الرب
كلمة (الرب) في اللغة تعود إلى معنى التربية وهي الإنشاء...
আবূ সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন রাতে জাগ্রত হতেন, তখন তাকবীর বলতেন। তারপর তিনি বলতেন, “হে আল্লাহ! আপনার পবিত্রতা ও আপনার প্রশংসা এবং আপনার নাম বড়ই বরকতময়, আপনার প্রতিপত্তি অতি উচ্চ। আর আপনি ব্যতীত অন্য কোনো হক্ব ইলাহ্ নেই”। তারপর তিনি তিনবার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলতেন। তারপর তিনি আল্লাহু আকবর কাবীরান তিনবার বলতেন। তারপর এ দো‘আ বলতেন “আমি শয়তান থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাই। আশ্রয় চাই তার ফুঁ তথা দম্ভ-অহংকার থেকে, তার থুতু তথা কবিতা থেকে ও তার চাপ তথা পাগলামি থেকে” তারপর সে কিরাত পড়ত।
হাদীসটির অর্থ: “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন রাতে জাগ্রত হতেন, তাকবীর বলতেন”। অর্থাৎ, তাকবীরাতুল ইহরাম আল্লাহু আকবর বলতেন। এটি এমন একটি রুকন যা ছাড়া সালাত শুদ্ধ হয় না। তারপর তিনি বলতেন, “হে আল্লাহ! আপনার পবিত্রতা” অর্থাৎ যা আপনার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয় তা থেকে আমি আপনাকে পবিত্র ঘোষণা করছি। হে আমার রব, সকল দোষত্রুটি ও দুর্বলতা থেকে যে ধরনের পবিত্র হওয়া আপনার হক তা আমি ঘোষণা করছি। “আপনার প্রশংসাসহ” অর্থাৎ এই তাওফীক দেওয়ার ওপর আল্লাহর প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা। যদি আপনার তাওফীক ও হিদায়াত না হতো তাহলে আপনার পবিত্রতা বর্ণনা করতে পারতাম না। এটি বান্দার পক্ষ থেকে আল্লাহর অনুগ্রহ এবং তার তাওফীক ছাড়া কোন কিছু করার অক্ষমতার স্বীকারোক্তি। “আপনার নাম বড়ই বরকতময়” এটি বরকত থেকে। আর তা হলো, অধিক ও প্রসস্ত। অর্থাৎ আসমান ও যমীনে তার বরকতসমূহ অধিক, পরিপূর্ণ ও প্রসস্থ হলো। এ গুলো সবই আল্লাহ তা‘আলার কল্যাণের প্রতি বিশেষিত হওয়ার প্রতি ইঙ্গিত। “আর আপনার প্রতিপত্তি অতি উচ্চ”। জাদ্দ অর্থ,মহত্ব। অর্থাৎ, তোমার আজমত মহান ও উঁচা। আর তোমার মহত্ব সবকিছুর মহত্বের ওপর আর তোমার শান সবকিছুর শানের উর্ধ্বে। আর তোমার রাজত্বের ক্ষমতা প্রতিটি রাজত্বের উপরে। সুতরাং রুবুবিয়্যাত, উলুহিয়্যাত এবং মুলুকিয়্যাতের মধ্যে অথবা তার নাম ও সিফাতসমূহের কোন নাম ও সিফাতে তার সাথে কেউ অংশিদার হওয়া থেকে তিনি উর্ধ্বে। এ কারণেই এ কথা বলার পর তিনি বলেন, তিনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই। তুমি ছাড়া সত্যিকার কোন উপাস্য নেই। তুমিই ইবাদাতের উপযুক্ত। তুমি একক তুমি তোমার সম্পর্কে যে সব প্রশংসিত গুণদ্বারা গুণাগুণ করেছো এবং যে সব মহান নি‘আমতসমূহ দ্বারা তুমি অনুগ্রহ করেছ তাতে তোমার সাথে কোন শরীক নেই। এ শুরুর দো‘আতে রয়েছে আল্লাহর ওপর প্রশংসা এবং যা তার সাথে প্রযোজ্য নয় তা থেকে তার পবিত্রতা ঘোষণা। আর আল্লাহ তাবারাকা ও তা‘আলা যাবতীয় সব দোষ ও দুর্বলতা থেকে পবিত্র। এটি হাদীসে বর্ণিত এ অধ্যায়ের দো‘আসমূহের একটি দো’আ। উত্তম হলো সুন্নাতের দলীলসমূহের সব দলীলকে আমলে একত্র করা, কোনটিকে না ছেড়ে কখনো এ দো‘আ পাঠ করা আবার কখনো অন্য দো‘আ পাঠ করা। আর এ বিষয়ের বাক্যসমূহ হতে একটি বাক্য লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু তিনবার বলা। অর্থাৎ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ তিনবার বলবে। আর লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ অর্থ, আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোনো হক্ব ইলাহ্ নেই। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “এটি এ জন্য যে, আল্লাহ হক। আর তাকে বাদ দিয়ে যাকে তোমরা ডাকো তাই বাতিল”। [সূরা হজ, আয়াত: ৬২] “তারপর তিনি আল্লাহু আকবর কাবীরান তিনবার বলতেন”। অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা সবকিছু হতে বড়। তারপর সালাত শুরু করার পর বিতাড়িত শয়তান থেকে এ দো‘আ বলে “আমি শয়তান থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাই” আশ্রয় চাইতেন। আর আউযু বিল্লাহিস সামীউল আলীম। এ দো‘আর অর্থ: আল্লাহ যিনি সর্বশ্রেতা ও প্রজ্ঞাবান তার মাধ্যমে আমরা আশ্রয়, সুরক্ষা ও সামর্থ্য চাই। “শয়তান থেকে” বিতাড়িত, হটকারী—মানুষ ও জীন শয়তানগুলো থেকে। “বিতাড়িত” প্রত্যাখ্যাত ও নিক্ষিপ্ত। আল্লাহর রহমত থেকে দূরে নিক্ষিপ্ত। দুনিয়া ও দীনের বিষয়ে যা আমার ক্ষতি করে তা দিয়ে তুমি তাকে আমার ওপর চাপিয়ে দিও না। দুনিয়া ও দীনের বিষয়ে যা আমার কল্যাণে আসবে তা করতে সে যেন আমাকে বিরত না রাখে। যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে তার দুশমন যে তাকে তার রব থেকে বিচ্ছিন্ন করতে চায় এবং অন্যায় ও ধবংসের অতল গভীরে নিক্ষেপ করতে চায় তার থেকে আশ্রয় চায়, সে শক্তিশালী খুটির নিকট আশ্রয় নিল এবং আল্লাহর শক্তির আশ্রয় নিল এবং তার রশিকে মজবুত করে ধরল। “আশ্রয় চাই তার ফুঁ থেকে”। আর তা হলো মাতলামী ও দিশাহারা হওয়া যা কোন মানুষের হয়ে থাকে। কারণ, শয়তান কখনো কখনো মানুষকে পাগল করে ফেলে তাই তা থেকে আশ্রয় চাওয়ার বিষয়টির ইসলামে প্রচলন রাখা হয়েছে। তথা দম্ভ-অহংকার থেকে। কারণ, শয়তান তার কুমন্ত্রণার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে ফুঁ দেয়। ফলে সে তার নিজের চোখে নিজেকে বড় করে দেখে এবং অন্যদেরকে সে ছোট করে দেখে। যার ফলে তার বড়াই ও অহংকার বৃদ্ধি পায়। তার থুতু তথা কবিতা থেকে ও তার চাপ তথা পাগলামি থেকে” আর তা হলো যাদু-যাদুর অনিষ্ঠতা। কারণ, ঘিরায় ফু দানকারিনীরা হলো যাদুকর যারা সুতায় ঘিরা লাগাতো এবং প্রতিটি ঘিরায় ফুঁ দিত, যাতে তারা যে যাদুর ইচ্ছা করত তা যেন সংঘটিত হয়। তারপর সে কিরাত পড়ত। আর তার প্রথম হলো সূরা ফাতিহা।