খাদ্য ও খাদ্য-বক্ষকের প্রকৃতির মধ্যে কোনো সম্পর্ক আছে কি-না বক্ষ্যমাণ ফতোয়ায় শায়খ মুহাম্মাদ সালেহ আল মুনাজ্জিদ এই প্রশ্নের যুক্তিসঙ্গত উত্তর দিয়েছেন।
التفاصيل
প্রশ্ন শূকর ও গাধার গোশ্ত হারাম হওয়ার পেছনে কারণ কী? ভক এবং আহারকৃত খাদ্যের প্রকৃতির মধ্যে কি কোনো সম্পর্ক আছে? উত্তর আলহামদু লিল্লাহ ইবনুল কাইয়েম রাহ. বলেছেন:- ভক্ষক, মেযাজ-প্রকৃতি ও কর্মে ভক্ষণকৃত খাবারের সাথে সদৃশ্যপূর্ণ। আল্লাহ তাআলার সৃষ্টি যেমন হেকমতপূর্ণ, তাঁর শরীয়ত ও আদেশমালাও হেতমতে ভরপুর। আল্লাহ তাঁর বান্দাদের জন্য অপবিত্র খাবার হারাম করেছেন; কারণ তারা এগুলো আহার করলে এগুলো তাদের অংশে পরিণত হয়ে যায়, অতঃপর তাদের শরীরের অশংগুলো আহারকৃত খাবারের সাদৃশ্য বনে যায়; কেননা ভক্ষক ভক্ষণকৃত খাবারের মতোই, বরং এটা তার অন্তস্তলে একাকার হয়ে যায়। এ কারণে মানব-প্রজাতি সব থেকে ভারসাম্যপূর্ণ মেযাজের জীব, যেহেতু তার খাবার ভারসাম্যপূর্ণ। আর যদি কেউ রক্ত পান করে অথবা হিংস্র প্রাণীর গোশত ভক্ষণ করে তাহলে আহারকৃত বস্তু তার মধ্যে শয়তানী শক্তির উন্মেষ ঘটাবে, হিংস্র শক্তির উন্মেষ ঘটাবে। ফলে সে মানুষের উপর আক্রমণাত্মক আচরণের অধিকারী হয়ে উঠবে। অতএব এটা শরীয়তের একটি চমৎকার দিক যে এসব খাবার ও তার তুল্য বিষয় হারাম করে দিয়েছে। তবে যদি কোনো প্রধান্যপ্রাপ্ত স্বার্থ জড়িত থাক, যেমন অতীব প্রয়োজনের সময়। এ কারণে খ্রীষ্টান সমপ্রদায় যখন শূকরের গোশত খেল তাদের মেযাজে তখন রূঢ়তা ও কঠোরতা সৃষ্টি হল। অনুরূপভাবে যে ব্যক্তি হিংস্র প্রাণী ও কুকুরের গোশত খাবে তার মধ্যে ওদের মতোই শক্তি সৃষ্টি হবে। শয়তানী শক্তি যেহেতু উটের মধ্যে সাময়িকভাবে আসে সে কারণে তা দমন করার জন্য উটের গোশত আহারের পর ওজু করার নির্দেশ এসেছে। গাধার সাথে যেহেতু গর্দভের প্রকৃতি সার্বক্ষণিকভাবে যুক্ত থাকে সে কারণে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গৃহপালিত গাধার গোশত হারাম করে দিয়েছেন। রক্ত যেহেতু শয়তানের বাহন ও চলার পথ সে কারণে আল্লাহ তাআলা রক্ত হারাম করে দিয়েছেন। অতঃপর যে ব্যক্তি সৃষ্টিতে ও নির্দেশমালায় আল্লাহ তাআলার হেকমত ও প্রবজ্ঞা বিষয়ে চিন্তা করবে এবং বিভিন্ন বস্তুর মাঝে তুলনা করে দেখবে, তার সামনে আল্লাহ সম্পর্কে জ্ঞান, তাঁর আসমা ও সিফাত সম্পর্কে জ্ঞানের বিশাল এক দরজা উন্মুক্ত হয়ে যাবে। সূত্র: ইবনুল কাইয়েম, আত্তিবয়ান ফি আকসামিল কুরআন, ১/২৩৬