الرقيب
كلمة (الرقيب) في اللغة صفة مشبهة على وزن (فعيل) بمعنى (فاعل) أي:...
উসাইর ইবন আমর মতান্তরে ইবন জাবের থেকে বর্ণিত, উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু-এর নিকট যখনই ইয়ামান থেকে সহযোগী যোদ্ধারা আসতেন, তখনই তিনি তাঁদেরকে জিজ্ঞেস করতেন, ‘তোমাদের মধ্যে কি উয়াইস ইবন আমের আছে?’ শেষ পর্যন্ত (এক দলের সঙ্গে) উওয়াইস-রাদিয়াল্লাহু আনহু- (মদীনা) এলেন। অতঃপর তিনি তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কি উওয়াইস ইবন আমের?’ তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ।’ উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, ‘মুরাদ (পরিবারের) এবং কারন (গোত্রের)?’ তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ।’ তিনি (পুনরায়) জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমার শরীরে শ্বেত রোগ ছিল, তা এক দিরহাম সম জায়গা ব্যতীত (সবই) দূর হয়ে গেছে?’ উয়াইস বললেন, ‘হ্যাঁ।’ তিনি বললেন, ‘তোমার মা আছে?’ উয়াইস বললেন, ‘হ্যাঁ।’ তিনি বললেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, “মুরাদ (পরিবারের) এবং কারন (গোত্রের) উয়াইস ইবন আমের ইয়ামানের সহযোগী ফৌজের সঙ্গে তোমাদের কাছে আসবে। তার দেহে ধবল দাগ আছে, যা এক দিরহাম সম স্থান ছাড়া সবই ভাল হয়ে গেছে। সে তার মায়ের সাথে সদাচারী হবে। সে যদি আল্লাহর প্রতি কসম খায়, তবে আল্লাহ তা পূরণ ক’রে দেবেন। সুতরাং (হে উমার!) তুমি যদি নিজের জন্য তাকে দিয়ে ক্ষমা প্রার্থনার দুআ করাতে পার, তাহলে অবশ্যই করায়ো।” তিনি (উমারের সাথে সাক্ষাতকারী কূফার লোকটি) উয়াইসের নিকট এসে বলল, আমার জন্য ক্ষমা প্রার্থন কর। তিনি বললেন, ‘তুমি এক শুভযাত্রা থেকে নব আগমন করেছ। অতএব তুমি আমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর।’ অতঃপর তিনি বললেন, ‘তুমি উমারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছ?’ কূফার লোকটি বলল, ‘হ্যাঁ।’ সুতরাং উয়াইস তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করলেন। (এসব শুনে) লোকেরা (উয়াইসের) মর্যাদা জেনে নিল। সুতরাং তিনি তার সামনের দিকে (অন্যত্র) চলে গেলেন। অন্য এক বর্ণনায় উসাইর ইবন জাবের রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকেই বর্ণিত, কুফার কিছু লোক উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু-এর নিকট এল। তাদের মধ্যে একটি লোক ছিল, সে উয়াইসের সাথে উপহাস করত। উমার জিজ্ঞেস করলেন, ‘এখানে কারন গোত্রের কেউ আছে কি?’ অতঃপর ঐ ব্যক্তি এল। উমার বললেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “তোমাদের নিকট ইয়ামান থেকে উয়াইস নামক একটি লোক আসবে। সে ইয়ামানে কেবলমাত্র তার মা-কে রেখে আসবে। তার দেহে ধবল রোগ ছিল। সে আল্লাহর কাছে দুআ করলে আল্লাহ তা এক দীনার অথবা এক দিরহাম সম স্থান ব্যতীত সবই দূর ক’রে দিয়েছেন। সুতরাং তোমাদের কারো যদি তার সাথে সাক্ষাৎ হয়, তাহলে সে যেন তোমাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে।” তারই অন্য এক বর্ণনায় আছে, উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, ‘আমি আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট শুনেছি, তিনি বলেছেন, “সর্বশ্রেষ্ঠ তাবেঈন হল এক ব্যক্তি, যাকে উওয়াইস বলা হয়। তার মা আছে। তার ধবল রোগ ছিল। তোমরা তাকে আদেশ করো, সে যেন তোমাদের জন্য (আল্লাহর নিকট) ক্ষমা প্রার্থনা করে।”
