البحث

عبارات مقترحة:

الرزاق

كلمة (الرزاق) في اللغة صيغة مبالغة من الرزق على وزن (فعّال)، تدل...

الحافظ

الحفظُ في اللغة هو مراعاةُ الشيء، والاعتناءُ به، و(الحافظ) اسمٌ...

البصير

(البصير): اسمٌ من أسماء الله الحسنى، يدل على إثباتِ صفة...

আবূ আইয়ূব আল-আনসারী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “বিতরের সালাত প্রমাণিত (ওয়াজিব)। অতএব, যে ইচ্ছা করবে সে সাত রাক‘আত দ্বারা বিতর আদায় করবে, আর যে ইচ্ছা করবে সে পাঁচ রাক‘আত দ্বারা বিতর আদায় করবে, আর যে ইচ্ছা করবে সে তিন রাক‘আত দ্বারা বিতর আদায় করবে, আর যে ইচ্ছা করবে সে এক রাক‘আত দ্বারা বিতর আদায় করবে।”

شرح الحديث :

হাদীসের অর্থ: নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী, “বিতরের সালাত হক।” হক শব্দটি সাব্যস্ত অর্থে ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ এ সালাতটি হাদীস দ্বারা সাব্যস্ত। এতে রয়েছে এ সালাতের প্রতি এক প্রকার গুরুত্ব। আবার হক শব্দটি ওয়াজিব অর্থেও ব্যবহৃত হয়। তবে এখানে হক শব্দটি দ্বারা প্রথমোক্ত অর্থ (অর্থাৎ সুন্নাহ দ্বারা সাব্যস্তই) উদ্দেশ্য (অর্থাৎ) : বিতর খুব গুরুত্বপূর্ণ, (তবে ওয়াজিব নয়), কারণ বিতরের সালাত ওয়াজিব না হওয়ার ব্যাপারে স্পষ্ট দলিল প্রমাণ রয়েছে। যেমন: বুখারী ও মুসলিমে বর্ণিত, তালহা ইবন ‘উবাইদুল্লাহ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন আহলে নাজদের একলোক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে আগমন করল। পূর্ণ হাদীস। তাতে রয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, (দিনেরাতে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করবে)। তখন লোকটি তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, এগুলো ছাড়া কি আমার ওপর অন্য কোন সালাত রয়েছে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, না। (তবে তুমি যদি নফল সালাত আদায় করতে চাও)। সুতরাং বিতরের সালাত যদি ওয়াজিব হতো তাহলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের সাথে এ সালাতের কথাও উল্লেখ করতেন। আরেকটি দলিল যেমন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী, (আল্লাহ তা‘আলা বান্দাদের ওপর পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ফরয করেছেন। যে ব্যক্তি এ পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করবে এবং এগুলোর মধ্যে কোন সালাত হালকা জ্ঞানে ছেড়ে দিবে না তার জন্য আল্লাহর ওয়াদা হলো তিনি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন)। বিতরের সালাত ওয়াজিব না হওয়ার আরেকটি দলিল হলো বুখারী ও মুসলিমে ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত হাদীস, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম মু‘আয ইবন জাবালকে ইয়ামেনের গভর্নর হিসেবে প্রেরণ করেন। এতে রয়েছে, “তুমি তাদেরকে জানিয়ে দাও যে, আল্লাহ তাদের ওপর দিনেরাতে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ফরয করেছেন।” এ হাদীসটি বিতরের সালাত ওয়াজিব না হওয়ার সর্বোত্তম দলিল। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর মৃত্যুর কিছুদিন পূর্বে মু‘আযকে ইয়ামেনে প্রেরণ করেছিলেন। আরেকটি দলিল হলো আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর বাণী, তিনি বলেছেন, (বিতরের সালাত অত্যাবশ্যকীয় নয়।) উপরোক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, হাদীসে বর্ণিত হক শব্দ দ্বারা বিতরের সালাতের গুরুত্ব ও তাৎপর্য বুঝানো হয়েছে এবং এ সালাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ। “সুতরাং যে ইচ্ছা করবে সে সাত রাক‘আত দ্বারা বিতর আদায় করবে, আর যে ইচ্ছা করবে সে পাঁচ রাকা‘আত দ্বারা বিতর আদায় করবে।” অর্থাৎ দু’রাক‘আত দু’রাক‘আত করে সালাত আদায় করা শেষ হলে এক রাক‘আত দ্বারা বিতর করবে। এ পদ্ধতিতে বিতর করা উত্তম। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “রাতের সালাত দু’রাক‘আত দু’রাক‘আত করে।” মুত্তাফাকুন আলাইহি (বুখারী ও মুসলিম)। আবার এটিও হতে পারে যে, একত্রে সব (তিন বা পাঁচ বা সাত) রাকা‘আত আদায় করে শুধু শেষ রাকা‘আতে বসা। এ পদ্ধতিও জায়েয। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বয়ং এভাবে করেছেন। যেমন মুসনাদে আহমদে উম্মে সালামাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাত ও পাঁচ রাক‘আত দ্বারা বিতর করতেন, এর মাঝে সালাম বা কথাবার্তা বলে রাক‘আত আলাদা করতেন না।” আবূ দাউদে আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাঁচ রাক‘আত দ্বারা বিতর করতেন, আখেরী বৈঠক ব্যতীত মাঝখানে তিনি বসতেন না।” “আর যে ইচ্ছা করে তিন রাক‘আত দ্বারা বেজোড় করবে।” অর্থাৎ দু’রাক‘আত পড়ে সালাম ফিরাবে, অত: পর এক রাক‘আত আদায় করবে। কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “রাতের সালাত দু’রাক‘আত দু’রাক‘আত করে।” মুত্তাফাকুন আলাইহি (বুখারী ও মুসলিম)। অথবা এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো তিন রাক‘আত একত্রে পড়া; শেষ বৈঠক ব্যতীত কোন রাক‘আতে না বসা। এ পদ্ধতিও নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে সাব্যস্ত রয়েছে। উবাই ইবন কা‘ব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিতরের সালাতের প্রথম রাক‘আতে সাব্বি হিসমা রাব্বিকাল আ‘লা (সূরা আল-আ‘লা), দ্বিতীয় রাক‘আতে কুল ইয়া আইয়্যুহাল কাফিরূন (সূরা কাফিরূন) এবং তৃতীয় রাক‘আতে কুল হুআল্লাহু আহাদ (সূরা ইখলাস) পাঠ করতেন। শেষ রাক‘আত ব্যতীত এর মধ্যখানে সালাত ফিরাতেন না। বর্ণনায় নাসায়ী। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, “নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিতরের দু’রাক‘আতে সালাম ফিরাতেন না।” বর্ণনায় নাসায়ী। শাইখ ‘উসাইমীন রাহিমাহুল্লাহ বলেছেন, বিতরের সালাত তিন, পাঁচ, সাত এবং নয় রাক‘আত পর্যন্ত পড়া জায়েয। যদি কেউ তিন রাক‘আত দ্বারা বিতর করে তবে শরী‘আতে এর দু’টি পদ্ধতি রয়েছে। দু’টিই বৈধ: প্রথম পদ্ধতি হলো, একই তাশাহহুদে একসাথে তিন রাক‘আত আদায় করা (অর্থাৎ সালাম না ফিরিয়ে একত্রে তিন রাক‘আত আদায় করা)। দ্বিতীয় পদ্ধতি হলো, দু’রাক‘আত পড়ে সালাম ফিরাবে, অত: পর এক রাক‘আত আলাদা আদায় করবে। তবে উত্তম হলো প্রত্যেক দুই দু’রাক‘আত পড়ে সালাম ফিরাবে। অত: পর এক রাকা‘আত পড়বে, তাহলে সেটি তার পূর্বের সালাতকে বিতর করে দিবে। কেননা এতে রয়েছে অধিক কাজ। তাছাড়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ পদ্ধতিতে বেশি বিতর সালাত আদায় করেছেন। “আর কেউ ইচ্ছা করলে এক রাক‘আত দ্বারা বিতর করে দিবে।” অর্থাৎ এর পূর্বে কোনো জোড় সংখ্যক সালাত আদায় না করে শুধু এক রাক‘আত আদায় করে বিতর করবে। দেখুন, শরহুল মিশকাত, তীবী, 4/1224; নাইলুল আওতার, 3/39; মির‘আতুল মাফাতীহ, 4/274; সুবুলুস সালাম, 2/342; তাওদীহুল আহকাম, 2/398; তাসহীহুল ইলমাম, 2/370; আশ-শারহুল মুমতি‘ 4/14।


ترجمة هذا الحديث متوفرة باللغات التالية