البحث

عبارات مقترحة:

الأول

(الأوَّل) كلمةٌ تدل على الترتيب، وهو اسمٌ من أسماء الله الحسنى،...

الواحد

كلمة (الواحد) في اللغة لها معنيان، أحدهما: أول العدد، والثاني:...

الحفي

كلمةُ (الحَفِيِّ) في اللغة هي صفةٌ من الحفاوة، وهي الاهتمامُ...

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক লোক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট এসে জিজ্ঞাসা করলো, হে আল্লাহর রাসূল! আমার কাছে কে উত্তম ব্যবহার পাওয়ার বেশি হকদার? তিনি বললেন, “তোমার মা।” লোকটি বলল, তারপর কে, তিনি বললেন, “তোমার মা।” সে বলল, তারপর কে? তিনি বললেন, “তোমার মা।” সে বলল, তারপর কে? তিনি বললেন, “তারপরে তোমার বাবা।” (বুখারী ও মুসলিম) মুসলিমের বর্ণনায় এসেছে, একব্যক্তি প্রশ্ন করল, হে আল্লাহর রাসূল! মানুষের মধ্যে সদ্ব্যবহার পাওয়ার সর্বাপেক্ষা হকদার কে? তিনি বললেন, “তোমার মা। এরপরও তোমার মা। এরপরও তোমার মা। এরপর তোমার বাবা। এরপর তোমার নিকটবর্তী আত্মীয়-স্বজন। এরপর তোমার নিকটবর্তী লোকজন।” হাদীসে বর্ণিত সাহাবা শব্দটি সুহবাহ তথা সঙ্গের অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী, “সুম্মা আবাকা” উহ্য ক্রিয়া দ্বারা নসব বিশিষ্ট হয়েছে। অর্থাৎ অতঃপর তোমার বাবার সাথে উত্তম আচরণ করো। অন্য র্বণনায় “সুম্মা আবূকা” তথা রফ‘আ বিশিষ্ট হয়েছে। এর কারণ স্পষ্ট।

شرح الحديث :

এ হাদীস প্রমাণ করে যে, পিতামাতার অধিকার হলো তাদের সাথে সদাচারণ ও তাদের পরিপূর্ণ দেখাশুনা করা।আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “দুনিয়ায় তাদের সাথে বসবাস করবে সদ্ভাবে”। (সূরা লুকমান, আয়াত: ১৫) তবে মায়ের হক বাবার চেয়ে অনেকগুন বেশি। যেহেতু হাদীসে মায়ের হক পরিপূর্ণ গুরুত্বের সাথে তিনবার সাব্যস্ত করার পরেই বাবার হকের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। পিতামাতা উভয়েই সন্তানের লালন পালনে অংশিদার হলেও যেমন পিতা তার ধন-সম্পদ ব্যয় ও দেখাশুনা করে সন্তানের লালন পালনে অংশিদার, আর মাতা সন্তানের পানাহার, পোশাক-পরিচ্ছদ ও বিছানাপত্র তৈরি করে সন্তানের লালন-পালনে অংশিদার; তথাপি মায়ের মর্যাদা পিতার চেয়ে উর্ধ্বে। কেননা সন্তান পালনে মাতা যেসব কষ্ট সহ্য করেন পিতা সেসব কষ্ট-ক্লেশ ভোগ করেন না। মাতা দীর্ঘ নয় মাস সন্তানকে অতি কষ্টের পর কষ্টে গর্ভে ধারণ করেন। তাকে অপরিসীম কষ্টে প্রসব করেন; প্রসবের সময় ভয়ানক কষ্টে তার জীবন নাশের উপক্রম হয়। এমনিভাবে দু’ বছর নিজের সব আরাম-আয়েশ ও নিদ্রা বিসর্জন দিয়ে সন্তানের আরাম-আয়েশ ও কল্যাণার্থে সন্তানকে দুগ্ধ পান করান। এ কাজে তিনি সীমাহীন কষ্ট সহ্য করেন। একথা আল্লাহ তাঁর অহীর ভাষায় এভাবে বর্ণনা করেছেন: “আর আমি মানুষকে তার মাতা-পিতার প্রতি সদয় ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছি। তার মা তাকে অতিকষ্টে গর্ভে ধারণ করে এবং অতিকষ্টে তাকে প্রসব করে। তার গর্ভধারণ ও দুধপান ছাড়ানোর সময় লাগে ত্রিশ মাস”। (সূরা আল-আহকাফ, আয়াত: ১৫) আপনি এখানে লক্ষ্য করছেন যে, আল্লাহ পিতামাতার সাথে সদাচরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। অথচ এর কারণস্বরূপ শুধু ঐসব কষ্টের কথা উল্লেখ করেছেন, যা কেবল মাতাই সন্তান প্রতিপালন করার ক্ষেত্রে সহ্য করে থাকেন। এতে সন্তানের ওপর মায়ের বিরাট অধিকারের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। পিতামাতার সাথে সদাচরণের অন্যতম উপায় হচ্ছে তাদের খাদ্য, পানীয়, বাসস্থান, পোশাক ও জীবন ধারনের অন্যান্য প্রয়োজন মিটানো; বিশেষ করে তারা যখন এগুলোর প্রয়োজন বোধ করেন। বরং আপনার পিতামাতা যদি আপনার চেয়ে নিম্ন মানের বা মধ্যম মানের জীবন যাপন করেন আর আপনি যদি উচ্চ মানের বিলাসী জীবন যাপন করেন তাহলে তাদের জীবন যাত্রার মান আপনার জীবন যাত্রার সমমানের করবেন অথবা আপনার চেয়ে আরো উন্নত মানের জীবন যাপনের ব্যবস্থা করবেন। কেননা এসব কাজ তাদের সাথে উত্তম আচরণের অন্যতম মাধ্যম। আপনি ইউসুফ আলাইহিস সালামের ঘটনার প্রতি খেয়াল করুন। তাকে রাজ সিংহাসন দেওয়ার পর তিনি তার পিতামাতার সাথে কী ধরনের আচরণ করেছিলেন। তিনি তাদেরকে গ্রাম থেকে আনয়ন করে নিজের রাজ সিংহাসনে বসালেন। পিতামাতার সাথে সদাচরণের আরেকটি উপায় বরং যা সকল সদাচরণের সমষ্টি, তা হচ্ছে, যা আল্লাহ তা‘আলা তাঁর এ বাণাীতে উল্লেখ করেছেন, “আর তোমার রব আদেশ দিয়েছেন যে, তোমরা তাঁকে ছাড়া অন্য কারো ইবাদাত করবে না এবং পিতা-মাতার সাথে সদাচরণ করবে। তাদের একজন অথবা উভয়েই যদি তোমার নিকট বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে তাদেরকে উফ বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না। আর তাদের সাথে সম্মানজনক কথা বলো। আর তাদের উভয়ের জন্য দয়া পরবশ হয়ে বিনয়ের ডানা নত করে দাও এবং বল, হে আমার রব, তাদের প্রতি দয়া করুন যেভাবে শৈশবে তারা আমাকে লালন-পালন করেছেন।” (সূরা আল-ইসরা, আয়াত: ২৩-২৪) অতএব তাদের সাথে সব ধরণের অশ্লীল, অশালীন ও অভদ্র ভাষা থেকে বিরত থাকুন। সব ধরনের কষ্টদায়ক ভাষা পরিহার করুন। তাদের সাথে নম্র কথা বলুন, তাদের প্রতি বিনয়ের ডানা নত করুন, তাদের খিদমতে নিজেকে নত করুন, আপনার অন্তর থেকে মনে প্রাণে তাদের জন্য সর্বদা দো‘আ করে নিজের জিহ্বাকে ভিজিয়ে রাখুন এবং বলুন, “হে আমার রব, তাদের প্রতি দয়া করুন যেভাবে শৈশবে তারা আমাকে লালন-পালন করেছেন।” (সূরা আল-ইসরা, আয়াত: ২৪) মহান আল্লাহ অহীর ইঙ্গিত ও রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদীস অনুসারে মায়ের বিশেষ বাড়তি সেবা-যত্ন নিতে ভুল করবেন না।


ترجمة هذا الحديث متوفرة باللغات التالية