দেবেন। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই জনে না [২]।

﴿لِيُبَيِّنَ لَهُمُ الَّذِي يَخْتَلِفُونَ فِيهِ وَلِيَعْلَمَ الَّذِينَ كَفَرُوا أَنَّهُمْ كَانُوا كَاذِبِينَ﴾

যে বিষয়ে তারা মতানৈক্য করছে, তা তাদেরকে স্পষ্টভাবে বর্ণনা করার জন্য এবং কফিরদের জানার জন্য যে, নিশ্চয় তারা ছিল মিথ্যাবাদী [১]।

﴿إِنَّمَا قَوْلُنَا لِشَيْءٍ إِذَا أَرَدْنَاهُ أَنْ نَقُولَ لَهُ كُنْ فَيَكُونُ﴾

আমরা কোন কিছুর ইচ্ছে করলে সে বিষয়ে আমাদের কথা তো শুধু এই যে, আমরা বলি, ‘হও’; ফলে তা হয়ে যায় [১]।

﴿وَالَّذِينَ هَاجَرُوا فِي اللَّهِ مِنْ بَعْدِ مَا ظُلِمُوا لَنُبَوِّئَنَّهُمْ فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً ۖ وَلَأَجْرُ الْآخِرَةِ أَكْبَرُ ۚ لَوْ كَانُوا يَعْلَمُونَ﴾

আর যারা অত্যাচারিত হওয়ার পর আল্লাহ্‌র পথে হিজরত [১] করেছে [২], আমরা অবশ্যই তাদেরকে দুনিয়ায় উত্তম আবাস দেব; আর আখিরাতের পুরস্কার তো অবশ্যই শ্রেষ্ঠ। যদি তারা জানত !

﴿الَّذِينَ صَبَرُوا وَعَلَىٰ رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُونَ﴾

যারা ধৈর্য ধারণ করে ও তাদের রবের উপর নির্ভর করে।

﴿وَمَا أَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِكَ إِلَّا رِجَالًا نُوحِي إِلَيْهِمْ ۚ فَاسْأَلُوا أَهْلَ الذِّكْرِ إِنْ كُنْتُمْ لَا تَعْلَمُونَ﴾

আর আপনার আগে আমরা ওহীসহ কেবল পুরুষদেরকেই [১] পাঠিয়েছিলাম [২], সুতরাং তোমরা জ্ঞানীদেরকে [৩] জিজ্ঞেস কর যদি না জান,

﴿بِالْبَيِّنَاتِ وَالزُّبُرِ ۗ وَأَنْزَلْنَا إِلَيْكَ الذِّكْرَ لِتُبَيِّنَ لِلنَّاسِ مَا نُزِّلَ إِلَيْهِمْ وَلَعَلَّهُمْ يَتَفَكَّرُونَ﴾

স্পষ্ট প্রমাণাদি ও গ্রন্থাবলীসহ [১]। আর আপনার প্রতি আমরা কুরআন নাযিল করেছি, যাতে আপনি মানুষকে যা তাদের প্রতি নাযিল করা হয়েছে [২], তা স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দেন এবং যাতে তারা চিন্তা করে।

﴿أَفَأَمِنَ الَّذِينَ مَكَرُوا السَّيِّئَاتِ أَنْ يَخْسِفَ اللَّهُ بِهِمُ الْأَرْضَ أَوْ يَأْتِيَهُمُ الْعَذَابُ مِنْ حَيْثُ لَا يَشْعُرُونَ﴾

যারা কুকর্মের ষড়যন্ত্র করে তারা কি এ বিষয়ে নির্ভয় হয়েছে যে, আল্লাহ্‌ তাদেরকে ভূগর্ভে বিলীন করবেন না অথবা তাদের উপর আসবে না শাস্তি এমনভাবে যে, তারা উপলব্ধিও করবে না [১]?

﴿أَوْ يَأْخُذَهُمْ فِي تَقَلُّبِهِمْ فَمَا هُمْ بِمُعْجِزِينَ﴾

অথবা চলাফেরা করতে থাকাকালে তিনি তাদেরকে পাকড়াও করবেন না? অতঃপর তারা তা ব্যর্থ করতে পারবে না।

﴿أَوْ يَأْخُذَهُمْ عَلَىٰ تَخَوُّفٍ فَإِنَّ رَبَّكُمْ لَرَءُوفٌ رَحِيمٌ﴾

অথবা তাদেরকে তিনি ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় পাকড়াও করবেন না? নিশ্চয় তোমাদের রব অতি দয়ার্দ্র, পরম দয়ালু [১]।

﴿أَوَلَمْ يَرَوْا إِلَىٰ مَا خَلَقَ اللَّهُ مِنْ شَيْءٍ يَتَفَيَّأُ ظِلَالُهُ عَنِ الْيَمِينِ وَالشَّمَائِلِ سُجَّدًا لِلَّهِ وَهُمْ دَاخِرُونَ﴾

তারা কি লক্ষ্য করে না আল্লাহ্‌র সৃষ্ট বস্তুর প্রতি, যার ছায়া [১] ডানে ও বামে ঢলে পড়ে একান্ত অনুগত হয়ে আল্লাহ্‌র প্রতি সিজদাবনত হয়?

﴿وَلِلَّهِ يَسْجُدُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ مِنْ دَابَّةٍ وَالْمَلَائِكَةُ وَهُمْ لَا يَسْتَكْبِرُونَ﴾

আর আল্লাহ্‌কেই সিজদা করে যা কিছু আছে আসমানসমূহে ও যমীনে, যত জীবজন্তু আছে সেসব এবং ফিরিশতাগণও, তারা অহংকার করে না।

﴿يَخَافُونَ رَبَّهُمْ مِنْ فَوْقِهِمْ وَيَفْعَلُونَ مَا يُؤْمَرُونَ ۩﴾

তারা ভয় করে তাদের উপরস্থ [১] তাদের রবকে এবং তাদেরকে যা আদেশ করা হয় তারা তা করে।

﴿۞ وَقَالَ اللَّهُ لَا تَتَّخِذُوا إِلَٰهَيْنِ اثْنَيْنِ ۖ إِنَّمَا هُوَ إِلَٰهٌ وَاحِدٌ ۖ فَإِيَّايَ فَارْهَبُونِ﴾

আর আল্লাহ্‌ বলেছেন, ‘তোমরা দুই ইলাহ্ গ্রহণ করো না [১]; তিনিই তো একমাত্র ইলাহ্ [২]। কাজেই তোমরা শুধু আমাকেই ভয় কর।’

﴿وَلَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَلَهُ الدِّينُ وَاصِبًا ۚ أَفَغَيْرَ اللَّهِ تَتَّقُونَ﴾

আর আসমানসমূহে ও যমীনে যা কিছু আছে তা তাঁরই এবং সার্বক্ষণিক আনুগত্য তাঁরই প্রাপ্য [১]। তারপরও কি তোমরা আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্য কারও তাকওয়া অবলম্বন করবে?

