الأحد
كلمة (الأحد) في اللغة لها معنيانِ؛ أحدهما: أولُ العَدَد،...
আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে মারফূ‘ হিসেবে বর্ণিত: আল্লাহ বলেন, “আল্লাহ বলেন, যখন আমার বান্দা কোনো খারাপ কর্ম করার ইচ্ছা করে, তোমরা তা না করা পর্যন্ত তার ওপর লিপিবদ্ধ কর না। যখন বাস্তবায়ন করে তখন তুমি কর্ম সমান গুনাহ লিখ। আর যদি আমার কারণে তা ছেড়ে দেয়, তখন তার জন্য একটি নেকি লিপিবদ্ধ কর। আর যদি কোনো নেক আমল করার ইচ্ছা করল কিন্তু সে করে নি। তোমরা তার জন্য একটি নেকি লিখ। আর যদি সে নেক আমলটি করে, তাহলে তোমরা দশ গুণ থেকে সাতশত গুণ পর্যন্ত নেকি লিপিবদ্ধ কর।”
এই নির্দেশটি আল্লাহর পক্ষ থেকে সেসব ফিরিশতাদের প্রতি যাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মানুষের আমলের সংরক্ষণ ও লিপিবদ্ধ করার। আর এ হাদীসটি মানুষের ওপর আল্লাহর করুণা এবং আল্লাহ যে মানুষকে ক্ষমা করেন তার বহিঃপ্রকাশ। তার কথা: “যখন আমার বান্দা কোনো খারাপ কর্ম করার ইচ্ছা করে, তোমরা তা না করা পর্যন্ত তার ওপর লিপিবদ্ধ করবে না।” এখানে আমল দ্বারা উদ্দেশ্য অন্তর ও অঙ্গ উভয়ের আমল। এটিই স্পষ্ট। কারণ, এমন প্রমাণও এসেছে যা, প্রমাণ করে যে, অন্তরের আমলের ওপরও পাকড়াও করা হবে এবং সাওয়াব প্রদান করা হবে। আল্লাহ বলেন, আর যে ব্যক্তি তাতে অন্যায়ভাবে কোনো অপরাধ করার ইচ্ছা করে, আমরা তাকে বেদনাদায়ক শাস্তি আস্বাদন করাবো। আর সহীহ হাদীসে বর্ণিত, যখন দু’জন মুসলিম উভয়ে স্বীয় তরবারী দ্বারা একে অপরের মুখোমুখি হয়, তখন হত্যাকারী ও নিহত ব্যক্তি উভয়েই জাহান্নামী হবে। সাহাবীগণ বললেন, হত্যাকারী না হয় স্পষ্ট, কিন্তু নিহত ব্যক্তি কেন? তিনি বললেন, তিনি তার ভাইকে হত্যা করতে আগ্রহী ছিল। এ ধরনের প্রমাণাদি তার বাণী: “যখন আমার বান্দা কোনো খারাপ কর্ম করার ইচ্ছা করে, তোমরা তা না করা পর্যন্ত তার ওপর লিপিবদ্ধ করবে না”-এর ব্যাপকতাকে সংকোচন করতে সক্ষম। এটি খারাপ কর্ম সম্পর্কে তার বাণী: «لم تكتب عليه» এর পরিপন্থী নয়। কারণ, অন্তরের দৃঢ়তা ও প্রতিজ্ঞাও একটি কর্ম। তার বাণী: “যখন বাস্তবায়ন করে তখন তুমি কর্ম সমান গুনাহ লিখ।” অর্থাৎ একটি গুনাহ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “যে সৎকাজ নিয়ে এসেছে, তার জন্য হবে তার দশ গুণ। আর যে অসৎকাজ নিয়ে এসেছে, তাকে অনুরূপই প্রতিদান দেওয়া হবে এবং তাদেরকে যুলুম করা হবে না।” আল্লাহ আরও বলেন, “কেউ পাপ কাজ করলে তাকে শুধু পাপের সমান প্রতিদান দেওয়া হবে, আর যে পুরুষ অথবা নারী মুমিন হয়ে সৎকাজ করবে, তবে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে, সেখানে তাদেরকে অগণিত রিযিক দেওয়া হবে।” তাঁর বাণী: “আর যদি আমার কারণে তা ছেড়ে দেয়, তখন তার জন্য একটি নেকি লিপিবদ্ধ কর।” আল্লাহর কারণে ছাড়ার কথা বলার অর্থ: তার ভয়ে ও তার থেকে লজ্জা করে। আর যদি সে অক্ষম হয়ে ছেড়ে দেয় অথবা মাখলুকের ভয়ে বা অন্য কোনো কারণে তখন তার জন্য নেকি লিপিবদ্ধ করা হবে না। বরং অনেক সময় বিপরীত হতে পারে অর্থাৎ তার জন্য গুনাহ লিখা হবে। তাঁর বাণী: “আর যদি কোনো নেক আমল করার ইচ্ছা করল কিন্তু সে করে নি। তোমরা তার জন্য একটি নেকি লিখ” এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে তাঁর বান্দাদের ওপর বিশেষ অনুগ্রহ। সুতরাং প্রশংসা ও অনুগ্রহ কেবলই তার জন্য। এর চেয়ে বড় মেহেরবানী আর কী হতে পারে যে, একজন নেক কর্মের ইচ্ছা করল, আর তার জন্য পরিপূর্ণ একটি নেক আমল করার সাওয়াব লিপিবদ্ধ হলো। আর নেক আমল করা দ্বারা দশ থেকে নিয়ে সাতশত নেক আমল করার সাওয়াব লিপিবদ্ধ করা হবে। এ হাদীসটিতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম «يقول الله: إذا أراد عبدي» বলে কথাটি আল্লাহর দিকে সম্বন্ধ করেছেন। তিনি বলেন, “আল্লাহ বলেন যখন আমার বান্দা ইচ্ছা করে।” তিনি তাকে কথার দ্বারা গুনান্বিত করলেন। এ ধরনের কথা তার শরী‘আতের অন্তভুর্ক্ত যাতে তিনি তার বান্দাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আর এটি কুরআন নয় এবং সৃষ্টও নয়। কারণ, আল্লাহর বাণী তাঁর মাখলুকের অন্তভুর্ক্ত নয়।