فضل الجهاد
রসূলল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞাসা করা হল, রসূলল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞাসা করা হল, ‘হে আল্লাহর রসূল! আল্লাহর পথে জিহাদ করার সমতুল্য আমল কি? তিনি বললেন, “তোমরা তা পারবে না।” তারা তাঁকে দু’-তিনবার ঐ একই কথা জিজ্ঞাসা করতে থাকল, আর তিনি প্রত্যেকবারে বললেন, “তোমরা তার ক্ষমতা রাখ না।” তারপর বললেন, “আল্লাহর পথে জিহাদ-কারীর দৃষ্টান্ত ঠিক সেই রোজাদার ও আল্লাহর আয়াত পাঠ করে নামায আদায়কারীর মত, যে রোযা রাখতে ও নামায পড়তে আদৌ ক্লান্তি-বোধ করে না। (এরূপ ততক্ষণ পর্যন্ত গণ্য হয়) যতক্ষণ না মুজাহিদ জিহাদ থেকে ফিরে আসে।” বুখারীর এক বর্ণনায় আছে, একটি লোক বলল, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমাকে এমন একটি আমল বাতলে দিন, যা জিহাদের সমতুল্য হবে।’ তিনি বললেন, “আমি এ ধরনের আমল তো পাচ্ছি না।” তারপর তিনি বললেন, “তুমি কি এরূপ করতে পারবে যে, মুজাহিদ যখন বের হয়ে যাবে, তখন থেকে তুমি মসজিদে ঢুকে অ-ক্লান্তভাবে নামাযে নিমগ্ন হবে এবং অবিরাম রোযা রাখবে।” সে বলল, ‘ও কাজ কে করতে পারবে?’  
عن أبي هريرة -رضي الله عنه- قال: قيل: يا رسول الله، ما يعدل الجهاد في سبيل الله؟ قال: «لا تستطيعونه» فأعادوا عليه مرتين أو ثلاثًا كل ذلك يقول: «لا تستطيعونه»! ثم قال: «مثل المجاهد في سبيل الله كمثل الصائم القائم القانت بآيات الله لا يَفْتُرُ من صيام، ولا صلاة، حتى يرجع المجاهد في سبيل الله». وفي رواية البخاري: أن رجلاً قال: يا رسول الله، دلني على عمل يعْدِلُ الجهاد؟ قال: «لا أجده» ثم قال: «هل تستطيع إذا خرج المجاهد أن تدخل مسجدك فتقوم ولا تفتر، وتصوم ولا تفطر»؟ فقال: «ومن يستطيع ذلك؟!»

شرح الحديث :


এই হাদীসের দু’টি বর্ণনাতেই সাহাবীগণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এমন কিছু নেক আমল ও আনুগত্য সম্পর্কে প্রশ্ন করেছে, যা প্রতিদান ও সাওয়াবের ক্ষেত্রে জিহাদের সমান। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “তোমরা সেটি করতে পারবে না।” অর্থাৎ যে আমল জিহাদের সমান সেটা করার ক্ষমতা তোমাদের নেই। তারা প্রশ্নটি দু’বার অথবা তিন বার পুনরাবৃত্তি করলো। প্রতিবারেই তিনি বললেন: “তোমরা সেটা করতে পারবে না।” অতঃপর যে আমলটি তারা করতে পারবে না, তিনি সেটার বর্ণনা দিলেন। আর তা হচ্ছে ক্লান্তিহীন ও বিরতিহীনভাবে সিয়াম পালন করা, কিয়ামুল লাইল ও কুরআন তিলাওয়াত করা। নি:সন্দেহে এরূপ করার ক্ষমতা মানুষের নেই। এ জন্যই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শুরুতেই বলেছেন, “তোমরা সেটা করতে পারবে না।” সহীহ বুখারীর এক বর্ণনায় এসেছে যে, জনৈক সাহাবী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে আবেদন করল, তিনি যেন তাকে এমন একটি আমল বলে দেন, যা মর্যাদা, সম্মান, সাওয়াব ও মহাবিনিময়ের ক্ষেত্রে জিহাদের মতই। তিনি তখন বললেন, আমি এমন কোনো আমল আমি দেখছি না, যা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের সমান হতে পারে। সহীহ বুখারী ও মুসলিমের বর্ণনায় এসেছে যে, “আল্লাহর রাস্তায় এক সকাল অথবা এক বিকাল সফর করা দুনিয়া ও তার মধ্যকার সবকিছু থেকে উত্তম।” অতঃপর তিনি বলেন, “মুজাহিদ যখন আল্লাহর রাস্তায় বের হয়, তখন কি তুমি মসজিদে প্রবেশ করে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করতে পারবে, কিন্তু ক্লান্ত হবে না এবং একাধারে সিয়াম পালন করতে পারবে, কিন্তু কখনো সিয়াম ছাড়বে না?” অর্থাৎ আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের উদ্দেশ্যে মুজাহিদ ঘর থেকে বের হওয়ার পর থেকে তুমি কি মসজিদে প্রবেশ করে সেখানে এবাদতের জন্য স্থায়ীভাবে অবস্থান ও নিরবিচ্ছিন্নভাবে সালাত আদায় করতে পারবে এবং বিরতিহীনভাবে সিয়াম পালন করতে পারবে? এরূপ করা যদি সম্ভব হয়, তাহলে এটাই জিহাদের সমতুল্য হবে। লোকটি তখন বলল, “এরূপ করতে কে পারবে?” অর্থাৎ বিরতিহীনভাবে সালাত আদায় ও একাধারে সিয়াম পালন করার ক্ষমতা কে রাখে? নি:সন্দেহে এটি মানুষের সমর্থের বাইরে।  

ترجمة نص هذا الحديث متوفرة باللغات التالية