﴿وَمَا بِكُمْ مِنْ نِعْمَةٍ فَمِنَ اللَّهِ ۖ ثُمَّ إِذَا مَسَّكُمُ الضُّرُّ فَإِلَيْهِ تَجْأَرُونَ﴾

আর তোমাদের কাছে যে সব নিয়ামত রয়েছে তা তো আল্লাহ্‌রই কাছ থেকে; তারপর যখন দুঃখ-দৈন্য তোমাদেরকে স্পর্শ করে তখন তোমরা তাঁকেই ব্যাকুলভাবে ডাক [১]।

﴿ثُمَّ إِذَا كَشَفَ الضُّرَّ عَنْكُمْ إِذَا فَرِيقٌ مِنْكُمْ بِرَبِّهِمْ يُشْرِكُونَ﴾

তারপর যখন আল্লাহ্‌ তোমাদের দুঃখ-দৈন্য দূরীভূত করেন তখন তোমাদের একদল তাদের রবের সাথে শির্ক করে [১]---

﴿لِيَكْفُرُوا بِمَا آتَيْنَاهُمْ ۚ فَتَمَتَّعُوا ۖ فَسَوْفَ تَعْلَمُونَ﴾

আমরা তাদেরকে যা দিয়েছি তা অস্বীকার করার জন্য। কাজেই তোমরা ভোগ করে নাও, অচিরেই তোমরা জানতে পারবে।

﴿وَيَجْعَلُونَ لِمَا لَا يَعْلَمُونَ نَصِيبًا مِمَّا رَزَقْنَاهُمْ ۗ تَاللَّهِ لَتُسْأَلُنَّ عَمَّا كُنْتُمْ تَفْتَرُونَ﴾

আর আমরা তাদেরকে যে রিযক দান করি তারা তার এক অংশ নির্ধারণ করে [১] তাদের জন্য যাদের সম্বন্ধে তারা কিছুই জানে না [২]। শপথ আল্লাহ্‌র! তোমরা যা মিথ্যা উদ্ভাবন কর সে সম্পর্কে অবশ্যই তোমাদেরকে প্রশ্ন করা হবে।

﴿وَيَجْعَلُونَ لِلَّهِ الْبَنَاتِ سُبْحَانَهُ ۙ وَلَهُمْ مَا يَشْتَهُونَ﴾

আর তারা নির্ধারণ করে আল্লাহ্‌র জন্য [১] কন্যা সন্তান [২]--- তিনি পবিত্র, মহিমান্বিত। আর তাদের জন্য তাই যা তারা কামনা করে [৩]!

﴿وَإِذَا بُشِّرَ أَحَدُهُمْ بِالْأُنْثَىٰ ظَلَّ وَجْهُهُ مُسْوَدًّا وَهُوَ كَظِيمٌ﴾

তাদের কাউকে যখন কন্যা সন্তানের সুসংবাদ দেয়া হয় তখন তার মুখমন্ডল কালো হয়ে যায় এবং সে অসহনীয় মানসিক যন্ত্রণায় ক্লিষ্ট হয় [১]।

﴿يَتَوَارَىٰ مِنَ الْقَوْمِ مِنْ سُوءِ مَا بُشِّرَ بِهِ ۚ أَيُمْسِكُهُ عَلَىٰ هُونٍ أَمْ يَدُسُّهُ فِي التُّرَابِ ۗ أَلَا سَاءَ مَا يَحْكُمُونَ﴾

তাকে যে সুসংবাদ দেয়া হয়, তার গ্লানির কারণে সে নিজ সম্প্রদায় হতে আত্মগোপন করে। সে চিন্তা করে হীনতা সত্বেও কি তাকে রেখে দেবে, নাকি মাটিতে পুঁতে ফেলবে [১]। সাবধান! তারা যা সিদ্ধান্ত করে তা কত নিকৃষ্ট!

﴿لِلَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِالْآخِرَةِ مَثَلُ السَّوْءِ ۖ وَلِلَّهِ الْمَثَلُ الْأَعْلَىٰ ۚ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ﴾

যারা আখেরাতে ঈমান রাখে না যাবতীয় খারাপ উদাহরণ (গুণাগুণ) তাদেরই, আর আল্লাহ্‌র জন্যই যাবতীয় মহোত্তম গুণাগুণ [১] আর তিনিই পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময় [২]।

﴿وَلَوْ يُؤَاخِذُ اللَّهُ النَّاسَ بِظُلْمِهِمْ مَا تَرَكَ عَلَيْهَا مِنْ دَابَّةٍ وَلَٰكِنْ يُؤَخِّرُهُمْ إِلَىٰ أَجَلٍ مُسَمًّى ۖ فَإِذَا جَاءَ أَجَلُهُمْ لَا يَسْتَأْخِرُونَ سَاعَةً ۖ وَلَا يَسْتَقْدِمُونَ﴾

আর আল্লাহ্‌ যদি মানুষকে তাদের সীমালংঘনের জন্য শাস্তি দিতেন তবে ভূপৃষ্ঠে কোন জীব- জন্তুকেই রেহাই দিতেন না [১]; কিন্তু তিনি এক নির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত তাদেরকে অবকাশ দিয়ে থাকেন। অতঃপর যখন তাদের সময় আসে তখন তারা মহূর্তকাল আগাতে বা পিছাতে পারে না।

﴿وَيَجْعَلُونَ لِلَّهِ مَا يَكْرَهُونَ وَتَصِفُ أَلْسِنَتُهُمُ الْكَذِبَ أَنَّ لَهُمُ الْحُسْنَىٰ ۖ لَا جَرَمَ أَنَّ لَهُمُ النَّارَ وَأَنَّهُمْ مُفْرَطُونَ﴾

আর যা তারা অপছন্দ করে তা-ই তারা আল্লাহ্‌র প্রতি আরোপ করে। তাদের জিহ্বা মিথ্যা বর্ণনা করে যে, মঙ্গল তো তাদেরই জন্য [১]। নিঃসন্দেহে তাদের জন্য আছে আগুন, আর নিশ্চয় তাদেরকেই সবার আগে তাতে নিক্ষেপ করা হবে [২]।

﴿تَاللَّهِ لَقَدْ أَرْسَلْنَا إِلَىٰ أُمَمٍ مِنْ قَبْلِكَ فَزَيَّنَ لَهُمُ الشَّيْطَانُ أَعْمَالَهُمْ فَهُوَ وَلِيُّهُمُ الْيَوْمَ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ﴾

শপথ আল্লাহ্‌র! আমরা আপনার আগেও বহু জাতির কাছে রাসূল পাঠিয়েছি; কিন্তু শয়তান ঐসব জাতির কার্যকলাপ তাদের দৃষ্টিতে শোভন করেছিল; কাজেই সে –ই আজ [১] তাদের অভিভাকক আর তাদেরই জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।

﴿وَمَا أَنْزَلْنَا عَلَيْكَ الْكِتَابَ إِلَّا لِتُبَيِّنَ لَهُمُ الَّذِي اخْتَلَفُوا فِيهِ ۙ وَهُدًى وَرَحْمَةً لِقَوْمٍ يُؤْمِنُونَ﴾

আর আমরা তো আপনার প্রতি কিতাব নাযিল করেছি যারা এ বিষয়ে মতভেদ করে তাদেরকে সুস্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য এবং যারা ঈমান আনে এমন সম্প্রদায়ের জন্য পথনির্দেশ ও দয়াস্বরূপ [১]।

﴿وَاللَّهُ أَنْزَلَ مِنَ السَّمَاءِ مَاءً فَأَحْيَا بِهِ الْأَرْضَ بَعْدَ مَوْتِهَا ۚ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَةً لِقَوْمٍ يَسْمَعُونَ﴾

আর আল্লাহ্‌ আকাশ হতে বারি বর্ষণ করেন এবং তা দিয়ে তিনি ভূমিকে তার মৃত্যুর পর পুনর্জীবিত করেন। নিশ্চয় এতে নিদর্শন রয়েছে এমন সম্প্রদায়ের জন্য যারা কথা শোনে [১]।

﴿وَإِنَّ لَكُمْ فِي الْأَنْعَامِ لَعِبْرَةً ۖ نُسْقِيكُمْ مِمَّا فِي بُطُونِهِ مِنْ بَيْنِ فَرْثٍ وَدَمٍ لَبَنًا خَالِصًا سَائِغًا لِلشَّارِبِينَ﴾

আর নিশ্চয় গবাদি পশুর মধ্যে তোমাদের জন্য শিক্ষা রয়েছে। তার পেটের গোবর ও রক্তের মধ্য থেকে [১] তোমাদেরকে পান করাই বিশুদ্ধ দুধ, যা পানকারীদের জন্য স্বাচ্ছন্দ্যকর।

﴿وَمِنْ ثَمَرَاتِ النَّخِيلِ وَالْأَعْنَابِ تَتَّخِذُونَ مِنْهُ سَكَرًا وَرِزْقًا حَسَنًا ۗ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَةً لِقَوْمٍ يَعْقِلُونَ﴾

আর খেজুর গাছের ফল ও আঙ্গুর হতে তোমরা মাদক ও উত্তম খাদ্য গ্রহণ করে থাক [১]; নিশ্চয় এতে বোধশক্তি সম্পন্ন সম্প্রদায়ের জন্য রয়েছে নিদর্শন [২]।

﴿وَأَوْحَىٰ رَبُّكَ إِلَى النَّحْلِ أَنِ اتَّخِذِي مِنَ الْجِبَالِ بُيُوتًا وَمِنَ الشَّجَرِ وَمِمَّا يَعْرِشُونَ﴾

আর আপনার রব মৌমাছিকে তার অন্তরে ইঙ্গিত দ্বারা নির্দেশ দিয়েছেন [১], ‘ঘর তৈরী কর পাহাড়ে, গাছে ও মানুষ যে মাচান তৈরী করে তাতে;

﴿ثُمَّ كُلِي مِنْ كُلِّ الثَّمَرَاتِ فَاسْلُكِي سُبُلَ رَبِّكِ ذُلُلًا ۚ يَخْرُجُ مِنْ بُطُونِهَا شَرَابٌ مُخْتَلِفٌ أَلْوَانُهُ فِيهِ شِفَاءٌ لِلنَّاسِ ۗ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَةً لِقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ﴾

‘এরপর প্রত্যেক ফল হতে কিছু কিছু খাও, অতঃপর তোমার রবের সহজ পথ অনুসরণ কর [১]’। তার পেট থেকে নির্গত হয় বিভিন্ন রঙ এর পানীয় [২]; যাতে মানুষের জন্য রয়েছে আরোগ্য [৩]। নিশ্চয় এতে রয়েছে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য নিদর্শন [৪]।

﴿وَاللَّهُ خَلَقَكُمْ ثُمَّ يَتَوَفَّاكُمْ ۚ وَمِنْكُمْ مَنْ يُرَدُّ إِلَىٰ أَرْذَلِ الْعُمُرِ لِكَيْ لَا يَعْلَمَ بَعْدَ عِلْمٍ شَيْئًا ۚ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ قَدِيرٌ﴾

আর আল্লাহ্‌ই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন; তারপর তিনি তোমাদের মৃত্যু ঘটাবেন এবং তোমাদের মধ্যে কাউকে প্রত্যাবর্তিত [১] করা হবে নিকৃষ্টতম বয়সে [২]; যাতে জ্ঞান লাভের পরেও তার সবকিছু অজানা হয়ে যায়। নিশ্চয় আল্লাহ্‌ সর্বজ্ঞ, পূর্ণ ক্ষমতাবান [৩]।

﴿وَاللَّهُ فَضَّلَ بَعْضَكُمْ عَلَىٰ بَعْضٍ فِي الرِّزْقِ ۚ فَمَا الَّذِينَ فُضِّلُوا بِرَادِّي رِزْقِهِمْ عَلَىٰ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُمْ فَهُمْ فِيهِ سَوَاءٌ ۚ أَفَبِنِعْمَةِ اللَّهِ يَجْحَدُونَ﴾

আর আল্লাহ্‌ জীবনোপকরণে তোমাদের মধ্যে কাউকে কারো উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। যাদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব দেয়া হয়েছে তারা তাদের অধীনস্থ দাসদাসীদেরকে নিজেদের জীবনোপকরণ হতে এমন কিছু দেয় না যাতে ওরা এ বিষয়ে তাদের সমান হয়ে যায় [১]। তবে কি তারা আল্লাহ্‌র অনুগ্রহ অস্বীকার করছে [২]?

﴿وَاللَّهُ جَعَلَ لَكُمْ مِنْ أَنْفُسِكُمْ أَزْوَاجًا وَجَعَلَ لَكُمْ مِنْ أَزْوَاجِكُمْ بَنِينَ وَحَفَدَةً وَرَزَقَكُمْ مِنَ الطَّيِّبَاتِ ۚ أَفَبِالْبَاطِلِ يُؤْمِنُونَ وَبِنِعْمَتِ اللَّهِ هُمْ يَكْفُرُونَ﴾

আর আল্লাহ্‌ তোমাদের থেকেই তোমাদের জোড়া সৃষ্টি করেছেন [১] এবং তোমাদের যুগল থেকে তোমাদের জন্য পুত্র-পৌত্রাদি সৃষ্টি করেছেন [২] এবং তোমাদেরকে উত্তম জীবনোপকরণ দান করেছেন [৩]। তবুও কি তারা বাতিলের স্বীকৃতি দেবে [৪] আর তারা আল্লাহ্‌র অনুগ্রহ অস্বীকার করবে [৫]?

