البحث

عبارات مقترحة:

الباطن

هو اسمٌ من أسماء الله الحسنى، يدل على صفة (الباطنيَّةِ)؛ أي إنه...

الحفيظ

الحفظُ في اللغة هو مراعاةُ الشيء، والاعتناءُ به، و(الحفيظ) اسمٌ...

الواسع

كلمة (الواسع) في اللغة اسم فاعل من الفعل (وَسِعَ يَسَع) والمصدر...

বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে স্রষ্টাকে ভুলে যাওয়া

البنغالية - বাংলা

المؤلف
القسم مقالات
النوع نصي
اللغة البنغالية - বাংলা
المفردات التوحيد
দার্শনিকভাবে দেখলে, বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে আল্লাহকে ভুলে যাওয়া, স্রষ্টাকে ভুলে যাওয়া৷ যিনি আমাকে বানিয়েছেন তাঁকে ভুলে যাওয়া৷ বক্ষ্যমান প্রবন্ধে এ বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে।

التفاصيل

  বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে স্রষ্টাকে ভুলে যাওয়াأكبر مشكلة في العالم المعاصر نسيان الخالق লেখক: শাহ আব্দুল হান্নানتأليف: شاه عبد الحنان  বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে স্রষ্টাকে ভুলে যাওয়াদার্শনিকভাবে দেখলে, বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে আল্লাহকে ভুলে যাওয়া, স্রষ্টাকে ভুলে যাওয়া৷ যিনি আমাকে বানিয়েছেন তাঁকে ভুলে যাওয়া৷ আল্লাহ নিজেই বলেছেন: "ইয়া আইয়্যুহাল ইনসানু মা গার্রাকা বি রাব্বিকাল কারিম" অর্থাৎ, হে মানুষ কিসে তোমাকে তোমার মহিমান্বিত রব সম্পর্কে উদাসীন করল? (৮২:৬ ) সত্যিকার অর্থেই বেশীর ভাগ মানুষ বাস্তবে স্রষ্টাকে ভুলে গিয়েছে৷ ইউরোপ-আমেরিকায় নাস্তিকের সংখ্যা অনেক৷ রাশিয়া পূর্বে অফিসিয়ালি নাস্তিক ছিল৷ এখনও সেখানে নাস্তিকতার হার কম নয়, বরং অনেক হবে৷ অন্যদিকে যারা বিশ্বাসী বলে দাবী করে তাদের মধ্যেও অনেকে সন্দেহবাদী (skeptic)৷ অর্থাৎ বলবে না যে স্রষ্টা নেই, কিন্তু বাস্তবে স্রষ্টাকে স্মরণ করবে না বা তার আদেশ মেনে চলবে না৷ স্রষ্টাকে মেনে চলবে এরকম লোকের সংখ্যা খুব কম৷ খ্রিষ্টানদের মধ্যে যারা স্রষ্টাকে বিশ্বাস করে , তাদের মধ্যে স্রষ্টার কার্যকর আনুগত্য কম৷ সে তুলনায় মুসলমানদের অবস্থা ভালো৷ এখানে নাস্তিক নেই বললেই চলে এবং যারা বিশ্বাসী তারা কোন না কোন পর্যায়ে আমল করে৷ যারা নিজেদেরকে সেক্যুলার বলে দাবী করে , তাদেরও বেশীরভাগ একটা নির্দিষ্ট পর্যায় পর্যন্ত আমল করে৷ তারাও নামাজ পড়ে, ইফতার করে, সাহরী খায়, হালাল-হারাম দেখে চলে৷ তারাও কুরবানী, হজ্জ, ওমরা ও ঈদ পালন করে৷ সুতরাং মুসলমানদের মধ্যে ইসলামের অনুশীলন তুলনামূলকভাবে ভাল৷ স্রষ্টাকে ভুলে যাওয়ার ফলে দু'টি সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। একটি হলো বস্তুবাদ ও নাস্তিকতা। আরেকটি হলো গোড়া সেক্যুলারিজম - সেটিও স্রষ্টাকে প্রায় অস্বীকার করার কাছাকাছি একটি অবস্থা। বিশ্ব সংকটের মূলে কাজ করছে এ দু'টি - একদিকে