البحث

عبارات مقترحة:

المهيمن

كلمة (المهيمن) في اللغة اسم فاعل، واختلف في الفعل الذي اشتقَّ...

المتين

كلمة (المتين) في اللغة صفة مشبهة باسم الفاعل على وزن (فعيل) وهو...

العلي

كلمة العليّ في اللغة هي صفة مشبهة من العلوّ، والصفة المشبهة تدل...

জারীর ইবনে আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমরা দিনের প্রথম ভাগে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট ছিলাম। অতঃপর তাঁর নিকট কিছু লোক এল, যাদের দেহ বিবস্ত্র ছিল, পশমের ডোরা কাটা চাদর (মাথা প্রবেশের মত জায়গা মাঝখানে কেটে) পরে ছিল অথবা ‘আবা’ (আংরাখা) পরে ছিল, তরবারি তারা নিজেদের গর্দানে ঝুলিয়ে রেখেছিল। তাদের অধিকাংশ মুধার গোত্রের (লোক) ছিল; বরং তারা সকলেই মুধার গোত্রের ছিল। তাদের দরিদ্রতা দেখে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর চেহারা পরিবর্তন হয়ে গেল। সুতরাং তিনি (বাড়ির ভিতর) প্রবেশ করলেন এবং পুনরায় বের হলেন। তারপর তিনি বেলালকে (আযান দেওয়ার) আদেশ করলেন। ফলে তিনি আযান দিলেন এবং ইকামত দিলেন। অতঃপর তিনি সালাত আদায় করে লোকদেরকে (সম্বোধন ক’রে) ভাষণ দিলেন। তিনি বললেন, “হে মানব সম্প্রদায়! তোমরা তোমাদের রবকে ভয় কর, যিনি তোমাদের এক ব্যক্তি হতে সৃষ্টি করেছেন ও তা হতে তার সঙ্গিনী সৃষ্টি করেছেন, যিনি তাদের দু’জন থেকে বহু নরনারী (পৃথিবীতে) বিস্তার করেছেন। সেই আল্লাহকে ভয় কর, যার নামে তোমরা একে অপরের নিকট যাচ্ঞা কর এবং জ্ঞাতি-বন্ধন ছিন্ন করাকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের উপর তীব্র দৃষ্টি রাখেন।” (সূরা নিসা, আয়াত: ১) অতঃপর দ্বিতীয় আয়াত যেটি সূরা হাশরের শেষে আছে সেটি পাঠ করলেন, “হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। আর প্রত্যেকেই ভেবে দেখুক যে, আগামীকালের (কিয়ামতের) জন্য সে কি অগ্রিম পাঠিয়েছে। তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় তোমরা যা কর আল্লাহ সে সম্পর্কে অবহিত।” (সূরা হাশর, আয়াত: ১৮) “সুতরাং প্রত্যেক ব্যক্তি যেন নিজ দীনার (স্বর্ণমুদ্রা), দিরহাম (রৌপ্যমুদ্রা), কাপড়, এক সা’ গম ও এক সা’ খেজুর থেকে সাদকাহ করে।” এমনকি তিনি বললেন, “খেজুরের আধা টুকরা হলেও (তা যেন দান করে)।” সুতরাং আনসারদের একটি লোক (চাঁদির) একটি থলে নিয়ে এল, লোকটির করতল যেন তা ধারণ করতে পারছিল না; বরং তা ধারণ করতে অক্ষমই ছিল। অতঃপর (তা দেখে) লোকেরা পরস্পর সদকা আনতে আরম্ভ করল। এমনকি খাদ্য সামগ্রী ও কাপড়ের দু’টি স্তূপ দেখলাম। পরিশেষে আমি দেখলাম যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর চেহারা যেন সোনার মত ঝলমল করছে। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “যে ব্যক্তি ইসলামে ভাল রীতি চালু করবে, সে তার নিজের এবং ঐ সমস্ত লোকের সওয়াব পাবে, যারা তার (মৃত্যুর) পর তার উপর আমল করবে। তাদের সওয়াবের কিছু পরিমাণও কম করা হবে না। আর যে ব্যক্তি ইসলামে কোন মন্দ রীতির প্রচলন করবে, তার উপর তার নিজের এবং ঐ লোকদের গোনাহ বর্তাবে, যারা তার (মৃত্যুর) পর তার উপর আমল করবে। তাদের গোনাহর কিছু পরিমাণও কম করা হবে না।”

شرح الحديث :

যে ব্যক্তি ইসলামের মধ্যে কোন ভালো কাজ চালু করে তার জন্য রয়েছে তার সাওয়াব এবং যে তার ওপর আমল করবে তারও সাওয়াব। এ অধ্যায়ে জারীর ইবন আব্দুল্লাহ আল-বাজালী রাদিয়াল্লাহু আনহুর একটি হাদীস সংকলক উল্লেখ করেন। এটি একটি মহান হাদীস যাতে উম্মতের প্রতি রাসূলের আগ্রহ ও দয়ার কথা সুস্পষ্ট প্রমাণিত হয়। একদা তারা দিনের প্রথম ভাগে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে ছিলেন। অতঃপর তাঁর নিকট কিছু লোক এল, যাদের অধিকাংশ মুধার গোত্রের (লোক) ছিল; বা তারা সকলেই মুধার গোত্রের ছিল। পশমের ডোরা কাটা চাদর পরে ছিল অথবা ‘আবা’ (আংরাখা) পরে ছিল, তরবারি তারা নিজেদের গর্দানে ঝুলিয়ে রেখেছিল। অর্থাৎ একজন মানুষ তার ওপর শুধু তার কাপড়টি ছিল যা দ্বারা সে তার সতর ডেকেছিল। যেটিকে সে তার গর্দনের সাথে বেঁধে ঝুলিয়ে ছিল। তাদের সাথে ছিল নির্দেশিত জিহাদের প্রস্তুতি হিসেবে ঝুলন্ত তলোয়ার। তাদের দরিদ্রতা দেখে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর চেহারা পরিবর্তন হয়ে গেল। অথচ তারা আরবের সম্ভ্রান্ত গোত্র মুধার গোত্রের লোক। অথচ তাদের অভাব অনটন এ পর্যায়ে নেমে এসেছে। তারপর তিনি (বাড়ির ভিতর) প্রবেশ করলেন এবং পুনরায় বের হলেন। তারপর তিনি বেলালকে (আযান দেওয়ার) আদেশ করলেন। ফলে তিনি আযান দিলেন এবং ইকামত দিলেন। অতঃপর তিনি সালাত আদায় করে লোকদেরকে (সম্বোধন ক’রে) ভাষণ দিলেন। তার অভ্যাস অনুযায়ী তিনি প্রথমে আল্লাহর প্রশংসা করলেন। তারপর আল্লাহর বাণী পড়লেন যাতে আল্লাহ বলেন, “হে মানব সম্প্রদায়! তোমরা তোমাদের রবকে ভয় কর, যিনি তোমাদের এক ব্যক্তি হতে সৃষ্টি করেছেন ও তা হতে তার সঙ্গিনী সৃষ্টি করেছেন, যিনি তাদের দু’জন থেকে বহু নরনারী (পৃথিবীতে) বিস্তার করেছেন। সেই আল্লাহকে ভয় কর, যার নামে তোমরা একে অপরের নিকট যাচ্ঞা কর এবং জ্ঞাতি-বন্ধন ছিন্ন করাকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের উপর তীব্র দৃষ্টি রাখেন।” (সূরা নিসা, আয়াত: ১) অতঃপর দ্বিতীয় আয়াত যেটি সূরা হাশরের শেষে আছে সেটি পাঠ করলেন, “হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। আর প্রত্যেকেই ভেবে দেখুক যে, আগামীকালের (কিয়ামতের) জন্য সে কি অগ্রিম পাঠিয়েছে। তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় তোমরা যা কর আল্লাহ সে সম্পর্কে অবহিত।” (সূরা হাশর, আয়াত: ১৮) তারপর তিনি দান করার ওপর উৎসাহ দেন এবং তিনি বলেন, “সুতরাং প্রত্যেক ব্যক্তি যেন নিজ দীনার (স্বর্ণমুদ্রা), দিরহাম (রৌপ্যমুদ্রা), কাপড়, এক সা’ গম ও এক সা’ খেজুর থেকে সাদকাহ করে।” এমনকি তিনি বললেন, “খেজুরের আধা টুকরা হলেও (তা যেন দান করে)।” সাহাবীগণ কল্যাণকর কর্মের প্রতি ছিলেন খুব লালায়িত, সর্বাধিক তাড়াহুড়াকারী এবং কঠিন প্রতিযোগীতাকারী। তাই তারা তাদের নিজ নিজ গৃহে চলে গেল এবং বিভিন্ন দান খয়রাত নিয়ে চলে আসল। সুতরাং একটি লোক একটি চাঁদির থলে নিয়ে এল, লোকটির করতল যেন তা ধারণ করতে পারছিল না; বরং তা ধারণ করতে অক্ষমই ছিল। অতঃপর সে তা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সামনে রাখলো। (তা দেখে লোকেরা পরস্পর দান আনতে আরম্ভ করল।) অতঃপর জারীর রাদিয়াল্লাহু আনহু খাদ্য সামগ্রী ও কাপড় ইত্যাদির দু’টি স্তূপ দেখতে পেলেন যা মসজিদে একত্র করা হয়েছে। পরিশেষে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর চেহারা পরিবর্তন হওয়ার পর আবার উজ্জল হয়ে গেল সোনার মত ঝলমল করছে। সাহাবীদের মধ্যে দানের প্রতিযোগীতা যা এ সব অভাবীদের অভাব দূর করবে তা দেখে অত্যধিক খুশিতে তার চেহারা উজ্জল হল এবং ঝলমল করছিল। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “যে ব্যক্তি ইসলামে ভাল রীতি চালু করবে, সে তার নিজের এবং ঐ সমস্ত লোকের সওয়াব পাবে, যারা তার (মৃত্যুর) পর তার উপর আমল করবে। তাদের সওয়াবের কিছু পরিমাণও কম করা হবে না। আর যে ব্যক্তি ইসলামে কোন মন্দ রীতির প্রচলন করবে, তার উপর তার নিজের এবং ঐ লোকদের গোনাহ বর্তাবে, যারা তার (মৃত্যুর) পর তার উপর আমল করবে। তাদের গোনাহর কিছু পরিমাণও কম করা হবে না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী-যে ব্যক্তি ইসলামে কোন একটি সুন্নাত চালু করবে-তে সুন্নাহ দ্বারা উদ্দেশ্য সুন্নাতের ওপর প্রথমে আমল করা আরম্ভ করবে। এখানে আবিষ্কার করা উদ্দেশ্য নয়। কারণ, যে ব্যক্তি ইসলামে এমন কিছু আবিষ্কার করবে যা ইসলামের অন্তর্ভুক্ত নয় তা প্রত্যাখ্যাত। তা সুন্দর নয়। বরং এখানে চালু করা দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, অর্থাৎ তারা সর্বপ্রথম আমল করা আরম্ভ করল। যেমন এ হাদীসে বর্ণিত সাহাবী রাদিয়াল্লাহু আনহুর মতো যিনি একটি থলে নিয়ে আসলেন। এতে প্রমাণিত হয়, যখন কোন মানুষকে কোন একটি সুন্নাত চালু করার তাওফীক দেওয়া হয় সে সাওয়াবে বরাবর হবে চাই তা মারা যাওয়ার পর জীবিত করুক বা তার প্রতি পথ দেখাক।


ترجمة هذا الحديث متوفرة باللغات التالية