البحث

عبارات مقترحة:

النصير

كلمة (النصير) في اللغة (فعيل) بمعنى (فاعل) أي الناصر، ومعناه العون...

المتعالي

كلمة المتعالي في اللغة اسم فاعل من الفعل (تعالى)، واسم الله...

السميع

كلمة السميع في اللغة صيغة مبالغة على وزن (فعيل) بمعنى (فاعل) أي:...

হাকীম ইবন হিযাম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে কিছু চাইলাম। তিনি আমাকে দিলেন, আবার চাইলাম, তিনি আমাকে দিলেন, আবার চাইলাম, তিনি আমাকে পুনরায় দিলেন। তারপর বললেন, হে হাকীম, এই সম্পদ শ্যামল সুস্বাদু। যে ব্যক্তি প্রশস্ত অন্তরে (লোভ ছাড়া) তা গ্রহণ করে তার জন্য তা বরকতময় হয়। আর যে ব্যক্তি অন্তরের লোভসহ তা গ্রহণ করে তার জন্য তা বরকতময় করা হয় না। যেন সে এমন ব্যক্তির মত, যে খায় কিন্তু তার ক্ষুধা মিটে না। আর উপরের হাত নিচের হাত থেকে উত্তম। হাকীম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমি বললাম, যিনি আপনাকে সত্যসহ পাঠিয়েছেন তাঁর কসম! হে আল্লাহর রাসূল! আপনার পর মৃত্যু পর্যন্ত (সাওয়াল করে) আমি কাউকে সামান্যতমও বিব্রত করব না। এরপর আবু বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হাকীম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে অনুদান গ্রহণের জন্য ডাকতেন; কিন্তু তিনি তাঁর কাছ থেকে তা গ্রহণ করতে অস্বীকার করতেন। তারপর উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু (তার যুগে) তাকে কিছু দেওয়ার জন্য ডাকলেন। তিনি তাঁর কাছ থেকেও কিছু গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন। উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, মুমিনগণ! হাকীম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর ব্যাপারে আমি তোমাদের সাক্ষী রাখছি। আমি তার কাছে এই ফাই এর সম্পদ থেকে তার প্রাপ্য পেশ করেছি; কিন্তু সে তা গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছে। (সত্য সত্যই) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের পর হাকীম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু মৃত্যু পর্যন্ত কারো নিকট কিছু চেয়ে কাউকে বিব্রত করেন নি।

شرح الحديث :

হাদীসের অর্থ: হাকীম ইবন হিযাম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে কিছু সম্পদ চাইলেন। ফলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে কিছু সম্পদ দান করলেন। তিনি আবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে সম্পদ চাইলেন। তিনি তাকে আবার দিলেন। তিনি পুনরায় চাইলেন। তিনি তাকে পুনরায় দিলেন। তারপর তিনি হাকীম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে বললেন, হে হাকিম! নিশ্চয় এই ধন-সম্পদ শ্যামল সুস্বাদু। অর্থাৎ প্রিয় বস্তু, যা মানুষ প্রকৃতিগতভাবেই ভালোবাসে। যেমন মানুষ দৃষ্টিনন্দন সুমিষ্ট সুস্বাদু পাকা ফল পছন্দ করে। অতঃপর তিনি বললেন, যে ব্যক্তি প্রশস্ত অন্তরে (লোভ ছাড়া) তা গ্রহণ করে, অর্থাৎ যে ব্যক্তি পবিত্র অন্তরে লোভ-লালসা ব্যতীত তা অর্জন করে তখন তা তার জন্য বরকতময় হয়। অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা তাতে বরকত দান করেন এবং তা বহুগুণে বৃদ্ধি করেন, যদিও তা কম হয়; তিনি ব্যক্তির অন্তরে পরিতুষ্টি দান করেন। ফলে সে আত্মতৃপ্ত ও তুষ্ট হয় এবং সুখী জীবন যাপন করে। আর যে ব্যক্তি অন্তরের লোভসহ তা গ্রহণ করে অর্থাৎ যে ব্যক্তি তা লোভের কারণে তার দিকে তাকিয়ে থাকে ও লোভ করে তখন তার জন্য তা বরকতময় করা হয় না, অর্থাৎ আল্লাহ তা থেকে বরকত উঠিয়ে নিবেন এবং ব্যক্তির পরিতুষ্টি কেড়ে নেওয়া হয়। ফলে সে সর্বদা অতৃপ্ত জীবন যাপন করে; যদিও তাকে দুনিয়ার সমস্ত সম্পদ দেওয়া হয়। এ হাদীসের অর্থে মুসলিমে আরেকটি হাদীস এসেছে, “আমি তো কোষাধ্যক্ষ মাত্র। সন্তুষ্টচিত্তে আমি যাকে যা দান করি, তা তার জন্য বরকতপূর্ণ হবে। আর যে ব্যক্তিকে প্রার্থনা ও লোভের কারণে দান করি তার অবস্থা ঐ ব্যক্তির মতো যে ভক্ষণ করে; কিন্তু তৃপ্ত হয় না“ (মুসলিম, হাদীস নং ১০৩৭) তার উদাহরণ সে ব্যক্তির ন্যায় যে খায়; কিন্তু তার ক্ষুধা মেটে না। অর্থাৎ সে এমন দুঃখ-ভারাক্রান্ত ব্যক্তি যে আহার করে কিন্তু তার ক্ষুধা মিটে না। এটি হলো তাদের অবস্থা যারা লোভে তাকিয়ে থাকার কারণে সম্পদ লাভ করে, তাহলে যারা কারো কাছে চেয়ে সম্পদ লাভ করে তাদের অবস্থা কেমন হতে পারে? তাদের অবস্থা আরো খারাপ। এ কারণে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে বলেছেন, “তোমার চাওয়া এবং লালসা ব্যতীত যে মাল মহান আল্লাহ তোমাকে দেন তা গ্রহণ করে নিবে এবং ইচ্ছা করলে তা তোমার কাছে রেখে দিবে নয়তো সদকা করে দিবে। আর যা তেমন (লোভবিহীন) নয় তার প্রতি তোমার মনকে ধাবিত করবে না।” অর্থাৎ যা তোমার অন্তরের লোভ-লালসার মাধ্যমে অর্জিত হবে তা গ্রহণ করবে না এবং যা তোমার যাচ্ঞার মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে তাও গ্রহণ করবে না। কেননা উপরের হাত নিচের হাত থেকে উত্তম। অর্থাৎ না চাওয়া ব্যক্তির দাত দান গ্রহণকারীর চেয়ে উত্তম। কেননা সে প্রার্থনা করা থেকে বিরত থেকে নিজেকে উঁচু রেখেছে, যা যাচ্ঞাকারীর বিপরীত যিনি মানুষের কাছে চাওয়ার কারণে তার আত্ম-সম্মান ও মর্যাদা নষ্ট করে ফেলেছে, এমনকি নিজেকে লাঞ্ছিতও করেছে। হাকীম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে সত্য নিয়ে আগমন করেছেন সে সত্যের শপথ করে বলেন যে, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের পরে কারো কাছে কিছু চাইবেন না। তিনি বলেন, যিনি আপনাকে সত্যসহ পাঠিয়েছেন তাঁর কসম! হে আল্লাহর রাসূল! আপনার পর মৃত্যু পর্যন্ত যাচ্ঞা করে আমি কাউকে সামান্যতমও বিব্রত করব না। এরপরে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম মারা যান। অতঃপর আবূ বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু খিলাফত গ্রহণ করেন। তিনি হাকীম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে অনুদান গ্রহণ করতে বলতেন; কিন্তু তিনি তাঁর কাছ থেকে অনুদান গ্রহণ করতেন না। অতঃপর আবূ বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু মারা যান। অতঃপর উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু খিলাফত গ্রহণ করেন। তিনিও তাকে অনুদান গ্রহণ করতে ডাকতেন; কিন্তু তিনি তা গ্রহণে অস্বীকার করতেন। ফলে উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তার ব্যাপারে মানুষকে সাক্ষ্য রেখে বলতেন, হে মুমিনগণ! তোমরা সাক্ষ্য থেকো যে, আমি হাকীমকে এই ফাই থেকে তার প্রাপ্য পেশ করেছি; কিন্তু সে তা গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছে। যাতে কিয়ামতের দিন আল্লাহর সামনে উমারের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না থাকে এবং তিনি মানুষের সাথে কৃত অঙ্গিকার থেকে মুক্ত হতে পারেন। তা সত্ত্বেও হাকিম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু অনুদান গ্রহণে অস্বীকার করতেন। (সত্য সত্যই) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের পর হাকীম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু মৃত্যু পর্যন্ত কারো নিকট কিছু চান নি।


ترجمة هذا الحديث متوفرة باللغات التالية