﴿وَيَعْبُدُونَ مِنْ دُونِ اللَّهِ مَا لَا يَمْلِكُ لَهُمْ رِزْقًا مِنَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ شَيْئًا وَلَا يَسْتَطِيعُونَ﴾

আর তারা ইবাদাত করে আল্লাহ্‌ ছাড়া এমন কিছুর, যেগুলো আসমান ও যমীন হতে তাদের কোন জীবনোপকরণের মালিক নয় এবং হতেও সক্ষম নয় [১]।

﴿فَلَا تَضْرِبُوا لِلَّهِ الْأَمْثَالَ ۚ إِنَّ اللَّهَ يَعْلَمُ وَأَنْتُمْ لَا تَعْلَمُونَ﴾

কাজেই তোমরা আল্লাহ্‌র কোন সদৃশ স্থির করো না [১]। নিশ্চয় আল্লাহ্‌ জানেন এবং তোমরা জান না।

﴿۞ ضَرَبَ اللَّهُ مَثَلًا عَبْدًا مَمْلُوكًا لَا يَقْدِرُ عَلَىٰ شَيْءٍ وَمَنْ رَزَقْنَاهُ مِنَّا رِزْقًا حَسَنًا فَهُوَ يُنْفِقُ مِنْهُ سِرًّا وَجَهْرًا ۖ هَلْ يَسْتَوُونَ ۚ الْحَمْدُ لِلَّهِ ۚ بَلْ أَكْثَرُهُمْ لَا يَعْلَمُونَ﴾

আল্লাহ্‌ উপমা দিচ্ছেন [১] অন্যের অধিকারভুক্ত এক দাসের, যে কোন কিছুর উপর শক্তি রাখে না এবং এমন এক ব্যক্তির যাকে আমরা আমার পক্ষ থেকে উত্তম রিযক দান করেছি এবং সে তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে; তারা কি একে অন্যের সমান [২]? সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্‌রই প্রাপ্য [৩]; বরং তাদের অধিকাংশই জানে না [৪]।

﴿وَضَرَبَ اللَّهُ مَثَلًا رَجُلَيْنِ أَحَدُهُمَا أَبْكَمُ لَا يَقْدِرُ عَلَىٰ شَيْءٍ وَهُوَ كَلٌّ عَلَىٰ مَوْلَاهُ أَيْنَمَا يُوَجِّهْهُ لَا يَأْتِ بِخَيْرٍ ۖ هَلْ يَسْتَوِي هُوَ وَمَنْ يَأْمُرُ بِالْعَدْلِ ۙ وَهُوَ عَلَىٰ صِرَاطٍ مُسْتَقِيمٍ﴾

আর আল্লাহ্‌ আরো উপমা দিচ্ছেন দু ব্যক্তিরঃ তাদের একজন বোবা, কোন কিছুরই শক্তি রাখে না এবং সে তার অভিভাকের উপর বোঝা; তাকে যেখানেই পাঠানো হোক না কেন সে কোন কল্যাণ নিয়ে আসতে পারে না; সে কি সমান ঐ ব্যক্তির, যে ন্যায়ের নির্দেশ দেয় এবং যে আছে সরল পথে [১]?

﴿وَلِلَّهِ غَيْبُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۚ وَمَا أَمْرُ السَّاعَةِ إِلَّا كَلَمْحِ الْبَصَرِ أَوْ هُوَ أَقْرَبُ ۚ إِنَّ اللَّهَ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ﴾

আর আসমানসমূহ ও যমীনের গায়েবী বিষয় আল্লাহ্‌রই। আর কিয়ামতের ব্যাপার তো চোখের পলকের ন্যায় [১], অথবা তা থেকেও সত্বর। নিশ্চয় আল্লাহ্‌ সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান।

﴿وَاللَّهُ أَخْرَجَكُمْ مِنْ بُطُونِ أُمَّهَاتِكُمْ لَا تَعْلَمُونَ شَيْئًا وَجَعَلَ لَكُمُ السَّمْعَ وَالْأَبْصَارَ وَالْأَفْئِدَةَ ۙ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ﴾

আর আল্লাহ্‌ তোমাদেরকে নির্গত করেছেন তোমাদের মাতৃগর্ভ থেকে এমন অবস্থায় যে, তোমরা কিছুই জানতে না এবং তিনি তোমাদেরকে দিয়েছেন শ্রবণশক্তি, দৃষ্টিশক্তি এবং হৃদয়, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর [১]।

﴿أَلَمْ يَرَوْا إِلَى الطَّيْرِ مُسَخَّرَاتٍ فِي جَوِّ السَّمَاءِ مَا يُمْسِكُهُنَّ إِلَّا اللَّهُ ۗ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَاتٍ لِقَوْمٍ يُؤْمِنُونَ﴾

তারা কি লক্ষ্য করে না আকাশের শুন্য গর্ভে নিয়ন্ত্রণাধীন বিহংগের প্রতি? আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্য কেউই সেগুলোকে ধরে রাখেন না। নিশ্চয় এতে এমন সম্প্রদায়ের জন্য নিদর্শন রয়েছে যারা ঈমান আনে [১]।

﴿وَاللَّهُ جَعَلَ لَكُمْ مِنْ بُيُوتِكُمْ سَكَنًا وَجَعَلَ لَكُمْ مِنْ جُلُودِ الْأَنْعَامِ بُيُوتًا تَسْتَخِفُّونَهَا يَوْمَ ظَعْنِكُمْ وَيَوْمَ إِقَامَتِكُمْ ۙ وَمِنْ أَصْوَافِهَا وَأَوْبَارِهَا وَأَشْعَارِهَا أَثَاثًا وَمَتَاعًا إِلَىٰ حِينٍ﴾

আর আল্লাহ্‌ তোমাদের ঘরসমূহকে করেছেন তোমাদের জন্য আবাসস্থল [১] এবং তিনি তোমাদের জন্য পশুর চামড়ার ঘর তাঁবুর ব্যবস্থা করেছেন, তোমরা সেটাকে সহজ মনে করে থাক তোমাদের ভ্রমণকালে এবং অবস্থানকালে [২]। আর (ব্যবস্থা করেছেন) তাদের পশম, লোম ও চুল থেকে কিছু কালের গৃহ-সামগ্রী ও ব্যবহার-উপকরণ [৩]।

﴿وَاللَّهُ جَعَلَ لَكُمْ مِمَّا خَلَقَ ظِلَالًا وَجَعَلَ لَكُمْ مِنَ الْجِبَالِ أَكْنَانًا وَجَعَلَ لَكُمْ سَرَابِيلَ تَقِيكُمُ الْحَرَّ وَسَرَابِيلَ تَقِيكُمْ بَأْسَكُمْ ۚ كَذَٰلِكَ يُتِمُّ نِعْمَتَهُ عَلَيْكُمْ لَعَلَّكُمْ تُسْلِمُونَ﴾

আর আল্লাহ্‌ যা কিছু সৃষ্টি করেছেন তা থেকে [১] তিনি তোমাদের জন্য ছায়ার ব্যবস্থা করেছেন এবং তোমাদের জন্য পাহাড়ে আশ্রয়স্থল বানিয়েছেন এবং তোমাদের জন্য ব্যবস্থা করেছেন পরিধেয় বস্ত্রের; তা তোমাদেরকে তাপ থেকে রক্ষা করে [২] এবং তিনি ব্যবস্থা করেছেন তোমাদের জন্য বর্মের, তা তোমাদেরকে যুদ্ধে রক্ষা করে। এভাবেই তিনি তোমাদের প্রতি তাঁর অনুগ্রহ পূর্ণ করেছেন [৩] যাতে তোমরা আত্মসমর্পণ কর।

﴿فَإِنْ تَوَلَّوْا فَإِنَّمَا عَلَيْكَ الْبَلَاغُ الْمُبِينُ﴾

অতঃপর তারা যদি মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে আপনার কর্তব্য তো শুধু স্পষ্টভাবে পৌঁছে দেয়া।