উমার ইবনুল খাত্তাবের নিকট যখনই ইয়ামান থেকে সহযোগী যোদ্ধাদের জামা‘আত আসত যারা ইসলামী সৈন্যদেরকে যুদ্ধে সহযোগীতা করত, তখনই তিনি তাঁদেরকে জিজ্ঞেস করতেন, ‘তোমাদের মধ্যে কি উয়াইস ইবনে আমের আছে?’ শেষ পর্যন্ত এক দলের সঙ্গে উয়াইস রাহিমাহুল্লাহ আসলেন। তখন উমার তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কি উয়াইস ইবন আমের?’ তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ।’ উমার বললেন, ‘মুরাদ (পরিবারের) এবং কারন (গোত্রের)?’ উয়াইস বললেন, ‘হ্যাঁ।’ তিনি (পুনরায়) জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমার শরীরে শ্বেত রোগ ছিল, তা এক দিরহাম সমান জায়গা ব্যতীত (সবই) দূর হয়ে গেছে?’ উয়াইস বললেন, ‘হ্যাঁ।’ তিনি বললেন, ‘তোমার মা আছে?’ উয়াইস বললেন, ‘হ্যাঁ।’ উমার বললেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, “মুরাদ (পরিবারের) এবং কারন(গোত্রের) উয়াইস ইবনে আমের ইয়ামানের সহযোগী ফৌজের সঙ্গে তোমাদের কাছে আসবে। তার শ্বেত রোগ ছিল। আল্লাহ শুধু এক দিরহাম পরিমাণ জায়গা ছাড়া বাকি সব আরোগ্য দিয়েছেন। তার মা আছে। আর সে তার মায়ের সাথে সদাচারী। সে যদি কোনো বস্তু হাসিল করার জন্যে আল্লাহর প্রতি কসম খায়, তবে আল্লাহ তাকে সেই বস্তু দিয়ে তার কসম পূরণ ক’রে দেবেন। সুতরাং (হে উমার!) তুমি যদি নিজের জন্য তাকে দিয়ে ক্ষমা প্রার্থনার দুআ করাতে পার, তাহলে অবশ্যই করায়ো।” এ দ্বারা উমারের ওপর তার মর্যাদা অধিক হওয়া এবং উমার ক্ষমা প্রাপ্ত নয় এ কথা বুঝা যায় না। কারণ, এ বিষয়টি সবার কাছে একমত যে, উমার তার থেকে উত্তম। কারণ, সে হলো তাবেঈ আর উমার হলো সাহাবী। আর সাহাবী তাবেঈ থেকে উত্তম। তবে এখানে আলোচ্য বিষয় হলো, এ কথা সংবাদ দেওয়া যে, উয়াইস তাদেরই একজন যার দো‘আ কবুল হয়। আর উমারের প্রতি নির্দেশনা হলো কল্যাণমুলক কর্ম বাড়ানো এবং যার দো‘আ কবুলের আশা করা হয়, তার থেকে দো‘আ গ্রহণের সুযোগ নেওয়া। এটি এমনই যেমনটি আমাদেরকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জন্য দো‘আ করতে, ওসীলা চাইতে এবং তার ওপর দরুদ পড়তে নির্দেশ দিয়েছেন যদিও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আদম সন্তানদের মধ্যে সর্ব উত্তম। তারপর উমার তাকে তার জন্য ক্ষমা চাইতে বললে, তিনি তার জন্য ক্ষমা চাইলেন। তারপর উমার তাকে বলল, সে জায়গা কোনটি যেদিকে আপনি যাবেন? বলল, কূফা। উমার বললেন, আমি তার আমীরের নিকট লিখে দেব যাতে মুসলিমদের বাইতুল মাল থেকে এ পরিমাণ দেয় যা আপনার যথেষ্ট হয়। উয়াইস বললেন, সাধারণ ও গরীব মানুষদের মধ্যে বসবাস করা আমার নিকট অধিক প্রিয়। পরবর্তী বছর কূফাবাসীদের সম্মানী লোকদের থেকে একজন লোক হজ করতে এলে উমার তার সাথে সাক্ষাৎ করে উয়াইস সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে বলে, তাকে এবং তার ঘরকে আমি জীর্ণশুন্য অবস্থায় রেখে আসছি। তার ঘরের জিনিষপত্র খুবই নগন্য। উমার বলেলেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, “মুরাদ (পরিবারের) এবং কারন(গোত্রের) উয়াইস ইবনে আমের সৈন্যদের সাথে ইয়ামান থেকে তোমাদের কাছে আসবে। তার শ্বেত রোগ ছিল। আল্লাহ শুধু এক দিরহাম পরিমাণ জায়গা ছাড়া বাকি সব আরোগ্য দিয়েছেন। তার মা আছে। আর সে তার মায়ের সাথে সদাচারী। সে যদি আল্লাহর প্রতি কসম খায়, তবে আল্লাহ তা পূরণ ক’রে দেবেন। সুতরাং (হে উমার!) তুমি যদি নিজের জন্য তাকে দিয়ে ক্ষমা প্রার্থনার দুআ করাতে পার, তাহলে অবশ্যই করায়ো।” লোকটি উয়াইসের নিকট এসে বলল, আমার জন্য ক্ষমা প্রার্থণা কর। তখন উয়াইস বলল, ‘তুমি এক শুভযাত্রা থেকে নব আগমন করেছ। অতএব তুমি আমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর।’ উয়াইস বুঝতে পারলো যে, অবশ্যই সে উমারের সাথে সাক্ষাৎ করেছে। তাই সে বলল, ‘তুমি উমারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছ?’ সে বলল, ‘হ্যাঁ।’ সুতরাং উয়াইস তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করলেন। (এসব শুনে) লোকেরা (উয়াইসের) মর্যাদা জেনে নিল। তাই তারা তার প্রতি ঝুকলো এবং সে কূফা থেকে বের হয়ে অন্য জায়গায় চলে গেল, যাতে লোকেরা তাকে চিনে না।