نبينا محمد صلى الله عليه وسلم
জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহুমা হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: আমাকে এমন পাঁচটি বিষয় দান করা হয়েছে, যা আমার পূর্বে কাউকে দেওয়া হয়নি। (১) আমাকে এমন প্রভাব দিয়ে সাহায্য করা হয়েছে যে, একমাস দূরত্বেও তা প্রতিফলিত হয়; (২) সমস্ত যমীন আমার জন্য পবিত্র ও সালাত আদায়ের উপযোগী করা হয়েছে। কাজেই আমার উম্মতের যে কোন লোক ওয়াক্ত হলেই সালাত আদায় করতে পারবে; (৩) আমার জন্য গানীমাতের মাল হালাল করে দেওয়া হয়েছে, যা আমার পূর্বে আর কারো জন্য হালাল করা হয়নি; (৪) আমাকে (ব্যাপক) শাফা‘আতের অধিকার দেয়া হয়েছে; (৫) সমস্ত নবী প্রেরিত হতেন কেবল তাঁদের সম্প্রদায়ের জন্য, আর আমাকে প্রেরণ করা হয়েছে সমগ্র মানব জাতির জন্য”।  
عن جابر بن عبد الله -رضي الله عنهما- أنّ النبيَّ -صلى الله عليه وسلم- قال: «أُعْطِيتُ خمسا, لم يُعْطَهُنَّ أحد من إلى قومه المؤمنين الموافقين له، بشريعة مَن قبلَه من الرُّسل"> الأنبياء قبلي: نُصِرْتُ بالرعب مسيرة شهر, وجُعِلَت لي الأرض مسجدا وطَهُورا, فأَيَّمَا رجل من أمتي أدركته الصلاة فَلْيُصَلِّ, وأُحِلَّت لي المغانم, ولم تحلَّ لأحد قبلي, وأُعْطِيتُ الشفاعة، وكان النبي يُبْعَثُ إلى قومه خاصة, وبُعِثتُ إلى الناس عامَة».

شرح الحديث :


সমস্ত নবীদের থেকে আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কিছু উন্নত বৈশিষ্ট দ্বারা খাস করা হয়েছে। আর এমন কিছু গুণ দ্বারা আলাদা করা হয়েছে যা তার পূর্বের নবীগণের কাউকে দেওয়া হয়নি। সুতরাং এ উম্মতে মুহাম্মদী এ মহান নবীর বরকতে কিছু উন্নত ও গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট লাভ করল। তার মধ্য হতে যে পাঁচটি মহান চরিত্রের কথা এ হাদীসে উল্লেখ করা হলো। প্রথম: আল্লাহ তা‘আলা তাকে তার দুশমনদের ওপর সাহায্য ও সহযোগীতা করেছেন প্রভাব দিয়ে। তার প্রভাব তাদের দুর্বল করে ফেলত এবং তাদের কাতার ভেঙ্গে দিত, যদিও সে তাদের থেকে একমাসের পথের দূরত্বে অবস্থান করত। এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে তার নবীর প্রতি সাহায্য ও সহযোগীতা এবং তার দীনের দুশমনদের অপমান ও লাঞ্চনা। আর নিঃসন্দেহে বলা যায় এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে বড় ধরনের সহযোগীতা। দ্বিতীয়: আল্লাহ তা‘আলা এ সম্মানীত নবী ও তার মারহুম উম্মতের প্রতি দয়া করেন যে, তাদের জন্য সমস্ত যমীনকে পবিত্র ও সালাত আদায়ের উপযোগী করে দেন। কাজেই আমার উম্মতের যে কোন লোক যেখানেই সালাতের ওয়াক্ত পাবে সেখানেই সালাত আদায় করতে পারবে; সুতরা তাদের সালাত কোন বিশেষ জায়াগার সাথে খাস নয় যেমনটি ছিল তাদের পূর্বের উম্মতদের জন্য তারা তাদের ইবাদত উপাসানালয় ও গীর্জা ছাড়া কোথাও আদায় করতে পারত না। আল্লাহ তা‘আলা দয়া ও ইহসান এবং সম্মান ও অনুগ্রহ করে এ উম্মাত থেকে কষ্ট ও সংকীর্ণতাকে দূর করে দিয়েছেন। অনুরূপভাবে আগেকার উম্মতগণ পানি ছাড়া অন্য কিছু দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করতে পারত না। আর এ উম্মাতের কেউ যদি পানি না পায় বা পানি ব্যবহারে অক্ষম তার জন্য মাটিকে পবিত্র করে দেওয়া হয়েছে। তৃতীয়: যে সব গণীমাতের মালা কাফির ও মুশরিকদের কাছ থেকে নেওয়া হতো তা নবী সাল্লাল্লাহু আল্লাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার উম্মাতের জন্য হালাল। যদিও তা পূর্বের নবীগণ ও তাদের উম্মতদের জন্য হারাম ছিল। তারা তা একটি স্থানে একত্র করতেন যদি তাদের আমল কবুল হতো তার ওপর আসমান থেকে আগুন নাযিল হতো এবং তা জ্বালিয়ে দিত। চার: যেদিন মহান সম্মানিত রাসূলগণ কিয়ামতের ভয়াবহতার মধ্যে পিছু হটবে সেদিন আল্লাহ তা‘আলা তাকে মাকামে মাহমুদ ও ব্যাপক সাফা‘আতের অধিকার দ্বারা খাস করেছেন। তিনি বলবেন আমিই তার জন্য। তিনি আরশের নীচে সেজদা করবেন, আল্লাহর উপযুক্ত প্রশংসা করবেন। তখন তাকে বলা হবে তুমি সুপারিশ কর তোমার সুপারিশ কবুল করা হবে আর চাও তোমাকে দেওয়া হবে। তখন তিনি এ দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় মাখলুকের প্রতি দয়া করার আল্লাহর কাছে সাফায়াত কামনা করবেন। একেই বলা হয় মাকামে মাহমুদ যার প্রতি প্রথম ও শেষের সবাই আগ্রহ দেখাবেন। পাঁচ: পূর্বের সমস্ত নবী প্রেরিত হতেন কেবল তাঁদের সম্প্রদায়ের লোকদের দাওয়াত দেওয়ার জন্য। আর আল্লাহ তা‘আলা এ শরী‘আতকে প্রত্যেক যুগ ও স্থানের জন্য নির্ধারণ করেছেন। আর যেহেতু এ শরী‘আত পরিপূর্ণ উপযুক্ত তাই এ শরী‘আতই হলো শেষ। কারণ, এতে কোন বাড়ানোর প্রয়োজন নেই এবং তাতে কোন ঘাটতি নেই। আর এ শরী‘আতকে তিনি ব্যাপক করেছেন কারণ, তাতে রয়েছে চিরস্থায়ী হওয়া ও বাকী থাকার সব উপাদান।  

ترجمة نص هذا الحديث متوفرة باللغات التالية