আয়েয ইবন আমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু উবাইদুল্লাহ ইবনে যিয়াদের নিকট গেলেন। অতঃপর তিনি (উপদেশ স্বরূপ) বললেন, “হে বৎস, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, নিশ্চয় প্রজাদের ব্যাপারে কঠোর শাসকরাই নিকৃষ্টতম শাসক। সুতরাং তুমি তাদের দলভুক্ত হবে না”। যিয়াদ তাঁকে বলল, ‘আপনি বসুন, আপনি তো মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাহাবীদের চালা আটার অবশিষ্ট ভুসি (অপদার্থ)!’ তিনি বললেন, ‘তাঁদের মধ্যেও কি ভুসি আছে? (কখনই না।) বরং ভুসি তো তাঁদের পরবর্তী এবং তাঁরা ছাড়া অন্যদের মধ্যে আছে।’
شرح الحديث :
আয়েয ইবন আমর রাদিয়াল্লাহ আনহু উবাইদুল্লাহ ইবন যিয়াদ যিনি তার পিতার পর ইরাকীদের আমীর ছিলেন তার নিকট প্রবেশ করলেন এবং বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি। নিশ্চয় নিকৃষ্টতম শাসক হচ্ছে প্রজাদের ওপর কঠোর শাসক। এখানে হুতামাহ হচ্ছে সে, যে উট হাঁকানোর সময়, পানি পান করাতে নিয়ে যাওয়া ও তার থেকে নিয়ে আসার সময় দেখা-শোনার ক্ষেত্রে কঠোর এবং একটির ওপর অপরটি নিক্ষেপ করে ও তাদের সাথে খারাপ আচরণ করে। তার সামনে তিনি খারাপ শাসকের একটি উদাহরণ পেশ করেছেন। এ দ্বারা উদ্দেশ্য “কাসী” শব্দ (অর্থ নির্দয়) যে তাদের ওপর জুলুম করে, তাদের প্রতি নমনীয়তা ও দয়া করে না। আর তার বাণী, “সুতরাং তুমি তাদের দলভুক্ত হয়ো না”। এটি ইবনে যিয়াদের প্রতি আয়েযের উপদেশ। এরপর ইবন যিয়াদ এ ছাড়া আর কিছু বলল না যে, “আপনি তো মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাহাবীদের চালা আটার অবশিষ্ট ভুসি (অপদার্থ)”! অর্থাৎ, তুমি তাদের সম্মানীত, আলেম ও মর্যাদাশীল ব্যক্তিদের কেউ নয়, বরং তুমি তাদের পরিত্যক্তদের থেকে। আর “নাখালা” এখানে গমের ভুসির রূপক শব্দ। আর তা হলো বাকল। আর নাখালা, হাকালা আর হাসালা একই অর্থবোধক শব্দ। তার বাণী: “বিশিষ্ট সাহাবী তার উত্তর দেন। ‘তাঁদের মধ্যেও কি ভুসি আছে? (কখনই না।) বরং ভুসি তো তাঁদের পরবর্তী এবং তাঁরা ছাড়া অন্যদের মধ্যে আছে”। এটি বড় কথা এবং তার স্পষ্ট ভাষা ও সততা, যা প্রতিটি মুসলিম মেনে নেয়। কারণ, সাহাবীগণ সবাই সমস্ত মানুষ থেকে শ্রেষ্ঠ, উম্মতের সরদার এবং তাদের পরবতীদের থেকে উত্তম। আর তারা সবাই ইনসাফগার তাদের মধ্যে কোন ভুসি নেই। তবে গোজামিল এসেছে যারা তাদের পরে তাদের থেকে বা তাদের মধ্যে।