المحيط
كلمة (المحيط) في اللغة اسم فاعل من الفعل أحاطَ ومضارعه يُحيط،...
আবূ যার গিফারী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সুমহান প্রভূ থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি (আল্লাহ) বলেন, “হে আমার বান্দারা! আমি অত্যাচারকে আমার নিজের জন্য হারাম করে দিয়েছি এবং আমি তা তোমাদের মাঝেও হারাম করলাম। সুতরাং তোমরাও একে অপরের প্রতি অত্যাচার করো না। হে আমার বান্দারা! তোমরা সকলেই পথভ্রষ্ট; কিন্তু সে নয় যাকে আমি সঠিক পথ দেখিয়েছি। অতএব, তোমরা আমার নিকট সঠিক পথ চাও আমি তোমাদেরকে সঠিক পথ দেখাব। হে আমার বান্দারা! তোমরা সকলেই ক্ষুধার্ত; কিন্তু সে নয় যাকে আমি খাবার দিই। সুতরাং তোমরা আমার কাছে খাবার চাও, আমি তোমাদেরকে খাবার দেব। হে আমার বান্দারা! তোমরা সকলেই বস্ত্রহীন; কিন্তু সে নয় যাকে আমি বস্ত্র দান করেছি। সুতরাং তোমরা আমার কাছে বস্ত্র চাও, আমি তোমাদেরকে বস্ত্রদান করব। হে আমার বান্দারা! তোমরা দিন-রাত পাপ করে থাক, আর আমি সমস্ত পাপ ক্ষমা করে থাকি। সুতরাং তোমরা আমার কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা কর, আমি তোমাদেরকে ক্ষমা করে দেব। হে আমার বান্দারা! তোমরা কখনো আমার অপকার করতে পারবে না এবং কখনো আমার উপকারও করতে পারবে না। হে আমার বান্দারা! যদি তোমাদের প্রথম ও শেষ মানুষ ও জ্বিন থেকে সকলে তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় একজন পরহেযগার ব্যক্তির হৃদয়ের মত হৃদয়বান হয়ে যায়, তাহলে এটা আমার রাজত্বের কোন কিছু বৃদ্ধি করতে পারবে না। হে আমার বান্দারা! যদি তোমাদের প্রথম ও শেষ মানুষ ও জ্বিন থেকে সকলেই তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় একজন পাপীর হৃদয়ের মত হৃদয়ের অধিকারী হয়ে যায়, তাহলে এটা আমার রাজত্বের কোন কিছুই কমাতে পারবে না। হে আমার বান্দারা! যদি তোমাদের প্রথম প্রজন্ম ও শেষ প্রজন্ম তোমাদের মানুষ ও জ্বিন সকলেই একটি খোলা ময়দানে একত্রিত হয়ে আমার কাছে প্রার্থনা করে, আর আমি তাদের প্রত্যেককে তার প্রার্থিত জিনিস দান করি, তাহলে (এ দান) আমার কাছে যে ভান্ডার আছে, তা হতে ততটাই কম করতে পারবে, যতটা সূঁচ কোন সমুদ্রে ডুবালে তার পানি কমিয়ে থাকে। হে আমার বান্দারা! আমি তোমাদের কর্মসমূহ তোমাদের জন্য গুণে রাখছি। অতঃপর আমি তোমাদেরকে তার পূর্ণ বিনিময় দেব। সুতরাং যে কল্যাণ পাবে, সে আল্লাহর প্রশংসা করুক। আর যে ব্যক্তি অন্য কিছু (অর্থাৎ অকল্যাণ) পাবে, সে যেন নিজেকেই তিরস্কার করে।”
এ কুদসী হাদীসটি দীনের মূলনীতি, শাখা-প্রশাখা ও শিষ্টাচার বিষয়ে অনেক ফায়দা অন্তর্ভুক্ত করেছে, যেমন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা স্বীয় দয়া ও অনুগ্রহে নিজ কর্তৃক বান্দাদের ওপর যুলম করাকে হারাম করেছেন। অনুরূপভাবে তাঁর সৃষ্টির ভেতরও যুলুমকে হারাম করেছেন, সুতরাং কেউ কারো ওপর যুলম করবে না। আর সকল মাখলুক সঠিক পথ থেকে ভ্রষ্ট; তবে আল্লাহ যাকে সঠিক পথ দেখিয়েছেন ও তাওফীক দিয়েছেন। আর যে আল্লাহর নিকট সঠিক পথ চায় আল্লাহ তাকে তাওফীক দেন ও সঠিক পথ দেখান। সকল সৃষ্টিজীব ফকির ও আল্লাহর মুখাপেক্ষী। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে চায় আল্লাহ তার প্রয়োজন পূরণ করেন এবং তার জন্য যথেষ্ট করে দেন। তারা দিন-রাত পাপ করে, কিন্তু আল্লাহ তা গোপন করেন এবং বান্দা ক্ষমা চাইলে তাকে ক্ষমা করে দেন। তারা তাদের কথা ও কাজের মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলার অপকার অথবা উপকার করতে যতই চেষ্টা করুক সক্ষম হবে না। যদি তারা সবচেয়ে পরহেযগার ব্যক্তির হৃদয়ের মতো হৃদয়বান হয়ে যায় অথবা তারা সবচেয়ে পাপীর হৃদয়ের মতো হৃদয়ের অধিকারী হয়ে যায়, তাহলে তাদের পরহেযগারী আল্লাহর রাজত্বের কোনো বৃদ্ধি করবে না এবং তাদের পাপসমূহ তাঁর রাজত্বের কোনো হ্রাস করবে না। কারণ, তারা দুর্বল ও নিঃস্ব; সর্বাবস্থায়, সবসময় ও সর্বস্থানে তারা আল্লাহর মুখাপেক্ষী। যদি তারা সকলে একটি খোলা ময়দানে একত্রিত হয়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে, আর আল্লাহ তাদের প্রত্যেককে তার প্রার্থিত জিনিস দান করেন, তাহলে (এ দান) তাঁর কাছে যে ভাণ্ডার আছে, তা থেকে কোনো কমতি করবে না। কেননা আল্লাহ তা‘আলার ভাণ্ডার পরিপূর্ণ, দিন-রাত অনবরত ব্যয় তা কমায় না। আর আল্লাহ বান্দাদের কর্মসমূহ সংরক্ষণ করছেন এবং যা তাদের জন্য ভালো ও যা তাদের জন্য মন্দ তা গুণে রাখছেন। অতঃপর কিয়ামতের দিন তা তাদেরকে পূর্ণ বিনিময় দিবেন। সুতরাং যে তার প্রতিদান হিসেবে কল্যাণ প্রাপ্ত হবে, সে যেন আল্লাহর আনুগত্যে প্রশংসা করে। আর যে ব্যক্তি প্রতিদান হিসেবে অন্য কিছু (অর্থাৎ অকল্যাণ) পাবে, সে যেন নিজেকেই তিরস্কার করে।