الغفور
كلمة (غفور) في اللغة صيغة مبالغة على وزن (فَعول) نحو: شَكور، رؤوف،...
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে মারফু‘ সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার দরজায় ঝগড়া-বিবাদের আওয়াজ শুনতে পেলেন। দু’জন তাদের আওয়াজ উচ্চ করছিল। একজন আরেকজনের কাছে কোনো বিষয়ে ছাড় দেওয়ার এবং সহানুভূতি দেখানোর অনুরোধ করছিল। আর অপর ব্যক্তি বলছিল, না আল্লাহর কসম! আমি তা করব না। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বের হয়ে তাদের কাছে আসলেন এবং বললেন, সৎকাজ করবে না বলে যে আল্লাহর নামে শক্ত কসম করেছে সে লোকটি কোথায়? সে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমি। (তবে আমি তা থেকে ফিরে এসেছি) সে যা চাইবে তার জন্য তাই হবে।
হাদীসের অর্থ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম অর্থ সংক্রান্ত বিষয়ে দু’ব্যক্তির ঝগড়া শুনতে পেলেন। তারা দু’জনে খুব উচ্চ আওয়াজে ঝগড়া করছিল, এমনকি তাদের আওয়াজ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের গৃহ পর্যন্ত পৌঁছল। ফলে তিনি সে আওয়াজের দিকে কর্ণপাত করে শুনতে পেলেন যে, দু’জন লোকের একজন আরেকজনের কাছে কিছু পাওনা মাফ করে দেওয়ার এবং তা পরিশোধে সহানুভূতি দেখানোর অনুরোধ করছিল। কিন্তু অপর ব্যক্তি বলছিল, না আল্লাহর কসম! আমি তা করব না। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বের হয়ে তাদের কাছে আসলেন এবং বললেন, সৎকাজ করবে না বলে যে আল্লাহর নামে শক্ত কসম করেছে সে লোকটি কোথায়? লোকটি বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমি শপথ করে বলেছি। (কিন্তু আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি) সুতরাং আমার প্রতিপক্ষ ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি ঋণের কিছু মাফ বা সহানুভূতির ব্যাপারে যা চাইবে তার জন্য তাই হবে। তবে মুসনাদে আহমদে (হাদীস নং ২৪৪০৫), ইবন হিব্বান (হাদীস নং ৫০৩২) এর বর্ণনায় এসেছে, ঋণদাতা লোকটি বলল, হে আল্লাহর রাসূল, আপনি বললে আমি তার যতটুকু কমতি হয়েছে সে পরিমাণ মাফ করে দিব, আপনি চাইলে আমি মূলধন থেকে কম করে নিব। অতঃপর যতটুকু কমতি হয়েছে ততটুকু সে মাফ করে দেয়। এ হাদীসটি এ অধ্যায়ে উল্লেখ করার যৌক্তিকতা সুস্পষ্ট। কেননা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিছু হক মাফ করে দেওয়া বা তা পরিশোধে সহানুভূতি দেখানোর মাধ্যমে বিবাদবান দুজন ব্যক্তির মধ্যে মীমাংসা করে দিয়েছেন। এ অধ্যায়ে বুখারী (হাদীস নং ২৪২৪) ও মুসলিম (হাদীস নং ১৫৫৮) বর্ণিত একই ধরনেের হাদীস রয়েছে। কা‘ব ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আব্দুল্লাহ ইবন আবু হাদরাদ আল-আসলামী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর কাছে তার কিছু পাওনা ছিল। তিনি তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন এবং পিছনে লেগে থাকলেন। তাঁরা উভয় কথা বলতে লাগলেন, এমনকি এক পর্যায়ে তাঁদের উভয়ের আওয়াজ উঁচু হলো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখানে গেলেন এবং বললেন, হে কা‘ব! উভয় হাত দিয়ে তিনি ইশারা করলেন; যেন অর্ধেক (গ্রহণ করার কথা) বুঝিয়েছিলেন। তাই তিনি (কা‘ব) তার ঋণের অর্ধেক গ্রহণ করলেন এবং অর্ধেক ছেড়ে দিলেন। অতএব, মুসলিমের উচিৎ কল্যাণের কাজে অগ্রগামী হওয়া, বিশেষ করে মানুষের মধ্যে মীমাংসা করে দিয়ে। সুতরাং যখন সে দু’জনের বা দু’দলের বা দু’গোত্রের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ, হিংসা-বিদ্বেষ, মারামারি ও যুদ্ধ-বিগ্রহ দেখতে পাবে তখন তার উচিৎ তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দেওয়া; যাতে তাদের মধ্যে দলাদলি ও হিংসা-বিদ্বেষ দূরীভূত হয়ে ভ্রাতৃত্ব ও ভালোবাসা স্থাপিত হয়। কেননা এতে রয়েছে অনেক কল্যাণ ও অগণিত সাওয়াব; বরং এ কাজ নফল সাওম আদায়কারী, সালাত আদায়কারী ও দান-সদকাকারীর চেয়েও অধিক উত্তম। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “আমি কি তোমাদের সালাত, সাওম এবং যাকাত হতে উত্তম আমল সম্পর্কে অবহিত করবো না? সাহাবীগণ বললেন, হ্যাঁ, ইয়া রাসূলাল্লাহ! তিনি বললেন, তা হলো: পরস্পরের মাঝে আপোষ-মীমাংসা করে দেওয়া।” আবু দাউদ, হাদীস নং ৪৯১৯. আলবানী রহ. সহীহ আবু দাউদে (৪৯১৯) হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।