﴿يَعْرِفُونَ نِعْمَتَ اللَّهِ ثُمَّ يُنْكِرُونَهَا وَأَكْثَرُهُمُ الْكَافِرُونَ﴾

তারা আল্লাহ্‌র নি’আমত চিনতে পারে; তারপরও সেগুলো তারা অস্বীকার করে [১] এবং তাদের অধিকাংশই কাফির [২]।

﴿وَيَوْمَ نَبْعَثُ مِنْ كُلِّ أُمَّةٍ شَهِيدًا ثُمَّ لَا يُؤْذَنُ لِلَّذِينَ كَفَرُوا وَلَا هُمْ يُسْتَعْتَبُونَ﴾

আর যেদিন আমরা প্রত্যেক সম্প্রদায় থেকে এক একজন সাক্ষী উত্থিত করব [১] তারপর যারা কুফরী করেছে তাদেরকে না ওযর পেশের অনুমতি দেয়া হবে [২], আর না তাদেরকে (আল্লাহ্‌র) সন্তুষ্টি লাভের সুযোগ দেয়া হবে।

﴿وَإِذَا رَأَى الَّذِينَ ظَلَمُوا الْعَذَابَ فَلَا يُخَفَّفُ عَنْهُمْ وَلَا هُمْ يُنْظَرُونَ﴾

আর যারা যুলুম করেছে, তারা যখন শাস্তি দেখবে তখন তাদের শাস্তি লঘু করা হবে না [১] এবং তাদেরকে কোন অবকাশও দেয়া হবে না।

﴿وَإِذَا رَأَى الَّذِينَ أَشْرَكُوا شُرَكَاءَهُمْ قَالُوا رَبَّنَا هَٰؤُلَاءِ شُرَكَاؤُنَا الَّذِينَ كُنَّا نَدْعُو مِنْ دُونِكَ ۖ فَأَلْقَوْا إِلَيْهِمُ الْقَوْلَ إِنَّكُمْ لَكَاذِبُونَ﴾

আর যারা শির্ক করেছে, তারা যখন তাদের শরীকদেরকে দেখবে তখন বলবে, ‘হে আমাদের রব! এরাই তারা যাদেরকে আমরা আপনার পরিবর্তে ডাকতাম;’ তখন শরীকরা এ কথা মুশরিকদের দিকে ফিরিয়ে দিয়ে বলবে, ‘নিশ্চয় তোমরা মিথ্যাবাদী।’

﴿وَأَلْقَوْا إِلَى اللَّهِ يَوْمَئِذٍ السَّلَمَ ۖ وَضَلَّ عَنْهُمْ مَا كَانُوا يَفْتَرُونَ﴾

সেদিন তারা আল্লাহ্‌র কাছে আত্মসমর্পণ করবে [১] এবং তারা যে মিথ্যা উদ্ভাবন করত তা তাদের থেকে উধাও হয়ে যাবে [২]।

﴿الَّذِينَ كَفَرُوا وَصَدُّوا عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ زِدْنَاهُمْ عَذَابًا فَوْقَ الْعَذَابِ بِمَا كَانُوا يُفْسِدُونَ﴾

যারা কুফরী করেছে এবং আল্লাহ্‌র পথ থাকে বাধা দিয়েছে, আমরা তাদের শাস্তির উপর শাস্তি বৃদ্ধি করব [১]; কারণ তারা অশান্তি সৃষ্টি করত।

﴿وَيَوْمَ نَبْعَثُ فِي كُلِّ أُمَّةٍ شَهِيدًا عَلَيْهِمْ مِنْ أَنْفُسِهِمْ ۖ وَجِئْنَا بِكَ شَهِيدًا عَلَىٰ هَٰؤُلَاءِ ۚ وَنَزَّلْنَا عَلَيْكَ الْكِتَابَ تِبْيَانًا لِكُلِّ شَيْءٍ وَهُدًى وَرَحْمَةً وَبُشْرَىٰ لِلْمُسْلِمِينَ﴾

আর স্মরণ করুন, যেদিন আমরা প্রত্যেক উম্মতের কাছে, তাদের থেকে তাদেরই বিরুদ্ধে একজন সাক্ষী উত্থিত করব [১] এবং আপনাকে আমরা তাদের উপর সাক্ষীরূপে নিয়ে আসব [২]। আর আমরা আপনার প্রতি কিতাব নাযিল করেছি [৩] প্রত্যেক বিষয়ের স্পষ্ট ব্যাখ্যাস্বরূপ [৪], পথনির্দেশ, দয়া ও মুসলিমদের জন্য সুসংবাদস্বরূপ।

﴿۞ إِنَّ اللَّهَ يَأْمُرُ بِالْعَدْلِ وَالْإِحْسَانِ وَإِيتَاءِ ذِي الْقُرْبَىٰ وَيَنْهَىٰ عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالْمُنْكَرِ وَالْبَغْيِ ۚ يَعِظُكُمْ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُونَ﴾

নিশ্চয় আল্লাহ্‌ আদল (ন্যায়পরায়ণতা) [১], ইহসান (সদাচরণ) [২] ও আত্মীয়-স্বজনকে দানের [৩] নির্দেশ দেন [৪] এবং তিনি অশ্লীলতা [৫], অসৎকাজ [৬] ও সীমালঙ্ঘন [৭] থেকে নিষেধ করেন; তিনি তোমাদেরকে উপদেশ দেন যাতে তোমরা শিক্ষা গ্রহণ কর।

﴿وَأَوْفُوا بِعَهْدِ اللَّهِ إِذَا عَاهَدْتُمْ وَلَا تَنْقُضُوا الْأَيْمَانَ بَعْدَ تَوْكِيدِهَا وَقَدْ جَعَلْتُمُ اللَّهَ عَلَيْكُمْ كَفِيلًا ۚ إِنَّ اللَّهَ يَعْلَمُ مَا تَفْعَلُونَ﴾

আর তোমরা আল্লাহ্‌র অঙ্গীকার পূর্ণ কর যখন পরস্পর অঙ্গীকার কর এবং তোমরা আল্লাহ্‌কে তোমাদের জামিন করে শপথ দৃঢ় করার পর তা ভঙ্গ করো না [১]। নিশ্চয় আল্লাহ্‌ জানেন যা তোমরা কর।

﴿وَلَا تَكُونُوا كَالَّتِي نَقَضَتْ غَزْلَهَا مِنْ بَعْدِ قُوَّةٍ أَنْكَاثًا تَتَّخِذُونَ أَيْمَانَكُمْ دَخَلًا بَيْنَكُمْ أَنْ تَكُونَ أُمَّةٌ هِيَ أَرْبَىٰ مِنْ أُمَّةٍ ۚ إِنَّمَا يَبْلُوكُمُ اللَّهُ بِهِ ۚ وَلَيُبَيِّنَنَّ لَكُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مَا كُنْتُمْ فِيهِ تَخْتَلِفُونَ﴾

আর তোমরা সে নারীর মত হয়ো না [১], যে তার সূতা মজবুত করে পাকাবার পর সেটার পাক খুলে নষ্ট করে দেয়। তোমাদের শপথ তোমরা পরস্পরকে প্রবঞ্চনা করার জন্য ব্যবহার করে থাক, যাতে একদল অন্যদলের চেয়ে বেশী লাভবান হও। আল্লাহ্‌ তো এটা দিয়ে শুধু তোমাদেরকে পরীক্ষা করেন [২]। আর অবশ্যই আল্লাহ্‌ কিয়ামতের দিন তা তোমাদের কাছে স্পষ্ট বর্ণনা করে দেবেন যাতে তোমরা মতভেদ করতে।

