ইবন মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে মারফূ‘ হাদীস বর্ণিত, “যে অভাবগ্রস্ত হয় এবং সে তা লোকদের নিকট প্রকাশ করে, তার অভাব দূর করা হয় না। আর যে ব্যক্তি তা আল্লাহর নিকট প্রকাশ করে, আল্লাহ তাকে শীঘ্র অথবা বিলম্বে হলেও রিযিক প্রদান করেন।”
شرح الحديث :
আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে অভাবগ্রস্ত হয়” অর্থাৎ, কঠিন অভাবে পড়ে। আরবী ‘ফা-ক্বাহ’ শব্দটি অধিকাংশ সময় দারিদ্রতা ও সংকীর্ণ জীবন অর্থে ব্যবহৃত হয়। ‘অতঃপর সে তা মানুষের কাছে পেশ করেছে’ অর্থাৎ সে মানুষের কাছে তা পেশ করল এবং তাদের কাছে অভিযোগ হিসেবে ও দারিদ্র লাগবের আবেদনস্বরূপ তা প্রকাশ করেছে। ফলে “তার অভাব দূর করা হয় না।” অর্থাৎ তার প্রয়োজন পূরণ করা হয় না, তার দারিদ্রতা সর্বদা চলতেই থাকে। যখন তার একটি অভাব দূর হয়, তার চেয়ে কঠিন অভাব সামনে এসে দেখা দেয়। আর “যে ব্যক্তি তা আল্লাহর নিকট প্রকাশ করল” যেমন আল্লাহর ওপর ভরসা করল, (তার অবস্থা দু’টির একটি হবে)। প্রথম অবস্থা: ‘আওশাকাল্লাহু’ অর্থাৎ আল্লাহ তাকে শীঘ্রই ও দ্রুত দিবেন ‘লাহু বিল গিনায়ে’ অর্থাৎ যথেষ্ট পরিমাণ। অপর এক ছাপায় ‘বিল-গিনা’ শব্দ এসেছে। মাসাবীহের ব্যাখ্যাকারীগণ বলেছেন, ‘আল-গিনা’ শব্দটি আলেফে মাকসূরা দিয়ে যে বর্ণনা এসেছে, আর যার অর্থ স্বচ্ছলতা, এটি মূলত প্রকৃত অর্থকে বিকৃত করে দেয়। কারণ, রাসূল বলেছেন, সে যে সমস্যার ওপর আছে তা থেকে রেহাই পেতে যা যথেষ্ট হবে তা তার জন্য আসবে, (পূর্ণ স্বচ্ছলতা নয়)। ‘বিমাওতিন আজিল’ বা (দ্রূত মৃত্যুর মাধ্যমে) এর অর্থ কেউ বলেছেন, তার বিত্তশালী কোনো আত্মীয় মারা যাবে ফলে সে তার উত্তরসূরী হবে। খুবসম্ভব হাদীসটি আল্লাহর নিম্নোক্ত বাণী থেকে গৃহীত। আল্লাহ বলেন, “যে আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করবে, তিনি তার জন্য উপায় বের করে দেবেন। তাকে এমন স্থান থেকে রিযিক দেবেন যা তার ধারণায় আসে নি। আর যে আল্লাহর ওপর ভরসা করে, তিনিই তার জন্যে যথেষ্ট।” [সূরা আত-তালাক, আয়াত: ২,৩] দ্বিতীয় অবস্থা: আল্লাহ তাকে "غنى" দিবেন, অর্থাৎ “স্বচ্ছলতা” দিবেন। آجل অর্থ বিলম্বে। যেমন, তাকে সম্পদ দিবেন এবং তাকে ধনী বানিয়ে দিবেন।
ترجمة هذا الحديث
متوفرة باللغات التالية