বস্তুবাদ ও নাস্তিকতা এবং অন্যদিকে সেক্যুলারিজম। স্রষ্টাকে ভুলে যাওয়ার প্রভাব শিক্ষা ব্যবস্থার উপরও পড়েছে। শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে সেক্যুলারিজমের উপর দাড়িয়ে আছে। বর্তমান বিজ্ঞান শিক্ষাতে রয়েছে সেক্যুলারিজমের গভীর ছাপ। ইউরোপের পন্ডিতরা এমনকি বর্তমানে মুসলমান বিজ্ঞানীরাও তাদের বইগুলো 'বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম' দিয়ে শুরু করেন না। কিন্তু মুসলমানরা যখন বিজ্ঞানে উন্নতি করল (চীন ও ভারত থেকে গ্রহন করে), তখন তারা অনেক দিকে বিজ্ঞানের বিস্তার ঘটাল। সেসময় ঐসব মুসলমানরা তাদের বিজ্ঞানের প্রত্যেক বইগুলো 'বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম' দিয়ে শুরু করতেন। তারা স্রষ্টায় বিশ্বাসী ছিলেন গভীরভাবে। কিন্তু ইউরোপীয় বিজ্ঞানিরা বিশ্বাসী না হওয়ায় (অথবা সেক্যুলার হওয়ায় কিংবা স্রষ্টায় বিশ্বাস করা তাদের কাছে একটি লজ্জার বিষয় হওয়ায়), তারা স্রষ্টার কথা উল্লেখ করেননা। আমাদের মুসলিম বিজ্ঞানীরা এটি এখন লিখতে পারেন। কিন্তু তারাও লিখছেননা। এখন না লেখা রেওয়াজ হয়ে গেছে। অথচ আগে লেখাটাই রীতি ছিল। এখন বিজ্ঞানের বইগুলোতে আল্লাহ বা গড শব্দের উল্লেখ নেই। স্রষ্টা (creator) শব্দটি লেখা হয় না। এটি একটি অদ্ভুত ব্যাপার। কোথাও কোথাও প্রকৃতি (Nature) শব্দের উল্লেখ আছে। কিন্তু এই প্রকৃতি কি সেটি একেবারেই স্পষ্ট নয়। তারা একবারও ভাবেনা যে, এসব প্রাকৃতিক আইন আছে কিভাবে, আইন প্রণেতা ছাড়া কি কোন আইন হয়? তারা নাকি খুব যুক্তিবাদী, কিন্তু আমি তো কোন যুক্তি দেখছি না। আধুনিক বিজ্ঞানের অনেক ভালো দিক আছে, অনেক অবদান আছে আমরা মানি। কিন্তু এর পেছনে কাজ করছে এমন একটি মন যেটি স্রষ্টার প্রশ্নে, আল্লাহ তায়ালার ব্যাপারে সন্দেহ-সংশয়বাদীতায় ভুগছে। স্রষ্টাকে স্পষ্ট স্বীকৃতি দিচ্ছে না। আল্লাহর নাম উল্লেখ করছে না। এটি উল্লেখ করা সভ্যতা বিরোধী মনে করছে। এটি একটি পশ্চাৎপদ ব্যাপার মনে করছে। এই যে ধারণা এটা আমাদের কালচারকে খারাপ করে ফেলছে। আমাদের কালচারে সংশয়বাদ ও নাস্তিকতার প্রভাব পড়ছে। সমাজবিজ্ঞানেরও একই রকম অবস্থা। সমাজতত্ত্ব ধরেই নেবে যে ধর্ম একটি মানব সৃষ্ট বিষয়। অথচ তারা এভাবে দেখাতে পারত যে, স্রষ্টাই আমাদের সৃষ্টি করেছেন। আমাদের একটি সামাজিক প্রবণতা বা সামাজিক মন দিয়েছেন। স্রষ্টার সার্বিক পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই আমাদের মধ্যে সমাজবদ্ধ হবার মানসিকতা রয়েছে। এজন্য আমরা একতাবদ্ধ হই এবং সমাজ গঠন করি। শিক্ষা ব্যবস্থার অন্যান্য সেক্টরেরও একই অবস্থা। যেমন নৃবিজ্ঞানও স্বীকার করছেনা যে , মানুষকে আল্লাহর সৃষ্টি করেছেন। এটিকে তারা একেবারেই বাদ দিয়ে দিচ্ছে। নৃবিজ্ঞান মানব সৃষ্টির ইতিহাস বের করার চেষ্টা করছে মাটি খুড়ে বের করা হাড় এবং অন্যান্য নৃতাত্ত্বিক