﴿وَلَوْ شَاءَ اللَّهُ لَجَعَلَكُمْ أُمَّةً وَاحِدَةً وَلَٰكِنْ يُضِلُّ مَنْ يَشَاءُ وَيَهْدِي مَنْ يَشَاءُ ۚ وَلَتُسْأَلُنَّ عَمَّا كُنْتُمْ تَعْمَلُونَ﴾

আর ইচ্ছা করলে আল্লাহ্‌ তোমাদেরকে এক জাতি করতে পারতেন, কিন্তু তিনি যাকে ইচ্ছে বিভ্রান্ত করেন এবং যাকে ইচ্ছে সৎপথে পরিচালিত করেন। আর তোমরা যা করতে সে বিষয়ে অবশ্যই তোমাদেরকে প্রশ্ন করা হবে [১]।

﴿وَلَا تَتَّخِذُوا أَيْمَانَكُمْ دَخَلًا بَيْنَكُمْ فَتَزِلَّ قَدَمٌ بَعْدَ ثُبُوتِهَا وَتَذُوقُوا السُّوءَ بِمَا صَدَدْتُمْ عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ ۖ وَلَكُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ﴾

আর পরস্পর প্রবঞ্চনা করার জন্য তোমরা তোমাদের শপথকে ব্যবহার করো না; করলে, পা স্থির হওয়ার পর পিছলে যাবে এবং আল্লাহ্‌র পথে বাধা দেয়ার কারণে তোমরা শাস্তির আস্বাদ গ্রহণ করবে; আর তোমাদের জন্য রয়েছে মহাশাস্তি।

﴿وَلَا تَشْتَرُوا بِعَهْدِ اللَّهِ ثَمَنًا قَلِيلًا ۚ إِنَّمَا عِنْدَ اللَّهِ هُوَ خَيْرٌ لَكُمْ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُونَ﴾

আর তোমরা আল্লাহ্‌র অঙ্গীকার তুচ্ছ মূল্যে বিক্রি করো না [১]। আল্লাহ্‌র কাছে যা আছে তা-ই তোমাদের জন্য উত্তম--- যদি তোমরা জানতে !

﴿مَا عِنْدَكُمْ يَنْفَدُ ۖ وَمَا عِنْدَ اللَّهِ بَاقٍ ۗ وَلَنَجْزِيَنَّ الَّذِينَ صَبَرُوا أَجْرَهُمْ بِأَحْسَنِ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ﴾

তোমাদের কাছে যা আছে তা নিঃশেষ হবে এবং আল্লাহ্‌র কাছে যা আছে তা স্থায়ী [১]। আর যারা ধৈর্য ধারণ করেছে, আমরা অবশ্যই তাদেরকে তারা যা করত তার চায় শ্রেষ্ঠ প্রতিদান দেব [২]।

﴿مَنْ عَمِلَ صَالِحًا مِنْ ذَكَرٍ أَوْ أُنْثَىٰ وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَلَنُحْيِيَنَّهُ حَيَاةً طَيِّبَةً ۖ وَلَنَجْزِيَنَّهُمْ أَجْرَهُمْ بِأَحْسَنِ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ﴾

মুমিন হয়ে পুরুষ ও নারীর মধ্যে যে কেউ সৎকাজ করবে, অবশ্যই আমরা তাকে পবিত্র জীবন [১] দান করব। আর অবশ্যই আমরা তাদেরকে তারা যা করত তার তুলনায় শ্রেষ্ঠ প্রতিদান দেব।

﴿فَإِذَا قَرَأْتَ الْقُرْآنَ فَاسْتَعِذْ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ﴾

সুতরাং যখন আপনি কুরআন পাঠ করবেন [১] তখন অভিশপ্ত শয়তান হতে আল্লাহ্‌র আশ্রয় প্রার্থনা করুন [২];

﴿إِنَّهُ لَيْسَ لَهُ سُلْطَانٌ عَلَى الَّذِينَ آمَنُوا وَعَلَىٰ رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُونَ﴾

নিশ্চয় যারা ঈমান আনে ও তাদের রবেরই উপর নির্ভর করে তাদের উপর তার কোন আধিপত্য নেই [১]।

﴿إِنَّمَا سُلْطَانُهُ عَلَى الَّذِينَ يَتَوَلَّوْنَهُ وَالَّذِينَ هُمْ بِهِ مُشْرِكُونَ﴾

তার আধিপত্য তো শুধু তাদেরই উপর যারা তাকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করে [১] এবং আল্লাহ্‌র সাথে শরীক করে।

﴿وَإِذَا بَدَّلْنَا آيَةً مَكَانَ آيَةٍ ۙ وَاللَّهُ أَعْلَمُ بِمَا يُنَزِّلُ قَالُوا إِنَّمَا أَنْتَ مُفْتَرٍ ۚ بَلْ أَكْثَرُهُمْ لَا يَعْلَمُونَ﴾

আর যখন আমরা এক আয়াতের স্থান পরিবর্তন করে অন্য আয়াত দেই--- আর আল্লাহ্‌ই ভাল জানেন যা তিনি নাযিল করবেন সে সম্পর্কে--- , তখন তারা বলে, ‘আপনি তো শুধু মিথ্যা রটনাকারী’, বরং তাদের অধিকাংশই জানে না।

﴿قُلْ نَزَّلَهُ رُوحُ الْقُدُسِ مِنْ رَبِّكَ بِالْحَقِّ لِيُثَبِّتَ الَّذِينَ آمَنُوا وَهُدًى وَبُشْرَىٰ لِلْمُسْلِمِينَ﴾

বলুন, ‘আপনার রবের কাছ থেকে রূহুল-কুদুস [১] (জিবরীল) যথাযথ ভাবে একে নাযিল করেছেন, যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে সুদৃঢ় করার জন্য এবং হিদায়াত ও মুসলিমদের জন্য সুসংবাদস্বরূপ’।

﴿وَلَقَدْ نَعْلَمُ أَنَّهُمْ يَقُولُونَ إِنَّمَا يُعَلِّمُهُ بَشَرٌ ۗ لِسَانُ الَّذِي يُلْحِدُونَ إِلَيْهِ أَعْجَمِيٌّ وَهَٰذَا لِسَانٌ عَرَبِيٌّ مُبِينٌ﴾

আর আমরা অবশ্যই জানি যে, তারা বলে, ‘তাকে তো কেবল একজন মানুষ [১] শিক্ষা দেয়’। তারা যার প্রতি এটাকে সম্পর্কযুক্ত করার জন্য ঝুঁকছে তার ভাষা তো আরবী নয় ; অথচ এটা (কুরআন) হচ্ছে সুস্পষ্ট আরবী ভাষা।

﴿إِنَّ الَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِآيَاتِ اللَّهِ لَا يَهْدِيهِمُ اللَّهُ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ﴾

