ق

تفسير سورة ق

الترجمة البنغالية

বাংলা

الترجمة البنغالية

ترجمة معاني القرآن الكريم للغة البنغالية ترجمها د. أبو بكر محمد زكريا، نشرها مجمع الملك فهد لطباعة المصحف الشريف بالمدينة المنورة. عام الطبعة 1436هـ.

﴿بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ ق ۚ وَالْقُرْآنِ الْمَجِيدِ﴾

ক্বাফ্‌, শপথ সম্মানিত কুরআনের

﴿بَلْ عَجِبُوا أَنْ جَاءَهُمْ مُنْذِرٌ مِنْهُمْ فَقَالَ الْكَافِرُونَ هَٰذَا شَيْءٌ عَجِيبٌ﴾

বরং তারা বিস্ময় বোধ করে যে, তাদের মধ্য থেকে একজন সতর্ককারী তাদের কাছে এসেছেন। আর কাফিররা বলে, ‘এ তো এক আশ্চর্য জিনিস !

﴿أَإِذَا مِتْنَا وَكُنَّا تُرَابًا ۖ ذَٰلِكَ رَجْعٌ بَعِيدٌ﴾

‘আমাদের মৃত্যু হলে এবং আমরা মাটিতে পরিণত হলে আমরা কি পুনরুখিত হব? এ ফিরে যাওয়া সুদূরপরাহত।’

﴿قَدْ عَلِمْنَا مَا تَنْقُصُ الْأَرْضُ مِنْهُمْ ۖ وَعِنْدَنَا كِتَابٌ حَفِيظٌ﴾

অবশ্যই আমারা জানি মাটি ক্ষয় করে তাদের কতটুকু এবং আমাদের কাছে আছে সম্যক সংরক্ষণকারী কিতাব।

﴿بَلْ كَذَّبُوا بِالْحَقِّ لَمَّا جَاءَهُمْ فَهُمْ فِي أَمْرٍ مَرِيجٍ﴾

বস্তুত তাদের কাছে সত্য আসার পর তারা তাতে মিথ্যারোপ করেছে। অতএব, তারা সংশয়যুক্ত বিষয়ে নিপতিত [১]।

﴿أَفَلَمْ يَنْظُرُوا إِلَى السَّمَاءِ فَوْقَهُمْ كَيْفَ بَنَيْنَاهَا وَزَيَّنَّاهَا وَمَا لَهَا مِنْ فُرُوجٍ﴾

তারা কি তাদের উপরে অবস্থিত আসমানের দিকে তাকিয়ে দেখে না, আমরা কিভাবে তা নির্মাণ করেছি ও তাকে সুশোভিত করেছি এবং তাতে কোন ফাটলও নেই?

﴿وَالْأَرْضَ مَدَدْنَاهَا وَأَلْقَيْنَا فِيهَا رَوَاسِيَ وَأَنْبَتْنَا فِيهَا مِنْ كُلِّ زَوْجٍ بَهِيجٍ﴾

আর আমরা বিস্তৃত করেছি যমীনকে এবং তাতে স্থাপন করেছি পর্বতমালা। আর তাতে উদ্‌গত করেছি নয়ন প্রীতিকর সর্বপ্রকার উদ্ভিদ,

﴿تَبْصِرَةً وَذِكْرَىٰ لِكُلِّ عَبْدٍ مُنِيبٍ﴾

আল্লাহর অনুরাগী প্রত্যেক বান্দার জন্য জ্ঞান ও উপদেশস্বরূপ।

﴿وَنَزَّلْنَا مِنَ السَّمَاءِ مَاءً مُبَارَكًا فَأَنْبَتْنَا بِهِ جَنَّاتٍ وَحَبَّ الْحَصِيدِ﴾

আর আসমান থেকে আমারা বর্ষন করি কল্যাণকর বৃষ্টি অতঃপর তা দ্বারা আমরা উৎপন্ন করি উদ্যান, কর্তনযোগ্য শস্য দানা,

﴿وَالنَّخْلَ بَاسِقَاتٍ لَهَا طَلْعٌ نَضِيدٌ﴾

ও সমুন্নত খেজুর গাছ যাতে আছে গুচ্ছ গুচ্ছ খেজুর---

﴿رِزْقًا لِلْعِبَادِ ۖ وَأَحْيَيْنَا بِهِ بَلْدَةً مَيْتًا ۚ كَذَٰلِكَ الْخُرُوجُ﴾

বান্দাদের রিযিকস্বরূপ। আর আমরা বৃষ্টি দিয়ে সঞ্জীবিত করি মৃত শহরকে ; এভাবেই উত্থান ঘটবে [১]।

﴿كَذَّبَتْ قَبْلَهُمْ قَوْمُ نُوحٍ وَأَصْحَابُ الرَّسِّ وَثَمُودُ﴾

তাদের আগেও মিথ্যারোপ করেছিল নূহের সম্প্রদায়, রাস্ এর অধিবাসী [১] ও সামূদ সম্প্রদায়,

﴿وَعَادٌ وَفِرْعَوْنُ وَإِخْوَانُ لُوطٍ﴾

আর আদ, ফির’আউন ও লুত সম্পপ্ৰদায়।

﴿وَأَصْحَابُ الْأَيْكَةِ وَقَوْمُ تُبَّعٍ ۚ كُلٌّ كَذَّبَ الرُّسُلَ فَحَقَّ وَعِيدِ﴾

আর আইকার অধিবাসী [১] ও তুব্বা’ সম্প্রদায় [২] ; তারা সকলেই রাসূলগণের প্রতি মিথ্যারোপ করেছিল। [৩], ফলে তাদের উপর আমার শাস্তি যথার্থভাবে আপতিত হয়েছে।

﴿أَفَعَيِينَا بِالْخَلْقِ الْأَوَّلِ ۚ بَلْ هُمْ فِي لَبْسٍ مِنْ خَلْقٍ جَدِيدٍ﴾

আমরা কি প্রথমবার সৃষ্টি করেই ক্লান্ত হয়ে পড়েছি! বরং নতুন সৃষ্টির বিষয়ে তারা সন্দেহে পতিত [১]

﴿وَلَقَدْ خَلَقْنَا الْإِنْسَانَ وَنَعْلَمُ مَا تُوَسْوِسُ بِهِ نَفْسُهُ ۖ وَنَحْنُ أَقْرَبُ إِلَيْهِ مِنْ حَبْلِ الْوَرِيدِ﴾

আর অবশ্যই আমরা মানুষকে সৃষ্টি করেছি এবং তার প্রবৃত্তি তাকে যে কুমন্ত্রণা দেয় তাও আমরা জানি। আর আমরা তার গ্ৰীবাস্থিত ধমনীর চেয়েও নিকটতর [১]।

﴿إِذْ يَتَلَقَّى الْمُتَلَقِّيَانِ عَنِ الْيَمِينِ وَعَنِ الشِّمَالِ قَعِيدٌ﴾

যখন তার ডানে ও বামে বসা দু’জন ফেরেশতা পরস্পর (তার আমল লিখার জন্য) গ্ৰহণ করে [১] ;

﴿مَا يَلْفِظُ مِنْ قَوْلٍ إِلَّا لَدَيْهِ رَقِيبٌ عَتِيدٌ﴾

সে যে কথাই উচ্চারণ করে তার কাছে সদা উপস্থিত সংরক্ষণকারী রয়েছে।

﴿وَجَاءَتْ سَكْرَةُ الْمَوْتِ بِالْحَقِّ ۖ ذَٰلِكَ مَا كُنْتَ مِنْهُ تَحِيدُ﴾

আর মৃত্যুযন্ত্রণা নিয়ে এসেছে (সে) সত্যই [১]; এটা (তা-ই) যা থেকে তুমি পালাতে চাচ্ছিলে।

﴿وَنُفِخَ فِي الصُّورِ ۚ ذَٰلِكَ يَوْمُ الْوَعِيدِ﴾

আর শিংগায় ফুঁক দেয়া হবে, ওটাই প্ৰতিশ্রুত দিন।

﴿وَجَاءَتْ كُلُّ نَفْسٍ مَعَهَا سَائِقٌ وَشَهِيدٌ﴾

আর সেদিন প্রত্যেক ব্যক্তি উপস্থিত হবে, তার সঙ্গে থাকবে চালক ও সাক্ষী [১]।

﴿لَقَدْ كُنْتَ فِي غَفْلَةٍ مِنْ هَٰذَا فَكَشَفْنَا عَنْكَ غِطَاءَكَ فَبَصَرُكَ الْيَوْمَ حَدِيدٌ﴾

অবশ্যই তুমি এ দিন সন্বদ্ধে উদাসীন ছিলে, অতঃপর আমারা তোমাদের সামনে থেকে পর্দা উন্মোচন করেছি। সুতরাং আজ থেকে তোমার দৃষ্টি প্রখর [১]।

﴿وَقَالَ قَرِينُهُ هَٰذَا مَا لَدَيَّ عَتِيدٌ﴾

আর তার সঙ্গী ফেরেশতা বলবে, এই তো আমার কাছে ‘আমলনামা প্রস্তুত।’

﴿أَلْقِيَا فِي جَهَنَّمَ كُلَّ كَفَّارٍ عَنِيدٍ﴾

আদেশ করা হবে, তোমারা উভয়ে [১] জাহান্নামে নিক্ষেপ কর প্রত্যেক উদ্বত কাফিরকে-

﴿مَنَّاعٍ لِلْخَيْرِ مُعْتَدٍ مُرِيبٍ﴾

কল্যাণকর কাজে প্রবল বাধাদানকারী, সীমলঙ্ঘনকারী ও সন্দেহ পোষণকারী [১]।

﴿الَّذِي جَعَلَ مَعَ اللَّهِ إِلَٰهًا آخَرَ فَأَلْقِيَاهُ فِي الْعَذَابِ الشَّدِيدِ﴾

যে আল্লাহর সঙ্গে অন্য ইলাহ গ্রহণ করেছিল, তোমারা তাকে কঠিন শাস্তিতে নিক্ষেপ কর।

﴿۞ قَالَ قَرِينُهُ رَبَّنَا مَا أَطْغَيْتُهُ وَلَٰكِنْ كَانَ فِي ضَلَالٍ بَعِيدٍ﴾

তার সহচর শয়তান বলবে, ‘হে আমাদের রব! আমি তাকে বিদ্রোহী করে তুলিনি। বস্তুত সেই ছিল ঘোর বিভ্রান্ত [১]।

﴿قَالَ لَا تَخْتَصِمُوا لَدَيَّ وَقَدْ قَدَّمْتُ إِلَيْكُمْ بِالْوَعِيدِ﴾

আল্লাহ্‌ বলবেন, ‘তোমারা আমার সামনে বাক-বিতন্ডাতা করো না; আমি তো তোমাদেরকে আগেই সতর্ক করেছিলাম।

﴿مَا يُبَدَّلُ الْقَوْلُ لَدَيَّ وَمَا أَنَا بِظَلَّامٍ لِلْعَبِيدِ﴾

‘আমার কাছে কথা রদবদল হয় না এবং আমি বান্দাদের প্রতি যুলুমকারীও নই।’

﴿يَوْمَ نَقُولُ لِجَهَنَّمَ هَلِ امْتَلَأْتِ وَتَقُولُ هَلْ مِنْ مَزِيدٍ﴾

সেদিন আমরা জাহান্নামকে জিজ্ঞেস করব, ‘তুমি কি পূর্ণ হয়েছ?’ জাহান্নাম বলবে, ‘আরো বেশী আছে কি [১]?’

﴿وَأُزْلِفَتِ الْجَنَّةُ لِلْمُتَّقِينَ غَيْرَ بَعِيدٍ﴾

আর জান্নাতকে নিকটস্থ করা হবে মুত্তাকীদের---কোন দূরত্বে থাকবে না।

﴿هَٰذَا مَا تُوعَدُونَ لِكُلِّ أَوَّابٍ حَفِيظٍ﴾

এরই প্রতিশ্রুতি তোমাদেরকে দেয়া হয়েছিল---প্রত্যেক আল্লাহ্‌--- অভিমুখী [১], হিফাযতকারীর জন্য---

﴿مَنْ خَشِيَ الرَّحْمَٰنَ بِالْغَيْبِ وَجَاءَ بِقَلْبٍ مُنِيبٍ﴾

যারা গায়েব অবস্থায় দয়াময় আল্লাহকে ভয় করেছে এবং বিনীত চিত্তে উপস্থিত হয়েছে---

﴿ادْخُلُوهَا بِسَلَامٍ ۖ ذَٰلِكَ يَوْمُ الْخُلُودِ﴾

তাদেরকে বলা হবে, ‘শান্তির সাথে তোমরা তাতে প্ৰবেশ কর; এটা অনন্ত জীবনের দিন।’

﴿لَهُمْ مَا يَشَاءُونَ فِيهَا وَلَدَيْنَا مَزِيدٌ﴾

এখানে তারা যা কামনা করবে তা-ই থাকবে [১] এবং আমার কাছে রয়েছে তারও বেশী [২]।

﴿وَكَمْ أَهْلَكْنَا قَبْلَهُمْ مِنْ قَرْنٍ هُمْ أَشَدُّ مِنْهُمْ بَطْشًا فَنَقَّبُوا فِي الْبِلَادِ هَلْ مِنْ مَحِيصٍ﴾

আর আমরা তাদের আগে বহু প্ৰজন্মকে ধ্বংস করে দিয়েছি, যারা ছিল পাকড়াও করার ক্ষেত্রে তাদের চেয়ে প্রবলতর,তারা দেশে দেশে ঘুরে বেড়াত; তাদের কোন পলায়ণস্থল ছিল কি?

﴿إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَذِكْرَىٰ لِمَنْ كَانَ لَهُ قَلْبٌ أَوْ أَلْقَى السَّمْعَ وَهُوَ شَهِيدٌ﴾

নিশ্চয় এতে উপদেশ রয়েছে তার জন্য, যার আছে অন্তঃকরণ’ [১] অথবা যে শ্রবণ করে মনোযোগের সাথে।

﴿وَلَقَدْ خَلَقْنَا السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ وَمَا مَسَّنَا مِنْ لُغُوبٍ﴾

আর অবশ্যই আমারা আসমানসমুহ, যমীন ও তাদের অন্তর্বর্তী সমস্ত কিছু সৃষ্টি করেছি ছয় দিনে ; আর আমাকে কোন ক্লান্তি স্পর্শ করেনি।

﴿فَاصْبِرْ عَلَىٰ مَا يَقُولُونَ وَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ قَبْلَ طُلُوعِ الشَّمْسِ وَقَبْلَ الْغُرُوبِ﴾

অতএব তারা যা বলে তাতে আপনি ধৈর্য ধারণ করুন এবং আপনার রবের সপ্ৰশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করুন সূর্যোদয়ের আগে ও সূর্যাস্তের আগে [১],

﴿وَمِنَ اللَّيْلِ فَسَبِّحْهُ وَأَدْبَارَ السُّجُودِ﴾

আর তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করুন রাতের একাংশে এবং সালাতের পরেও [১]।

﴿وَاسْتَمِعْ يَوْمَ يُنَادِ الْمُنَادِ مِنْ مَكَانٍ قَرِيبٍ﴾

আর মনোনিবেশসহকারে শুনুন, যেদিন এক ঘোষণাকারী নিকটবর্তী স্থান হতে ডাকবে,

﴿يَوْمَ يَسْمَعُونَ الصَّيْحَةَ بِالْحَقِّ ۚ ذَٰلِكَ يَوْمُ الْخُرُوجِ﴾

সেদিন তারা সত্য সত্যই শুনতে পাবে মহানাদ, সেদিনই বের হবার দিন।

﴿إِنَّا نَحْنُ نُحْيِي وَنُمِيتُ وَإِلَيْنَا الْمَصِيرُ﴾

আমরাই জীবন দান করি এবং আমরাই মৃত্যু ঘটাই, আর সকলের ফিরে আসা আমাদেরই দিকে।

﴿يَوْمَ تَشَقَّقُ الْأَرْضُ عَنْهُمْ سِرَاعًا ۚ ذَٰلِكَ حَشْرٌ عَلَيْنَا يَسِيرٌ﴾

যেদিন তাদের থেকে যমীন বিদীর্ণ হবে এবং লোকেরা ত্ৰস্ত-ব্যস্ত হয়ে ছুটোছুটি করবে, এটা এমন এক সমাবেশ যা আমাদের জন্য অতি সহজ।

﴿نَحْنُ أَعْلَمُ بِمَا يَقُولُونَ ۖ وَمَا أَنْتَ عَلَيْهِمْ بِجَبَّارٍ ۖ فَذَكِّرْ بِالْقُرْآنِ مَنْ يَخَافُ وَعِيدِ﴾

তারা যা বলে তা আমরা ভাল জানি, আর আপনি তাদের উপর জবরদস্তি কারী নন, কাজেই যে আমার শাস্তিকে ভয় করে তাকে উপদেশ দান করুন কুরআনের সাহায্যে।

الترجمات والتفاسير لهذه السورة: