البحث

عبارات مقترحة:

الفتاح

كلمة (الفتّاح) في اللغة صيغة مبالغة على وزن (فعّال) من الفعل...

القيوم

كلمةُ (القَيُّوم) في اللغة صيغةُ مبالغة من القِيام، على وزنِ...

النصير

كلمة (النصير) في اللغة (فعيل) بمعنى (فاعل) أي الناصر، ومعناه العون...

আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তিনজন শিশু ছাড়া কেউ দোলনায় কথা বলে নি: মারইয়াম পুত্র ঈসা, আর জুরাইজের (সাক্ষী) শিশু। জুরাইজ ইবাদতগুজার মানুষ ছিল। সে একটি উপাসনালয় বানিয়েছিল এবং সেখানেই ছিল। একদা তার মা তার নিকট আসে, তখন সে সালাত পড়ছিল। তার মা বলল, হে জুরাইজ, সে বলল, ‘হে আমার রব! আমার মা ও আমার সালাত (দু’টিই গুরুত্বপূর্ণ; কোনটিকে প্রাধান্য দিব), তারপর সে সালাতে মশগুল থাকল আর তার মা ফিরে গেল। পরবর্তী দিন যখন তার মা আসল, তখনও সে সালাত পড়ছিল। তার মা এসে ডাক দিল, হে জুরাইজ!’ সে বলল, ‘হে আমার রব! আমার মা ও আমার সালাত (কী করি?)’ সুতরাং সে সালাতে মশগুল থাকল।পরবর্তী দিন তার মা আসল তখনও সে সালাত পড়ছিল। তার মা বলল, হে জুরাইজ!’ সে বলল, ‘হে আমার রব! আমার মা ও আমার সালাত (কী করি?)’ সুতরাং সে সালাতে মশগুল থাকল। তখন তার মা তাকে বদ-দো‘আ করল, ‘হে আল্লাহ! বেশ্যাদের মুখ না দেখিয়ে তাকে মরণ দিয়ো না।’ বনী ইসরাঈলরা জুরাইজ ও তার ইবাদতের চর্চা করতে লাগল। এক মহিলা ছিল, যার দৃষ্টান্তমূলক রূপ-সৌন্দর্য ছিল। সে বলল, ‘তোমরা চাইলে আমি তাকে ফিতনায় ফেলতে পারি।’ সুতরাং সে নিজেকে তার কাছে পেশ করল। কিন্তু জুরাইজ তার প্রতি ভ্রুক্ষেপ করল না। ফলে সে এক রাখালের কাছে এল, যে জুরাইজের ইবাদতখানায় আশ্রয় গ্রহণ করতো। বেশ্যাটি তাকে দেহ সমর্পণ করলে রাখাল তার সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত হয় এবং সে গর্ভবতী হয়। অতঃপর যখন সে সন্তান জন্ম দিল, তখন বলল, ‘এটি জুরাইজের সন্তান।’ সুতরাং লোকেরা জুরাইজের কাছে এসে তাকে ইবাদতখানা থেকে বের করল, তার ইবাদতখানা ভেঙ্গে দিল এবং তাকে মারতে লাগল। জুরাইজ বলল, ‘তোমাদের কী হয়েছে? লোকেরা বলল, ‘তুমি এই বেশ্যার সাথে ব্যভিচার করেছ, তার ফলে সে সন্তান জন্ম দিয়েছে।’ সে বলল, ‘সন্তানটি কোথায়?’ অতঃপর লোকেরা শিশুটি নিয়ে এল, তখন সে বলল, ‘আমাকে সালাত পড়ার সুযোগ দাও।’ সুতরাং সে সালাত পড়ে শিশুটির কাছে এসে তার পেটে খোঁচা মেরে জিজ্ঞেস করল, ‘হে শিশু! তোমার পিতা কে?’ সে জবাব দিল, ‘অমুক রাখাল।’ তখন তারা জুরাইজের কাছে এসে তাকে চুমা দিতে লাগল এবং তাকে মাসেহ করতে লাগলো। তারা বলল, ‘আমরা তোমার ইবাদতখানাকে স্বর্ণ দিয়ে বানিয়ে দিব।’ সে বলল, ‘না, মাটি দিয়েই তৈরী করে দাও, যেমন পূর্বে ছিল।’ সুতরাং তারা তাই করল। (তৃতীয় শিশুর ঘটনা হচ্ছে বনী ইসরাঈলের) এক শিশু তার মায়ের দুধ পান করছিল। এমন সময় তার পাশ দিয়ে উৎকৃষ্ট সওয়ারীতে আরোহী এক সুদর্শন পুরুষ গেল। তার মা দো‘আ করে বলল, ‘হে আল্লাহ! আমার ছেলেটিকে তার মত করো।’ শিশুটি তখন মায়ের দুধ ছেড়ে দিয়ে সেই আরোহীর দিকে ফিরে বলল, ‘হে আল্লাহ আমাকে তার মত করো না।’ তারপর মায়ের দুধের দিকে ফিরে দুধ চুষতে লাগল। আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের তর্জনীকে মুখে চুষে শিশুটির দুধ পান দেখাতে লাগলেন। আমি যেন তা এখনো দেখতে পাচ্ছি। তিনি বলেন, আর লোকেরা একটি দাসীকে মারতে মারতে নিয়ে গেল। তারা বলছিল, ‘তুই যিনা করেছিস, চুরি করেছিস!’ আর দাসীটি বলছিল, ‘হাসবিয়াল্লাহু ওয়ানি‘মাল ওয়াকীল।’ (আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট ও তিনিই উত্তম কর্মবিধায়ক।) তা দেখে মহিলাটি দো‘আ করল, ‘হে আল্লাহ! তুমি আমার ছেলেকে তার মত করো না।’ ছেলেটি সাথে সাথে মায়ের দুধ ছেড়ে দাসীটির দিকে তাকিয়ে বলল, ‘হে আল্লাহ! তুমি আমাকে তার মত করো।’ অতঃপর মা-বেটায় কথোপকথন করল। মা বলল, ‘একটি সুন্দর আকৃতির লোক পার হলে আমি বললাম, হে আল্লাহ! তুমি আমার ছেলেকে তার মত করো। তখন তুমি বললে, হে আল্লাহ! তুমি আমাকে তার মত করো না। আবার ওরা ঐ দাসীকে নিয়ে পার হল আমি বললাম, হে আল্লাহ! তুমি আমার ছেলেকে তার মত করো না। কিন্তু তুমি বললে, হে আল্লাহ! তুমি আমাকে তার মত করো! (এর কারণ কী?)’ শিশুটি বলল, ‘(তুমি বাহির দেখে বলেছ, আর আমি ভেতর দেখে বলেছি।) ঐ লোকটি স্বৈরাচারী ছিল, তাই আমি বললাম, হে আল্লাহ! তুমি আমাকে তার মত করো না। আর ঐ দাসীটিকে ওরা বলছে, তুই ব্যভিচার করেছিস, চুরি করেছিস, অথচ সে এসব করে নি। তাই আমি বললাম, হে আল্লাহ! তুমি আমাকে তার মত করো।’

