النجم

تفسير سورة النجم

الترجمة البنغالية

বাংলা

الترجمة البنغالية

ترجمة معاني القرآن الكريم للغة البنغالية ترجمها د. أبو بكر محمد زكريا، نشرها مجمع الملك فهد لطباعة المصحف الشريف بالمدينة المنورة. عام الطبعة 1436هـ.

﴿بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ وَالنَّجْمِ إِذَا هَوَىٰ﴾

শপথ নক্ষত্রের, যখন তা হয় অস্তমিত [১],

﴿مَا ضَلَّ صَاحِبُكُمْ وَمَا غَوَىٰ﴾

তোমাদের সঙ্গী [১] বিভ্রান্ত নয়, বিপথগামীও নয়,

﴿وَمَا يَنْطِقُ عَنِ الْهَوَىٰ﴾

আর তিনি মনগড়া কথা বলেন না [১]

﴿إِنْ هُوَ إِلَّا وَحْيٌ يُوحَىٰ﴾

তাতো কেবল ওহী, যা তার প্রতি ওহীরূপে প্রেরিত হয়,

﴿عَلَّمَهُ شَدِيدُ الْقُوَىٰ﴾

তাকে শিক্ষা দান করেছেন প্ৰচণ্ড শক্তিশালী [১],

﴿ذُو مِرَّةٍ فَاسْتَوَىٰ﴾

সৌন্দর্যপূর্ণ সত্তা [১]। অতঃপর তিনি স্থির হয়েছিলেন [২],

﴿وَهُوَ بِالْأُفُقِ الْأَعْلَىٰ﴾

আর তিনি ছিলেন ঊর্ধ্বদিগন্তে [১],

﴿ثُمَّ دَنَا فَتَدَلَّىٰ﴾

তারপর তিনি তার কাছাকাছি হলেন, অতঃপর খুব কাছাকাছি,

﴿فَكَانَ قَابَ قَوْسَيْنِ أَوْ أَدْنَىٰ﴾

ফলে তাদের মধ্যে দু ধনুকের ব্যবধান রইল অথবা তারও কম [১]।

﴿فَأَوْحَىٰ إِلَىٰ عَبْدِهِ مَا أَوْحَىٰ﴾

তখন আল্লাহ্‌ তাঁর বান্দার প্রতি যা ওহী করার তা ওহী করলেন [১]

﴿مَا كَذَبَ الْفُؤَادُ مَا رَأَىٰ﴾

যা তিনি দেখেছেন, তার অন্তঃকরণ তা মিথ্যা বলেনি [১] ;

﴿أَفَتُمَارُونَهُ عَلَىٰ مَا يَرَىٰ﴾

তিনি যা দেখেছেন তোমরা কি সে বিষয়ে তাঁর সঙ্গে বিতর্ক করবে?

﴿وَلَقَدْ رَآهُ نَزْلَةً أُخْرَىٰ﴾

আর অবশ্যই তিনি তাকে আরেকবার দেখেছিলেন

﴿عِنْدَ سِدْرَةِ الْمُنْتَهَىٰ﴾

‘সিদরাতুল মুন্তাহা’ তথা প্রান্তবর্তী কুল গাছ এর কাছে [১],

﴿عِنْدَهَا جَنَّةُ الْمَأْوَىٰ﴾

যার কাছে জান্নাতুল মা’ওয়া [১] অবস্থিত।

﴿إِذْ يَغْشَى السِّدْرَةَ مَا يَغْشَىٰ﴾

যখন কুল গাছটিকে যা আচ্ছাদিত করার তা আচ্ছাদিত করেছিল [১],

﴿مَا زَاغَ الْبَصَرُ وَمَا طَغَىٰ﴾

তার দৃষ্টি বিভ্রম হয়নি, দৃষ্টি লক্ষ্যচ্যুতও হয়নি [১]।

﴿لَقَدْ رَأَىٰ مِنْ آيَاتِ رَبِّهِ الْكُبْرَىٰ﴾

অবশ্যই তিনি তার রবের মহান নিদর্শনাবলীর কিছু দেখেছিলেন ;

﴿أَفَرَأَيْتُمُ اللَّاتَ وَالْعُزَّىٰ﴾

অতএব, তোমরা আমাকে জানাও ‘লাত’ ও ‘উযযা' সম্পর্কে

﴿وَمَنَاةَ الثَّالِثَةَ الْأُخْرَىٰ﴾

এবং তৃতীয় আরেকটি ‘মানাত’ সম্পর্কে [১]?

﴿أَلَكُمُ الذَّكَرُ وَلَهُ الْأُنْثَىٰ﴾

তবে কি তোমাদের জন্য পুত্ৰ সন্তান এবং আল্লাহর জন্য কন্যা সন্তান?

﴿تِلْكَ إِذًا قِسْمَةٌ ضِيزَىٰ﴾

এ রকম বন্টন তো অসঙ্গত [১]

﴿إِنْ هِيَ إِلَّا أَسْمَاءٌ سَمَّيْتُمُوهَا أَنْتُمْ وَآبَاؤُكُمْ مَا أَنْزَلَ اللَّهُ بِهَا مِنْ سُلْطَانٍ ۚ إِنْ يَتَّبِعُونَ إِلَّا الظَّنَّ وَمَا تَهْوَى الْأَنْفُسُ ۖ وَلَقَدْ جَاءَهُمْ مِنْ رَبِّهِمُ الْهُدَىٰ﴾

এগুলো কিছু নাম মাত্র যা তোমরা ও তোমাদের পূর্বপুরুষরা রেখেছ, যার সমর্থনে আল্লাহ্‌ কোন দলীলপ্রমাণ নাযিল করেননি। তারা তো অনুমান এবং নিজেদের প্রবৃত্তিরই অনুসরণ করে, অথচ তাদের কাছে তাদের রবের পক্ষ থেকে হেদায়াত এসেছে [১]।

﴿أَمْ لِلْإِنْسَانِ مَا تَمَنَّىٰ﴾

মানুষ যা চায় তাই কি সে পায়?

﴿فَلِلَّهِ الْآخِرَةُ وَالْأُولَىٰ﴾

বস্তুতঃ আখেরাত ও দুনিয়া আল্লাহ্‌রই

﴿۞ وَكَمْ مِنْ مَلَكٍ فِي السَّمَاوَاتِ لَا تُغْنِي شَفَاعَتُهُمْ شَيْئًا إِلَّا مِنْ بَعْدِ أَنْ يَأْذَنَ اللَّهُ لِمَنْ يَشَاءُ وَيَرْضَىٰ﴾

আর আসমানসমূহে বহু ফিরিশতা রয়েছে ; তাদের সুপারিশ কিছুমাত্র ফলপ্রসূ হবে না, তবে আল্লাহর অনুমতির পর, যার জন্য তিনি ইচ্ছে করেন ও যার প্রতি তিনি সন্তুষ্ট।

﴿إِنَّ الَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِالْآخِرَةِ لَيُسَمُّونَ الْمَلَائِكَةَ تَسْمِيَةَ الْأُنْثَىٰ﴾

নিশ্চয় যারা আখিরাতের উপর ঈমান আনে না তারাই নারীবাচক নাম দিয়ে থাকে ফিরিশতাদেরকে [১] ;

﴿وَمَا لَهُمْ بِهِ مِنْ عِلْمٍ ۖ إِنْ يَتَّبِعُونَ إِلَّا الظَّنَّ ۖ وَإِنَّ الظَّنَّ لَا يُغْنِي مِنَ الْحَقِّ شَيْئًا﴾

অথচ এ বিষয়ে তাদের কোন জ্ঞানই নেই, তারা তো শুধু অনুমানেরই অনুসরণ করে ; আর নিশ্চয় অনুমান সত্যের মোকাবিলায় কোনই কাজে আসে না [১]।

﴿فَأَعْرِضْ عَنْ مَنْ تَوَلَّىٰ عَنْ ذِكْرِنَا وَلَمْ يُرِدْ إِلَّا الْحَيَاةَ الدُّنْيَا﴾

অতএব আপনি তাকে উপেক্ষা করে চলুন যে আমাদের স্মরণ [১] থেকে বিমুখ হয় এবং কেবল দুনিয়ার জীবনই কামনা করে।

﴿ذَٰلِكَ مَبْلَغُهُمْ مِنَ الْعِلْمِ ۚ إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعْلَمُ بِمَنْ ضَلَّ عَنْ سَبِيلِهِ وَهُوَ أَعْلَمُ بِمَنِ اهْتَدَىٰ﴾

এটাই তাদের জ্ঞানের শেষ সীমা। নিশ্চয় আপনার রব, তিনিই ভাল জানেন কে তাঁর পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে এবং তিনিই ভাল জানেন কে হেদায়াতপ্ৰাপ্ত হয়েছে।

﴿وَلِلَّهِ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ لِيَجْزِيَ الَّذِينَ أَسَاءُوا بِمَا عَمِلُوا وَيَجْزِيَ الَّذِينَ أَحْسَنُوا بِالْحُسْنَى﴾

আর আসমানসমূহে যা কিছু আছে ও যমীনে যা কিছু আছে তা আল্লাহ্‌রই। যাতে তিনি তাদের কাজের প্রতিফল দিতে পারেন যারা মন্দ কাজ করে এবং তাদেরকে তিনি উত্তম পুরস্কার দিতে পারেন যারা সৎকাজ করে,

﴿الَّذِينَ يَجْتَنِبُونَ كَبَائِرَ الْإِثْمِ وَالْفَوَاحِشَ إِلَّا اللَّمَمَ ۚ إِنَّ رَبَّكَ وَاسِعُ الْمَغْفِرَةِ ۚ هُوَ أَعْلَمُ بِكُمْ إِذْ أَنْشَأَكُمْ مِنَ الْأَرْضِ وَإِذْ أَنْتُمْ أَجِنَّةٌ فِي بُطُونِ أُمَّهَاتِكُمْ ۖ فَلَا تُزَكُّوا أَنْفُسَكُمْ ۖ هُوَ أَعْلَمُ بِمَنِ اتَّقَىٰ﴾

যারা বিরত থাকে গুরুতর পাপ ও অশ্লীল কাজ থেকে, ছোটখাট অপরাধ ব্যতীত [১]। নিশ্চয় আপনার রবের ক্ষমা অপরিসীম ; তিনি তোমাদের সম্পর্কে সম্যক অবগত---যখন তিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছিলেন মাটি হতে এবং যখন তোমরা মাতৃগর্ভে ভ্রূণরূপে ছিলে। অতএব তোমরা আত্মপ্ৰশংসা করো না, তিনিই সম্যক জানেন তার সম্পর্কে যে তাকওয়া অবলম্বন করেছে [২]।

﴿أَفَرَأَيْتَ الَّذِي تَوَلَّىٰ﴾

আপনি কি দেখেছেন সে ব্যক্তিকে যে মুখ ফিরিয়ে নেয় ;

﴿وَأَعْطَىٰ قَلِيلًا وَأَكْدَىٰ﴾

এবং দান করে সামান্যই, পরে বন্ধ করে দেয় [১]?

﴿أَعِنْدَهُ عِلْمُ الْغَيْبِ فَهُوَ يَرَىٰ﴾

তার কাছে কি গায়েবের জ্ঞান আছে যে, সে প্রত্যক্ষ করে?

﴿أَمْ لَمْ يُنَبَّأْ بِمَا فِي صُحُفِ مُوسَىٰ﴾

নাকি তাকে জানানো হয়নি যা আছে মূসার সহীফায়,

﴿وَإِبْرَاهِيمَ الَّذِي وَفَّىٰ﴾

এবং ইবরাহীমের সহীফায় [১], যিনি পূর্ণ করেছিলেন (তার অঙ্গীকার) [২]?

﴿أَلَّا تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَىٰ﴾

তা এই যে [১], কোন বোঝা বহনকারী অন্যের বোঝা বহন করবে না,

﴿وَأَنْ لَيْسَ لِلْإِنْسَانِ إِلَّا مَا سَعَىٰ﴾

আর এই যে, মানুষ তাই পায় যা সে চেষ্টা করে [১],

﴿وَأَنَّ سَعْيَهُ سَوْفَ يُرَىٰ﴾

আর এই যে,তার প্রচেষ্টার ফল শিঘ্রই দেখা যাবে---

﴿ثُمَّ يُجْزَاهُ الْجَزَاءَ الْأَوْفَىٰ﴾

তারপর তাকে দেয়া হবে পূর্ণ প্রতিদান,

﴿وَأَنَّ إِلَىٰ رَبِّكَ الْمُنْتَهَىٰ﴾

আর এই যে, সবার শেষ গন্তব্য তো আপনার রবের কাছে [১],

﴿وَأَنَّهُ هُوَ أَضْحَكَ وَأَبْكَىٰ﴾

আর এই যে, তিনিই হাসান এবং তিনিই কাঁদান [১],

﴿وَأَنَّهُ هُوَ أَمَاتَ وَأَحْيَا﴾

আর এই যে, তিনিই মারেন এবং তিনিই বাঁচান,

﴿وَأَنَّهُ خَلَقَ الزَّوْجَيْنِ الذَّكَرَ وَالْأُنْثَىٰ﴾

আর এই যে, তিনিই সৃষ্টি করেন যুগল---পুরুষ ও নারী

﴿مِنْ نُطْفَةٍ إِذَا تُمْنَىٰ﴾

শুক্রবিন্দু হতে, যখন তা স্থলিত হয়,

﴿وَأَنَّ عَلَيْهِ النَّشْأَةَ الْأُخْرَىٰ﴾

আর এই যে, পুনরুত্থান ঘটানোর দায়িত্ব তাঁরই [১],

﴿وَأَنَّهُ هُوَ أَغْنَىٰ وَأَقْنَىٰ﴾

আর এই যে, তিনিই অভাবমুক্ত করেন এবং সম্পদ দান করেন [১],

﴿وَأَنَّهُ هُوَ رَبُّ الشِّعْرَىٰ﴾

আর এই যে, তিনি শি’রা নক্ষত্রের রব [১]।

﴿وَأَنَّهُ أَهْلَكَ عَادًا الْأُولَىٰ﴾

আর এই যে, তিনিই প্রাচীন ‘আদ সম্প্রদায়কে ধ্বংস করেছিলেন,

﴿وَثَمُودَ فَمَا أَبْقَىٰ﴾

এবং সামূদ সম্প্রদায়কেও [১] ; অতঃপর কাউকেও তিনি বাকী রাখেননি ---

﴿وَقَوْمَ نُوحٍ مِنْ قَبْلُ ۖ إِنَّهُمْ كَانُوا هُمْ أَظْلَمَ وَأَطْغَىٰ﴾

আর এদের আগে নূহের সম্প্রদায়কেও, নিশ্চয় তারা ছিল অত্যন্ত যালিম ও চরম অবাধ্য।

﴿وَالْمُؤْتَفِكَةَ أَهْوَىٰ﴾

আর তিনি উল্টানো আবাসভূমিকে নিক্ষেপ করেছিলেন, [১]

﴿فَغَشَّاهَا مَا غَشَّىٰ﴾

অতঃপর সেটাকে আচ্ছন্ন করল যা আচ্ছন্ন করার [১] !

﴿فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكَ تَتَمَارَىٰ﴾

সুতরাং (হে মানুষ!) তুমি তোমার রবের কোন্‌ অনুগ্রহ সম্পর্কে সন্দেহ পোষণ করবে [১]?

﴿هَٰذَا نَذِيرٌ مِنَ النُّذُرِ الْأُولَىٰ﴾

এ নবীও [১] অতীতের সতর্ককারীদের মতই এক সতর্ককারী।

﴿أَزِفَتِ الْآزِفَةُ﴾

কিয়ামত আসন্ন [১],

﴿لَيْسَ لَهَا مِنْ دُونِ اللَّهِ كَاشِفَةٌ﴾

আল্লাহ ছাড়া কেউই এটা প্রকাশ করতে সক্ষম নয়।

﴿أَفَمِنْ هَٰذَا الْحَدِيثِ تَعْجَبُونَ﴾

তোমরা কি এ কথায় বিস্ময় বোধ করছ !

﴿وَتَضْحَكُونَ وَلَا تَبْكُونَ﴾

আর হাসি-ঠাট্টা করছ ! এবং কাঁদছো না [১]?

﴿وَأَنْتُمْ سَامِدُونَ﴾

আর তোমরা উদাসীন [১],

﴿فَاسْجُدُوا لِلَّهِ وَاعْبُدُوا ۩﴾

অতএব আল্লাহকে সিজদা কর এবং তাঁর ‘ইবাদাত কর [১]।

الترجمات والتفاسير لهذه السورة: