الحفي
كلمةُ (الحَفِيِّ) في اللغة هي صفةٌ من الحفاوة، وهي الاهتمامُ...
আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: “আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিয়ে বিকালের এক সালাত আদায় করলেন। ইব্নু সীরীন বলেন আবূ হুরাইরাহ্ সে সালাতের নাম বলেছিলেন, কিন্তু আমি তা ভুলে গেছি। তিনি বলেন, তিনি আমাদের নিয়ে দু’রাক‘আত সালাত আদায় করে সালাম ফিরালেন। অতঃপর মসজিদে রাখা এক টুকরা কাঠের উপর ভর দিয়ে দাঁড়ালেন। তাঁকে রাগান্বিত মনে হচ্ছিল। তিনি তাঁর ডান হাত বাঁ হাতের উপর রেখে এক হাতের আঙুল অপর হাতের আঙুলের মধ্যে প্রবেশ করালেন। আর যাঁদের তাড়া ছিল তাঁরা মসজিদের দরজা দিয়ে বাইরে চলে গেলেন এবং তারা বলতে লাগলেন, সালাত সংক্ষিপ্ত হয়ে গেছে। উপস্থিত লোকজনের মধ্যে আবূ বকর এবং ‘উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুমা-ও ছিলেন। কিন্তু তাঁরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সঙ্গে কথা বলতে ভয় পেলেন। আর লোকজনের মধ্যে লম্বা হাত বিশিষ্ট এক ব্যক্তি ছিলেন, যাঁকে ‘যুল-ইয়াদাইন’ বলা হতো, তিনি বললেন, হে আল্লাহ্র রাসূল! আপনি কি ভুলে গেছেন, নাকি সালাত সংক্ষেপ করা হয়েছে? তিনি বললেন, আমি ভুলিনি এবং সালাত সংক্ষেপও করা হয়নি। অতঃপর (অন্যদের) জিজ্ঞেস করলেন, যুল-ইয়াদাইনের কথা কি ঠিক? তাঁরা বললেন, হাঁ। অতঃপর তিনি এগিয়ে এলেন এবং সলাতের বাদপড়া অংশটুকু আদায় করলেন। অতঃপর সালাম ফিরালেন। অতঃপর তাকবীর বললেন ও স্বাভাবিকভাবে সাজদাহ’র মতো বা একটু দীর্ঘ সাজদাহ করলেন। অতঃপর তাকবীর বলে তাঁর মাথা উঠালেন। পরে পুনরায় তাকবীর বললেন এবং স্বাভাবিকভাবে সাজদাহ’র মত বা একটু দীর্ঘ সাজদাহ করলেন। অতঃপর তাকবীর বলে তাঁর মাথা উঠালেন। লোকেরা হয়তো ইব্নু সীরীন-কে জিজ্ঞেস করেছে, “পরে কি তিনি সালাম ফিরিয়েছিলেন?” তখন ইব্নু সীরীন বলতেন, আমার নিকট বর্ণনা করা হয়েছে যে, ‘ইমরান ইব্নু হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, অতঃপর তিনি সালাম ফিরিয়েছিলেন।
নবী রাসূলগণ সব মানুষের চেয়ে অধিক জ্ঞানী, অন্তরের দিক দিয়ে তারা অটুট ও অবিচল, আল্লাহর বিধান বাস্তবায়নে তারা সবচেয়ে শক্তিশালী এবং ধৈর্যের দিক বিবেচনায় তারা সবার উর্ধ্বে। তা সত্বেও তারা মানবিক সীমাবদ্ধতা থেকে বের হয়ে যাননি। এ সব গুণাবলীতে সবচেয়ে পরিপূর্ণ মানব হলো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তারপরও মানুষ হওয়ার কারণে তার ওপর ভুলে যাওয়া চড়াও হয়, যেন আল্লাহ তাআলা তার বান্দাদের জন্যে ভুলের বিধান রচনা করে দেন। আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহ বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন সাহাবীদের নিয়ে যোহর বা আসরের সালাত আদায় করতে ছিলেন। আবূ হুরায়রা সালাতটি নির্দিষ্টভাবে বলেন কিন্তু ইবন সীরীন তা গেছেন। যখন প্রথম দুই রাকা‘আত আদায় করেন তিনি সালাম ফিরান। যেহেতু আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন পরিপূর্ণ- তার আত্মা কখনো পূর্ণাঙ্গ আমল ছাড়া পরিতৃপ্ত হয় না, তাই তিনি কোন দূর্বলতা বা বিঘ্নতার বিষয়টি অনুভব করলেন। তিনি তার কারণটি বুঝতে পারছিলেন না। ফলে তিনি মসজিদের সামনের দিকে রাখা একটি লাকড়ির ওপর হেলান দিয়ে ভারাক্রান্ত মনে দাড়ালেন এবং এক হাতের আঙুল অপর হাতের আঙুলের মধ্যে প্রবেশ করালেন। যাঁদের তাড়া ছিল তাঁরা মসজিদের দরজা দিয়ে বাইরে চলে গেলো এবং তারা বলাবলি করতেছিল নিশ্চয় কোন একটি ঘটনা ঘটেছে। আর তা হলো সালাত সংক্ষিপ্ত করণ। তারা নবুওয়তের অবস্থানকে ভুল ভ্রান্তির থেকে অনেক বড় মনে করলেন। তাদের অন্তরে রাসূলের ভীতির কারণে তাদের কেউ তার এ গুরুত্বপূর্ণ সংশোধন করার ওপর সাহস করল না। কারণ, বিশেষ করে উপস্থিত লোকজনের মধ্যে আবূ বকর এবং ‘উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুমা-ও ছিলেন। বিশেষভাবে তারা তার ভেতর সংকীর্ণ ও প্রভাবিত হওয়ার লক্ষণ দেখেছেন। কিন্তু লোকজনের মধ্যে এক ব্যক্তি ছিলেন, যাঁকে ‘যুল-ইয়াদাইন’ বলা হতো, তিনি এ নীরবতাকে ভাঙলেন। তিনি এ বলে রাসূলুল্লাহকে জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহ্র রাসূল! আপনি কি ভুলে গেছেন, নাকি সালাত সংক্ষেপ করা হয়েছে? তিনি কোনটাই নিশ্চিত করলেন না। কারণ, ঐ যুগের মধ্যে দুটির যেকোনটিই সম্ভব। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার ধারণা থেকে বললেন, আমি ভুলিনি এবং সালাত সংক্ষেপও করা হয়নি। যখন যুল ইয়াদাইন জানতে পারলেন যে, সালাত সংক্ষিপ্ত করা হয়নি আর সে নিশ্চিত ছিল যে, তিনি দুই রাকা‘আত আদায় করছেন তাই সে বলল, বরং আপনি ভুলে গেছেন। তাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুল ইয়াদাইনের সংবাদটি নিশ্চিত হতে চাইলেন। কারণ, তার সংবাদটি তার ধারনার বিপরীত। তাই তিনি চাইলেন এমন কিছু যা তার কথাকে প্রধান্য দেয়। অতঃপর তিনি তার আশপাশের সাহাবীদের জিজ্ঞেস করলেন, যুল-ইয়াদাইনের কথা কি ঠিক? আমি নাকি কেবল দুই রাকা‘আত সালাত আদায় করছি। তাঁরা বললেন, হাঁ। তখন তিনি এগিয়ে এলেন এবং সলাতের বাদপড়া অংশটুকু আদায় করলেন। তাশাহুদের পর সালাম ফিরালেন ও বসা অবস্থায় তাকবীর বললেন এবং স্বাভাবিকভাবে সাজদাহ’র মতো বা একটু দীর্ঘ সাজদাহ করলেন। অতঃপর তাকবীর বলে সেজদা থেকে মাথা উঠালেন। পরে পুনরায় তাকবীর বললেন এবং স্বাভাবিকভাবে সাজদাহ’র মত বা একটু দীর্ঘ সাজদাহ করলেন। অতঃপর তিনি সালাম ফিরিয়েছিলেন কিন্তু তাশাহুদ পড়েননি।