চিহ্ন থেকে। এসব থেকে তারা যে ইতিহাস লিখছে তাতে তারা বলছে, মানুষ এমনি এমনিই হয়েছে; কোন স্রষ্টা নেই। এখানে উল্লেখ করতে চাই যে, দারিদ্র বিশ্বের একটি বড় সংকট, দারিদ্রের জন্য মানুষের একটি বিরাট অংশ ভাল হতে পারেনা। এ সংকটের মূলেও রয়েছে ঐ আল্লাহকে না মানা, বস্তুবাদ এবং সেক্যুলারিজম। মানুষ বস্তুবাদী হয়ে গেছে। গরীবের জন্য, দারিদ্র দূর করার জন্য কাজ করার প্রয়োজনীয়তা সে উপলব্ধি করছেনা। অনেকেই দারিদ্র দূর করার জন্য ওয়াদা করে থাকে। আসলে তারা ওয়াদা করার জন্য ওয়াদা করে, কথা বলার জন্য বলে। সত্যিই কি কার্যকরভাবে তারা এগুলো চায়? বিশেষ করে দেশের পুঁজিবাদীরা এগুলো চায়না বলেই মনে হয়। কারণ পুঁজিবাদের তত্ত্বে গরীবের কথা নেই। প্রফিটের কথা আছে, মুক্ত বাজারের কথা আছে। সেখানে সরকারী হস্তক্ষেপ না করার কথা বলা হয়েছে। বিভিন্ন ব্যবস্থা নেয়ার মাধ্যমে বাজারের বিকৃতি (Market distortion) দূর করার কথা পুঁজিবাদী তত্ত্বের কোথাও নেই। গরীবের ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে হবে এটা পুঁজিবাদের কোথাও বলা নেই। যদিও এটা এখন পুঁজিবাদী দেশে করা হচ্ছে। কিন্তু এ ব্যবস্থা তারা পুঁজিবাদের কাঠামো থেকে বের হয়ে এসেই নিচ্ছে । কলোনিয়ালিজম এবং ইম্পেরিয়ালিজমও এসেছে বস্তুবাদ থেকেই। নিজের ভোগ ও জাতির ভোগের প্রেরণা থেকেই এসবের উৎপত্তি। এসবকিছুর মূল উদ্দেশ্য মানুষকে শোষণ (exploit) করা। এই যে বস্তুবাদী স্বার্থপরতা এবং পুঁজিবাদ - এসব পরস্পর বিচ্ছিন্ন নয়। এসবকিছু মিলে মানুষকে দায়িত্বহীন বানিয়েছে , তাকে ভোগবাদী করে তুলেছে। দায়িত্বশীল কাদের বলা যেতে পারে? যারা আল্লাহকে ভয় করে এবং দুনিয়াকে এক্সপ্লয়েট করেনা। সুতরাং সকল সমস্যার মূল কারণ যদি বলতে হয়, আমি বলব স্রষ্টাকে ভুলে যাওয়া। এজন্য যুগে যুগে নবী-রাসূলরা আহবান করেছেন আল্লাহকে মানো এবং বল, 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ' - আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই। এ সমস্যার সমাধান হচ্ছে মানুষের মধ্যে স্রষ্টার প্রতি বিশ্বাস ফিরিয়ে আনা। মুসলিমদের এমনকি অমুসলিমদের জন্যও বলবো, যে কোন ধর্মের প্রতি বিশ্বাস নাস্তিকতা থেকে ভাল। কারণ প্রত্যেক ধর্মের একটা এথিক্স বা নীতিবোধ আছে। নাস্তিকতার কোন নীতিবোধ নেই। সে তো নিজেকে সম্পূর্ণ স্বাধীন মনে করে। সে বিশ্বাস করে তার কোন বিচার হবে না, তার কোন জবাবদিহিতা নেই; সুতরাং দুনিয়ায় যা ইচ্ছা সে করতে পারে। এ ধরণের লোক সমাজের জন্য ভয়ংকর। এজন্য সবার মধ্যে স্রষ্টার প্রতি বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে হবে। আল্লাহকে চেনাতে হবে যতদূব সম্ভব। সঠিক শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। এভাবেই সমাজ তথা বিশ্ব থেকে স্বার্থপরতা দূর হতে পারে, মূল রোগ তথা মূল সমস্যা দূর হতে পারে। সমাপ্ত