شرح الحديث :

লেখক রহ. আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত হাদীসে আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে উল্লেখ করেন, (তিনজন ছাড়া কেউ দোলনায় কথা বলে নি।) প্রথমত: মারইয়ামের পুত্র ঈসা আলাইহিস সালাম। ঈসা আলাইহিস সালাম মহান আল্লাহর নিদর্শনসমূহের একটি নিদর্শন। তিনি কোলে কথা বলেছেন। দ্বিতীয়ত: জুরাইজের শিশু। জুরাইজ ইবাদতগুযার মানুষ ছিল। আল্লাহ জুরাইজকে সে অপবাদ থেকে মুক্ত করেন, যা তারা তার উপর আরোপ করেছিল। তার সম্মানার্থে এ নিদর্শন আল্লাহ প্রকাশ করেন। অর্থাৎ বাচ্চাটি কর্তৃক তার নির্দোষ হওয়ার সাক্ষ্য দেওয়া। আর তৃতীয় ব্যক্তি যে দোলনায় কথা বলে, সে হলো দুধ পান করাবস্থায় নিজ মায়ের সাথে কথোপকথনকারী, যখন একজন লোক একটি মুল্যবান ও সুন্দর ঘোড়ায় চড়ে তার পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মায়ের স্তন থেকে বাচ্চাটির দুধ পান করার দৃশ্যটিও বর্ণনা করেন। তিনি বাস্তব বিষয়টি তুলে ধরার লক্ষে তার তর্জনী মুখে দিয়ে চুষতে থাকেন।) তখন শিশুটি বলল, ‘হে আল্লাহ! তুমি আমাকে তার মত করো না।’ তারপর লোকেরা একটি দাসীকে নিয়ে আসল তারা তাকে মারছিল এবং বলছিল, ‘তুই ব্যভিচার করেছিস, তুই চুরি করেছিস!’ আর দাসীটি বলছিল, আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট ও তিনিই উত্তম কর্মবিধায়ক। তা দেখে বাচ্চাটির মা যিনি তাকে দুধ পান করাচ্ছিল বলল, ‘হে আল্লাহ! তুমি আমার ছেলেকে তার মতো করো না।’ শোনে ছেলেটি সাথে সাথে মায়ের দুধ ছেড়ে দাসীটির দিকে তাকিয়ে বলল, ‘হে আল্লাহ! তুমি আমাকে তার মতো করো।’ অতঃপর মা-ছেলে কথোপকথন করল। মা বলল, ‘একটি সুন্দর আকৃতির লোক পার হলে আমি বললাম, হে আল্লাহ! তুমি আমার ছেলেকে তার মত করো। তখন তুমি বললে, হে আল্লাহ! তুমি আমাকে তার মত করো না। শিশুটি বলল, ‘ঐ লোকটি ছিল স্বৈরাচারী ও হটকারী। তাই আমি আল্লাহর কাছে চাইলাম, যেন তিনি আমাকে তার মতো না বানায়। আর ঐ দাসীটি যাকে তারা বলছে, তুই ব্যভিচার করেছিস, তুই চুরি করেছিস, আর সে বলছে, আল্লাহই আমার যথেষ্ট এবং তিনি আমার উত্তম অভিভাবক। আমি বললাম, হে আল্লাহ! তুমি আমাকে তার মত করো।’ অর্থাৎ হে আল্লাহ তুমি আমাকে ব্যভিচার ও চুরি থেকে পবিত্র বানাও এবং আল্লাহর নিকট আমার যাবতীয় বিষয় সোপর্দকারী বানাও। তার কথাতে রয়েছে: আমার জন্য আল্লাহ যথেষ্ট এবং তিনি উত্তম অভিভাবক।


ترجمة هذا الحديث متوفرة باللغات التالية