নিশ্চয় যারা আল্লাহ্‌র আয়াত সমূহে ঈমান আনে না, তাদেরকে আল্লাহ্‌ হিদায়াত করবেন না এবং তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদয়ক শাস্তি।

﴿إِنَّمَا يَفْتَرِي الْكَذِبَ الَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِآيَاتِ اللَّهِ ۖ وَأُولَٰئِكَ هُمُ الْكَاذِبُونَ﴾

যারা আল্লাহ্‌র আয়াতসমূহে ঈমান আনে না, তারাই তো শুধু মিথ্যা রটনা করে, আর তারাই মিথ্যাবাদী [১]।

﴿مَنْ كَفَرَ بِاللَّهِ مِنْ بَعْدِ إِيمَانِهِ إِلَّا مَنْ أُكْرِهَ وَقَلْبُهُ مُطْمَئِنٌّ بِالْإِيمَانِ وَلَٰكِنْ مَنْ شَرَحَ بِالْكُفْرِ صَدْرًا فَعَلَيْهِمْ غَضَبٌ مِنَ اللَّهِ وَلَهُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ﴾

কেউ তার ঈমান আনার পর আল্লাহ্‌র সাথে কুফরী করলে এবং কুফরীর জন্য হৃদয় উন্মুক্ত রাখলে তার উপর আপতিত হবে আল্লাহ্‌র গযব এবং তার জন্য রয়েছে মহাশাস্তি [১]; তবে তার জন্য নয়, যাকে কুফরীর জন্য বাধ্য [২] করা হয় কিন্তু তার চিত্ত ঈমানে অবিচলিত [৩]।

﴿ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمُ اسْتَحَبُّوا الْحَيَاةَ الدُّنْيَا عَلَى الْآخِرَةِ وَأَنَّ اللَّهَ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الْكَافِرِينَ﴾

এটা এ জন্যে যে, তারা দুনিয়ার জীবনকে আখিরাতের উপর প্রাধান্য দেয়। আর আল্লাহ্‌ কাফির সম্প্রদায়কে হিদায়াত করেন না।

﴿أُولَٰئِكَ الَّذِينَ طَبَعَ اللَّهُ عَلَىٰ قُلُوبِهِمْ وَسَمْعِهِمْ وَأَبْصَارِهِمْ ۖ وَأُولَٰئِكَ هُمُ الْغَافِلُونَ﴾

এরাই তারা, আল্লাহ্‌ যাদের অন্তর, কান ও চোখ মোহর করে দিয়েছেন। আর তারাই গাফিল।

﴿لَا جَرَمَ أَنَّهُمْ فِي الْآخِرَةِ هُمُ الْخَاسِرُونَ﴾

নিঃসন্দেহ, নিশ্চিত যে, তারাই আখিরাতে হবে ক্ষতিগ্রস্থ।

﴿ثُمَّ إِنَّ رَبَّكَ لِلَّذِينَ هَاجَرُوا مِنْ بَعْدِ مَا فُتِنُوا ثُمَّ جَاهَدُوا وَصَبَرُوا إِنَّ رَبَّكَ مِنْ بَعْدِهَا لَغَفُورٌ رَحِيمٌ﴾

তারপর যারা নির্যাতিত হওয়ার পর হিজরত করে, পরে জিহাদ করে এবং ধৈর্য ধারণ করে, নিশ্চয় আপনার রব এ সবের পর, তাদের প্রতি পরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।

﴿۞ يَوْمَ تَأْتِي كُلُّ نَفْسٍ تُجَادِلُ عَنْ نَفْسِهَا وَتُوَفَّىٰ كُلُّ نَفْسٍ مَا عَمِلَتْ وَهُمْ لَا يُظْلَمُونَ﴾

স্মরণ করুন সে দিনকে, যেদিন প্রত্যেক ব্যক্তি আত্মপক্ষ সমর্থন যুক্তি-তর্ক নিয়ে উপস্থিত হবে এবং প্রত্যেককে সে যে আমল করেছে তা পরিপূর্ণরূপে দেয়া হবে এবং তাদের প্রতি যুলুম করা হবে না।

﴿وَضَرَبَ اللَّهُ مَثَلًا قَرْيَةً كَانَتْ آمِنَةً مُطْمَئِنَّةً يَأْتِيهَا رِزْقُهَا رَغَدًا مِنْ كُلِّ مَكَانٍ فَكَفَرَتْ بِأَنْعُمِ اللَّهِ فَأَذَاقَهَا اللَّهُ لِبَاسَ الْجُوعِ وَالْخَوْفِ بِمَا كَانُوا يَصْنَعُونَ﴾

আর আল্লাহ্‌ দৃষ্টান্ত দিচ্ছেন এক জনপদের [১] যা ছিল নিরাপদ ও নিশ্চিন্ত, যেখানে আসত সবদিক থেকে তার প্রচুর জীবনোপকরণ। তারপর সে আল্লাহ্‌র অনুগ্রহ অস্বীকার করল [২], ফলে তারা যা করত সে জন্য আল্লাহ্‌ সেটাকে আস্বাদ গ্রহন করালেন ক্ষুধা ও ভীতির আচ্ছাদনের [৩]।

﴿وَلَقَدْ جَاءَهُمْ رَسُولٌ مِنْهُمْ فَكَذَّبُوهُ فَأَخَذَهُمُ الْعَذَابُ وَهُمْ ظَالِمُونَ﴾

আর অবশ্যই তাদের কাছে এসেছিলেন এক রাসূল তাদেরই মধ্য থেকে [১], কিন্তু তারা তার প্রতি মিথ্যারোপ করেছিল। ফলে শাস্তি তাদেরকে গ্রাস করল এমতাবস্থায় যে, তারা ছিল যুলুমকারী।

﴿فَكُلُوا مِمَّا رَزَقَكُمُ اللَّهُ حَلَالًا طَيِّبًا وَاشْكُرُوا نِعْمَتَ اللَّهِ إِنْ كُنْتُمْ إِيَّاهُ تَعْبُدُونَ﴾

অতএব আল্লাহ্‌ তোমাদেরকে হালাল ও পবিত্র যে রিযক দিয়েছেন তা থেকে তোমরা খাও এবং আল্লাহ্‌র অনুগ্রহের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর, যদি তোমরা শুধু তাঁরই ইবাদাত করে থাক।

﴿إِنَّمَا حَرَّمَ عَلَيْكُمُ الْمَيْتَةَ وَالدَّمَ وَلَحْمَ الْخِنْزِيرِ وَمَا أُهِلَّ لِغَيْرِ اللَّهِ بِهِ ۖ فَمَنِ اضْطُرَّ غَيْرَ بَاغٍ وَلَا عَادٍ فَإِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَحِيمٌ﴾

আল্লাহ্‌ তো শুধু মৃত জন্তু, রক্ত , শূকর-মাংস এবং যা যবেহকালে আল্লাহ্‌র পরিবর্তে অন্যের নাম নেয়া হয়েছে তা-ই হারাম করেছেন [১], কিন্তু কেউ অবাধ্য বা সীমালংঘনকারী না হয়ে অনন্যোপায় হলে আল্লাহ্‌ তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।

