القوي
كلمة (قوي) في اللغة صفة مشبهة على وزن (فعيل) من القرب، وهو خلاف...
আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে মারফু‘ হিসেবে বর্ণিত, “যখন সালাতের জন্য আযান দেওয়া হয়, তখন শয়তান পিঠ দেখিয়ে পালায় আর তার পশ্চাদ-বায়ূ সশব্দে নির্গত হতে থাকে; যাতে আযান শুনতে না পায়। আযান শেষ হয়ে গেলে সে আবার ফিরে আসে। অতঃপর সালাতের জন্য ইকামত দেওয়া হলে সে পিঠ দেখিয়ে পালায়। ইকামত শেষ হয়ে গেলে আবার ফিরে আসে। এমন কি সে সালাতরত ব্যক্তির মনে ওয়াস্ওয়াসা সৃষ্টি করে এবং বলতে থাকে, অমুক অমুক বিষয় স্মরণ করো, যা তার স্মরণে ছিলো না। এক সময় সে এমন হয় যে, কত রাকাত সালাত আদায় করেছে স্মরণ করতে পারে না।
মুয়াজ্জিন যখন আযান দেয় তখন শয়তান পিঠ দেখিয়ে পালায় ও আযানের স্থান থেকে অনেক দূরে চলে যায় যাতে আযান শুনতে না পায়। "حتى لا يسمع التأذين" এর বাহ্যিক অর্থ হলো, শয়তান ইচ্ছাকৃতভাবে পশ্চাদ-বায়ু বের করে, অর্থাৎ বাতকর্ম, যাতে আযান শোনার পরিবর্তে তার বের করা শব্দই সে শুনতে থাকে। অথবা সে আযানকে অবজ্ঞা করে এরূপ করে, যেমন বেকুবরা করে থাকে। অথবা সে স্বেচ্ছায় এ কাজ করে না, বরং আযান শোনার সময় তার কঠিন ভয় হয়, আর সেই ভয় থেকে এরূপ শব্দ সৃষ্টি হয়। অথবা সালাতের পবিত্রতার মোকাবেলা নাপাক পেশ করার জন্যে সে এরূপ স্বেচ্ছায় করে। "فإذا قضي النداء أقبل، حتى إذا ثوب بالصلاة أدبر، حتى إذا قضى" আযান শেষ হয়ে গেলে সে আবার ফিরে আসে। অতঃপর সালাতের জন্য ইকামত দেওয়া হলে সে পিঠ দেখিয়ে পালায়। ইকামত শেষ হয়ে গেলে আবার ফিরে আসে।” এখানে قضى শব্দের অর্থ সমাপ্ত হওয়া ও ফারিগ হওয়া। আর "التثويب أقبل حتى يخطر" অর্থাৎ সালাতের ডাক শেষ হয়ে গেলে সে সালাতরত ব্যক্তির মনে ওয়াস্ওয়াসা সৃষ্টি করে। এখানে يخطر শব্দের অর্থ “সে ওয়াসওয়াসা দেয়।” এখানে يخطر শব্দটির ব্যবহার এসেছে, خطر البعير بذنبه প্রবাদ থেকে, অর্থাৎ উট যখন তার লেজ নেড়ে দুই রানের উপর আঘাত করে তখন এ প্রবাদটি ব্যবহার করা হয়। অতঃপর শয়তান বনী আদমকে পথভ্রষ্ট করার জন্য অগ্রসর হয়। আযানের সময় শয়তান ভেগে যাওয়ার কারণ হলো যেহেতু আযানে হলো তাওহীদের কালেমা, আক্বীদা ও আল্লাহর বিধান সালাত কায়েম করার ঘোষণার সমষ্টি, আর সে আল্লাহর যিকির শোনতে অপছন্দ করে। এটি আল্লাহ তা‘আলার নিম্নোক্ত বাণীর অর্থে, “কুমন্ত্রণাদাতার অনিষ্ট থেকে, যে দ্রুত আত্মগোপন করে।” [সূরা আন-নাস, আয়াত: ৪] অর্থাৎ যে আল্লাহর নাম উচ্চারণের সময় আত্মগোপন করে, লুকিয়ে থাকে ও দূরে চলে যায়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী, “ব্যক্তি ও তার মনে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।” অর্থাৎ সে এসে ব্যক্তি ও তার সালাতের মধ্যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে এবং বলে অমুক অমুক বিষয় স্মরণ করো, যা সালাত শুরু করার আগে তার স্মরণে ছিলো না। "حتى يظل الرجل" এক সময় সে ভুলে যায় ও তার নিশ্চিত ধারণা বিস্মৃত হয়। "ما يدري كم صلى" কত রাকাত সালাত আদায় করেছে স্মরণ করতে পারে না। শয়তান সালাতের সময় উপস্থিত হয়; যদিও সালাতে কুরআন তিলাওয়াত রয়েছে; কেননা সালাতে অধিকাংশ তিলাওয়াত মনে মনে করা হয়। সে ব্যক্তির তিলাওয়াত বিনষ্ট করে অথবা তার খুশু‘ (একাগ্রতা) নষ্ট করে। কেউ কেউ বলেছেন, আযানের সময় শয়তান ভেগে যায় যাতে কিয়ামতের দিন সে বনী আদমের জন্য আল্লাহর কাছে সাক্ষ্য দিতে বাধ্য না হয়। আবূ সা‘ঈদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত হাদীসে এভাবে এসেছে। দেখুন, দলীলুল ফালিহীন (৬/৩১৯); শরহি রিয়াদুস সালিহীন (৫/৩৪ ও এর পরবর্তী পৃষ্ঠাসমূহ)।