الكبير
كلمة (كبير) في اللغة صفة مشبهة باسم الفاعل، وهي من الكِبَر الذي...
ইবন মাস‘ঊদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদের প্রশ্ন করলেন, তোমাদের মধ্যে এমন ব্যক্তি কে, যে নিজের সম্পদের চেয়ে তার উত্তরাধিকারীর সম্পদকে প্রিয় মনে করে? তারা সবাই জবাব দিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের মধ্যে সবাই তার নিজের সম্পদকে সবচেয়ে বেশি প্রিয় মনে করে। তখন তিনি বললেন, নিশ্চয় মানুষের নিজের সম্পদ তা-ই, যা সে আগে পাঠিয়েছে, আর যা পিছনে ছেড়ে যাবে তা উত্তরাধিকারীর সম্পদ।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবীদেরকে জিজ্ঞেস করলেন, “তোমাদের মধ্যে এমন ব্যক্তি কে, যার কাছে তার উত্তরাধিকারীর সম্পদ নিজের সম্পদের চেয়েও বেশি প্রিয়?” অর্থাৎ তোমাদের মধ্যে এমন কেউ কি আছে, যে তার জীবদ্দশায় নিজের সম্পদের চেয়ে তার মৃত্যুর পরে উত্তরাধিকারীর সম্পদকে বেশি প্রিয় মনে করে? তারা সকলেই উত্তর দিল, আমাদের মধ্যে সবাই তার নিজের সম্পদকে সবচেয়ে বেশি প্রিয় মনে করি। অর্থাৎ এমন কোনো মানুষ নেই, যে নিজের সম্পদের চেয়ে অন্যের সম্পদকে বেশি ভালোবাসে। তার নিজের সম্পদের ওপর রয়েছে সর্বময় কর্তৃত্ব; কেননা ব্যক্তির মালিকনাধীন সম্পদই তার ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষা পূরণের উপায়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “সে অগ্রে যা প্রেরণ করেছে তাই শুধু তার সম্পদ” অর্থাৎ যে সম্পদ ব্যক্তি তার জীবদ্দশায় নিজের জন্য ব্যয় করেছে, হজ, ওয়াকফ, মসজিদ, মাদ্রাসা ও হাসপাতাল তৈরিতে কিংবা নিজের ও তার পরিবার-পরিজনের জন্য যা ব্যয় করেছে, সেসব সম্পদই মূলতঃ ব্যক্তির প্রকৃত সম্পদ, যা সে কিয়ামত দিবসে তার সামনে পাবে। পক্ষান্তরে তার জীবদ্দশায় যা কিছু সঞ্চয় করেছে ও আল্লাহর পথে ব্যয় করতে কৃপণতা করেছে সেগুলো তার উত্তরাধিকারীদের সম্পদ, এতে তার কোনো অংশ নেই। এ হাদীসের সমার্থক আরেকটি হাদীস সহীহ মুসলিমে বর্ণিত আছে। আব্দুল্লাহ ইবন শিখ্খীর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “একবার আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আসলাম। তখন তিনি সূরা তাকাসুর (আলহাকুম আত-তাকাছুর) পাঠ করছিলেন। তিনি বলেন, আদম সন্তানগণ বলে, আমার মাল, আমার মাল। বস্তুত হে আদম সন্তান! তোমার সম্পদ তো তাই যা তুমি খেয়েছ ও শেষ করে দিয়েছে, পরিধান করেছ ও পুরাতন করে ফেলেছ এবং দান করেছ ও অবশিষ্ট রেখেছ।” (মুসলিম, হাদীস নং ২৯৫৮) এ হাদীসের অর্থ এ নয় যে, মানুষ তার সমূদয় সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করে দিবে এবং সে ও তার পরিবার-পরিজন মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াবে; বরং হাদীসের মূল উদ্দেশ্য হলো, যেমনিভাবে মানুষ তার উত্তরাধিকারীদের জন্য সঞ্চয় করবে তেমনি সে পরকালের জন্যও জমা করবে। যেহেতু তার নিজের জন্য ও তার ওপর নির্ভরশীল স্ত্রী, সন্তান ও পিতামাতার জন্য ব্যয় করা তার ওপর অত্যাবশ্যকীয় দায়িত্ব ও কর্তব্য। সে এদের জন্য ব্যয় না করলে গুনাহগার হবে। এ কথার দলীল হলো, আবূ উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “হে আদম সন্তান, তুমি যদি প্রয়োজনাতিরিক্ত সম্পদ আল্লাহর পথে ব্যয় করে ফেল তবে তা তোমার জন্য উত্তম; আর যদি তা তুমি জমা করে রাখ তবে তা তোমার জন্য অকল্যাণকর।” (মুসলিম, হাদীস নং ১০৩৬, ২/৭১৮)