﴿وَلَا تَقُولُوا لِمَا تَصِفُ أَلْسِنَتُكُمُ الْكَذِبَ هَٰذَا حَلَالٌ وَهَٰذَا حَرَامٌ لِتَفْتَرُوا عَلَى اللَّهِ الْكَذِبَ ۚ إِنَّ الَّذِينَ يَفْتَرُونَ عَلَى اللَّهِ الْكَذِبَ لَا يُفْلِحُونَ﴾

আর তোমাদের জিহ্বা মিথ্যা আরোপ করে বলে আল্লাহ্‌র প্রতি মিথ্যা রটনা করার জন্য তোমরা বলো না, ‘এটা হালাল এবং এটা হারাম [১]’। নিশ্চয় যারা আল্লাহ্‌র উপর মিথ্যা রটায়, সফলকাম হবে না।

﴿مَتَاعٌ قَلِيلٌ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ﴾

তাদের সুখ-সম্ভোগ সামান্যই এবং তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদয়ক শাস্তি।

﴿وَعَلَى الَّذِينَ هَادُوا حَرَّمْنَا مَا قَصَصْنَا عَلَيْكَ مِنْ قَبْلُ ۖ وَمَا ظَلَمْنَاهُمْ وَلَٰكِنْ كَانُوا أَنْفُسَهُمْ يَظْلِمُونَ﴾

আর যারা ইয়াহূদী হয়েছে আমরা তো শুধু তা-ই হারাম করেছি (তাদের উপর) যা আপনার কাছে আমরা আগে উল্লেখ করেছি [১]। আর আমরা তাদের উপর যুলুম করিনি, কিন্তু তারাই যুলুম করত নিজেদের প্রতি।

﴿ثُمَّ إِنَّ رَبَّكَ لِلَّذِينَ عَمِلُوا السُّوءَ بِجَهَالَةٍ ثُمَّ تَابُوا مِنْ بَعْدِ ذَٰلِكَ وَأَصْلَحُوا إِنَّ رَبَّكَ مِنْ بَعْدِهَا لَغَفُورٌ رَحِيمٌ﴾

যারা অজ্ঞতাবশত মন্দকাজ করে, তারা পরে তওবা করলে ও নিজেদেরকে সংশোধন করলে তাদের জন্য আপনার রব অবশ্যই অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু [১]।

﴿إِنَّ إِبْرَاهِيمَ كَانَ أُمَّةً قَانِتًا لِلَّهِ حَنِيفًا وَلَمْ يَكُ مِنَ الْمُشْرِكِينَ﴾

নিশ্চয় ইবরাহীম ছিলেন এক উম্মাত [১], আল্লাহ্‌র একান্ত অনুগত, একনিষ্ঠ [২] এবং তিনি ছিলেন না মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত;

﴿شَاكِرًا لِأَنْعُمِهِ ۚ اجْتَبَاهُ وَهَدَاهُ إِلَىٰ صِرَاطٍ مُسْتَقِيمٍ﴾

তিনি ছিলেন আল্লাহ্‌র অনুগ্রহের জন্য কৃতজ্ঞ; আল্লাহ্‌ তাঁকে মনোনীত করেছেন এবং তাঁকে পরিচালিত করেছিলেন সরল পথে [১]।

﴿وَآتَيْنَاهُ فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً ۖ وَإِنَّهُ فِي الْآخِرَةِ لَمِنَ الصَّالِحِينَ﴾

আর আমরা তাঁকে দুনিয়ায় দিয়েছিলাম মঙ্গল। আর নিশ্চয় তিনি আখিরাতে সৎকর্মপরায়ণদের দলভুক্ত [১]।

﴿ثُمَّ أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ أَنِ اتَّبِعْ مِلَّةَ إِبْرَاهِيمَ حَنِيفًا ۖ وَمَا كَانَ مِنَ الْمُشْرِكِينَ﴾

তারপর আমরা আপনার প্রতি ওহী করলাম যে, ‘আপনি একনিষ্ঠ ইবরাহীমের মিল্লাত (আদর্শ) অনুসরণ করুন; এবং তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না।

﴿إِنَّمَا جُعِلَ السَّبْتُ عَلَى الَّذِينَ اخْتَلَفُوا فِيهِ ۚ وَإِنَّ رَبَّكَ لَيَحْكُمُ بَيْنَهُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فِيمَا كَانُوا فِيهِ يَخْتَلِفُونَ﴾

শনিবার পালন তো শুধু তাদের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল, যারা এ সম্বন্ধে মতভেদ করেছে। আর যে বিষয়ে তারা মতভেদ করত আপনার রব তো অবশ্যই কিয়ামতের দিন সে বিষয়ে তাদের বিচার- মীমাংসা করে দেবেন [১]।

﴿ادْعُ إِلَىٰ سَبِيلِ رَبِّكَ بِالْحِكْمَةِ وَالْمَوْعِظَةِ الْحَسَنَةِ ۖ وَجَادِلْهُمْ بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ ۚ إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعْلَمُ بِمَنْ ضَلَّ عَنْ سَبِيلِهِ ۖ وَهُوَ أَعْلَمُ بِالْمُهْتَدِينَ﴾

আপনি মানুষকে দা’ওয়াত [১] দিন আপনার রবের পথে হিকমত [২] ও সদুপদেশ [৩] দ্বারা এবং তাদের সাথে তর্ক করবেন উত্তম পন্থায় [৪]। নিশ্চয় আপনার রব, তাঁর পথ ছেড়ে কে বিপথগামী হয়েছে, সে সম্বন্ধে তিনি বেশি জানেন এবং কারা সৎপথে আছে তাও তিনি ভালভাবেই জানেন।

﴿وَإِنْ عَاقَبْتُمْ فَعَاقِبُوا بِمِثْلِ مَا عُوقِبْتُمْ بِهِ ۖ وَلَئِنْ صَبَرْتُمْ لَهُوَ خَيْرٌ لِلصَّابِرِينَ﴾

আর যদি তোমরা শাস্তি দাও [১], তবে ঠিক ততখানি শাস্তি দেবে যতখানি অন্যায় তোমাদের প্রতি করা হয়েছে। তবে তোমরা ধৈর্য ধারণ করল ধৈর্যশীলদের জন্য সেটা অবশ্যই উত্তম [২]।

﴿وَاصْبِرْ وَمَا صَبْرُكَ إِلَّا بِاللَّهِ ۚ وَلَا تَحْزَنْ عَلَيْهِمْ وَلَا تَكُ فِي ضَيْقٍ مِمَّا يَمْكُرُونَ﴾

আর আপনি ধৈর্য ধারণ করুন [১], আপনার ধৈর্য তো আল্লাহ্‌রই সাহায্যে। আর আপনি তাদের জন্য দুঃখ করবেন না এবং তাদের ষড়যন্ত্রে আপনি মনঃক্ষুণ্নও হবেন না ।

﴿إِنَّ اللَّهَ مَعَ الَّذِينَ اتَّقَوْا وَالَّذِينَ هُمْ مُحْسِنُونَ﴾

নিশ্চয় আল্লাহ্‌ তাদের সঙ্গে আছেন যারা তাকওয়া অবলম্বন করে এবং যারা মুহসিন [১]।

الترجمات والتفاسير لهذه السورة: