البحث

عبارات مقترحة:

الرءوف

كلمةُ (الرَّؤُوف) في اللغة صيغةُ مبالغة من (الرأفةِ)، وهي أرَقُّ...

الله

أسماء الله الحسنى وصفاته أصل الإيمان، وهي نوع من أنواع التوحيد...

الواسع

كلمة (الواسع) في اللغة اسم فاعل من الفعل (وَسِعَ يَسَع) والمصدر...

আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে মারফু‘ সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, মহান আল্লাহ বলেছেন, “আমার প্রতি বান্দার ধারণা অনুযায়ী আমি তার সঙ্গে আচরণ করি। সে যখনই আমাকে স্মরণ করে তখনই আমি (জানা দেখার মাধ্যমে) তার সঙ্গে আছি। আল্লাহর শপথ, মরুভূমিতে তোমাদের কেউ হারানো পশু পুনরায় ফিরে পাওয়ার পর যে খুশি হয় আল্লাহ তা‘আলা বান্দার তাওবার পর এর থেকেও অধিক খুশি হন। যদি কেউ এক বিঘাত পরিমাণ আমার দিকে এগিয়ে আসে তবে আমি তার প্রতিে একহাত এগিয়ে যাই। যদি কেউ একহাত পরিমাণ আমার দিকে এগিয়ে আসে, তবে আমি পূর্ণ এক বাহু পরিমাণ তার দিকে এগিয়ে যাই। যদি কেউ আমার দিকে হেঁটে আসে তবে আমি তার দিকে দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাই।” মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি (বুখারী ও মুসলিম)। হাদীসের শব্দাবলী সহীহ মুসলিমের একটি বর্ণনার। ইতোপূর্বে এ অধ্যয়ে এ হাদীসের বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। সহীহাইনে আরো বর্ণিত আছে, “সে যখন আমাকে স্মরণ করে তখন আমি তার সাথেই থাকি।” এ বর্ণনায় নূন যোগে এবং ‘হাইসু’র পরিবর্তে ‘হীনা’ শব্দ এসেছে। উভয় বর্ণনার শব্দদ্বয় সহীহ।

شرح الحديث :

আল্লাহ তা‘আলা তাঁর প্রতি বান্দার ধারণা অনুযায়ী তিনি তার সাথে আচরণ করেন। বান্দা যদি আল্লাহর ব্যাপারে ভালো ধারণা করে তাহলে তিনিও তার সাথে ভালো আচরণ করেন। আর বান্দা যদি তাঁর সম্পর্কে মন্দ ধারণা পোষণ করে তাহলে আল্লাহও তার সাথে সেরূপ আচরণ করেন। মুসনাদে ইমাম আহমদে আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, “আমি আমার বান্দার ধারণা অনুসারে তার সাথে আচরণ করি। সে যদি আমার ব্যাপারে ভালো ধারণা করে তবে তার জন্যই, আর সে যদি আমার ব্যাপারে খারাপ ধারণা করে তবে তাও তার জন্য।” আলবানী রহ. ‘সহীহুল জামে‘তে (২/৭৯৫) হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন, হাদীস নং (৪৩১৫)। কিন্তু কখন আল্লাহর সম্পর্কে ভালো ধারণা করা হবে? আল্লাহর সম্পর্কে ভালো ধারণা করা হবে যখন বান্দা এমন কাজ করে যা আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাঁর রহমত লাভের প্রত্যাশাকে অপরিহার্য করে তোলে। ফলে সে সৎ আমল করবে এবং আল্লাহর সম্পর্কে ভালো ধারণা করবে যে, তিনি তার এ আমল কবুল করবেন। পক্ষান্তরে ভালো কাজ না করে তাঁর সম্পর্কে ভালো ধারণা করা মূলত আকাঙ্ক্ষা মাত্র। আর যে ব্যক্তি নিজের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে চলে তারপরও আল্লাহর রহমতের আশা করে, সে তো অপারগ ব্যক্তি মাত্র। আর আল্লাহর নাফরমানীর প্রকাশ ঘটিয়ে তাঁর সম্পর্কে ভালো পাবার আশা করা তো সেসব অক্ষম লোকদের স্বভাব, যাদের এমন কোনো মূলধন নেই যার কাছে তারা ফিরে আসতে পারে। ইবনুল কাইয়্যেম রহ. বলেছেন, ‘এতে সন্দেহ নেই যে, ইহসান তথা সৎকর্মের সাথেই ভালো ধারণা চলতে পারে। কারণ সৎকর্মকারী ব্যক্তিই তার রবের কাছ থেকে তার সৎ ধারণার কারণে আশা করতে পারেন যে তিনি তাকে উত্তম প্রতিদান দিবেন, তাঁর ওয়াদা ভঙ্গ করেন না এবং তিনি তার তাওবা কবুল করবেন। আর বারবার কবীরা গুনাহকারী, যুলুমকারী ও শরী‘আতের বিধান অমান্যকারীকে গুনাহ, যুলুম ও হারামে সম্পৃক্ততা আল্লাহর সম্পর্কে ভালো ধারণা করা থেকে বিরত রাখে। কেননা মনিবের অনুগত্য থেকে বের হয়ে যাওয়া পলায়নকারী গোলাম তার মনিব সম্পর্কে ভালো ধারণা করে না। অন্যায় আচরণ কখনও কারো সম্পর্কে ভালো ধারণাকে অন্তর্ভুক্ত করে না। অন্যায়কারী তার অন্যায় অনুযায়ী আল্লাহ থেকে দূরে থাকে। আল্লাহর সম্পর্কে সর্বাধিক ভালো ধারণাকারী হলেন তারা, যারা তাঁর সবচেয়ে বেশি আনুগত্যকারী। হাসান বসরী রহ. বলেছেন, ‘নিশ্চয় মুমিনগণ তার রবের সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি ভালো ধারণা করে। ফলে সে বেশি পরিমাণে ভালো কাজ করে। আর পাপাচারী তার রবের ব্যাপারে মন্দ ধারণা পোষণ করে। ফলে সে বেশি পাপ করে থাকে।’ অতঃপর তিনি বলেন, বান্দার তাওবায় আল্লাহ সবচেয়ে বেশি খুশি হন। তিনি আরো উল্লেখ করেন, আল্লাহ বান্দার উপর অধিক অনুগ্রহশীল। বান্দা যখন আল্লাহর দিকে এক বিঘত এগিয়ে আসে আল্লাহ তার দিকে একহাত পরিমাণ এগিয়ে আসেন। কেউ একহাত পরিমাণ এগিয়ে আসেন তাহলে তিনি তার দিকে একবাহু পরিমাণ এগিয়ে আসেন। কেউ তার দিকে হেঁটে আসে তিনি তার দিকে দ্রুত এগিয়ে যান। তিনি বান্দার প্রতি অধিক দানশীল ও বান্দার দো‘আ দ্রুত কবুলকারী। এ হাদীসে উল্লিখিত আল্লাহর দ্রুত আসার ব্যাপারে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আত বিশ্বাস করেন, তবে এর ধরন আমরা অবগত নই। তাছাড়া আল্লাহর কাছে আসার ধরনও তাঁর ব্যাপার। এ সম্পর্কে আমাদের কথা বলা উচিৎ নয়। আমরা শুধু এ ব্যাপারে ঈমান আনায়ন করব আর এর ধরন আল্লাহর ওপর সোপর্দ করব। বান্দার সাথে আল্লাহর থাকা দু’ধরনের। বিশেষ অর্থে কাছে থাকা যা আল্লাহর বিজয় ও সাহায্যকে বুঝায়। উপরোক্ত হাদীসে এ অর্থই বুঝানো হয়েছে। আরেকটি সাধারণ অর্থে কাছে থাকা যা আল্লাহর ইলম তথা জ্ঞান ও পরিবেষ্টনকে বুঝায়। এটি আল্লাহর হাকীকী গুণ যা একমাত্র তাঁর জন্যই নির্ধারিত।


ترجمة هذا الحديث متوفرة باللغات التالية