العفو
كلمة (عفو) في اللغة صيغة مبالغة على وزن (فعول) وتعني الاتصاف بصفة...
সাওবান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে মারফু‘ সূত্রে বর্ণিত, “তোমার ওপর কর্তব্য হচ্ছে আল্লাহর জন্য বেশি বেশি সাজদাহ করা। কেননা তুমি যখনই আল্লাহর জন্য একটি সাজদাহ করবে, আল্লাহ তা‘আলা এর বিনিময়ে তোমার মর্যাদা একধাপ বৃদ্ধি করে দিবেন এবং এর বিনিময়ে তোমার একটি গুনাহ মাফ করে দিবেন।”
হাদীসটি বর্ণনার কারণ হলো: মা‘দান ইবন তালহা বলেন, আমি রাসূলুল্লাহু সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের আযাদকৃত গোলাম সাওবান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর সাথে সাক্ষাৎ করলাম। আমি বললাম, আমাকে এমন একটি কাজের কথা বলে দিন যা করলে আল্লাহ আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন অথবা (বর্ণনাকারীর সন্দেহ) তিনি বলেছেন, আমি আল্লাহর প্রিয়তম ও পছন্দনীয় কাজের কথা জিজ্ঞেস করলাম। কিন্তু তিনি চুপ থাকলেন। আমি পুনরায় জিজ্ঞেস করলাম। এবারও তিনি নীরব থাকলেন। আমি তৃতীয়বার জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, আমি এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহু সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করেছিলাম। তিনি বলেছিলেন: তোমার ওপর কর্তব্য হচ্ছে...অতঃপর তিনি উপরোক্ত হাদীসটি বলেন। হাদীসের শেষাংশে রয়েছে, মা’দান রহ. বলেন, অতঃপর আমি আবুদ দারদা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর সাথে সাক্ষাৎ করে তাকে জিজ্ঞেস করলাম। সাওবান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু আমাকে যা বলেছেন, তিনিও তাই বললেন। হাদীসে আগত রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী, “তোমার ওপর কর্তব্য হচ্ছে আল্লাহর জন্য বেশি বেশি সাজদাহ করা” অর্থাৎ সর্বদা বেশি বেশি সাজদাহ করবে। কেননা তুমি যখনই আল্লাহর জন্য একটি সাজদাহ করবে, আল্লাহ তা‘আলা এর বিনিময়ে তোমার মর্যাদা একধাপ বৃদ্ধি করে দিবেন এবং তোমার একটি গুনাহ মাফ করে দিবেন।” এ হাদীসটি রাবী‘আ ইবন কা‘ব আল-আসলামী রাদিয়াল্লাহ ‘আনহুর হাদীসের ন্যায়। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলেছিলেন, আমি আপনার সাথে জান্নাতে থাকতে চাই। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বলেছিলেন, “তাহলে তুমি অধিক পরিমাণে সাজদাহ করে তোমার নিজের স্বার্থেই আমাকে সাহায্য কর।” (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৪৮৯) উবাদা ইবন সামিত রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন, “যখন কোনো বান্দা আল্লাহর জন্য একটি সাজদাহ করে আল্লাহ এর বিনিময়ে তাকে একটি সাওয়াব দান করেন, তার একটি গুনাহ মাফ করেন এবং তার মর্যাদা এক ধাপ উন্নিত করেন। অতএব তোমরা অধিক সংখ্যায় সাজদাহ করো।” (ইবন মাজাহ, হাদীস নং ১৪২৪, আলবানী রহ. হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন)। অতএব, আল্লাহকে সাজদাহ করা সবচেয়ে বড় আনুগত্য ও তাঁর নৈকট্য লাভের সর্বোচ্চ উপায়। কেননা এতে রয়েছে সর্বাধিক বিনয় ও আল্লাহর দাসত্ব প্রকাশ। এতে মানুষের সবচেয়ে সম্মানিত অঙ্গ চেহারা মাটিতে মিশিয়ে ব্যক্তির হীনতা প্রকাশ করা হয়। এখানে সাজদাহ দ্বারা উদ্দেশ্য হলো সালাতের অনুগামী হয়ে সাজদাহ প্রদান করা; শুধু সাজদাহ করা উদ্দেশ্য নয়। কেননা সালাত ব্যতীত শুধু সাজদাহ করা জায়েয নেই, যেহেতু এভাবে সাজদাহ করা শরী‘আতে প্রমাণিত নয়। আর ইবাদতের ক্ষেত্রে মূল হলো নিষেধ হওয়া এবং মানা করা। তবে যেসব সাজদাহ করার জন্য বিশেষ কারণ আছে তা এ নিষেধাজ্ঞার বাইরে, যেমন তিলাওয়াতের সাজদাহ, শুকরিয়ার সাজদাহ ইত্যাদি, শরী‘আতে এসব সাজদাহ সাব্যস্ত হয়েছে। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেশি পরিমাণে সাজদাহ করলে কী সাওয়াব হবে তা বর্ণনা করেছেন। আর তা হলো, দু’টি মহা উপকারিতা। প্রথম উপকারিতা হলো আল্লাহ তার মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন। অর্থাৎ তাঁর কাছে বান্দার মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন এবং মানুষের অন্তরেও। এমনিভাবে তোমার ভালো কাজের দ্বারা আল্লাহ তোমার মর্যাদা বাড়িয়ে দিবেন। আর দ্বিতীয় উপকারিতা হলো এর বিনিময়ে তার গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। মানুষের পূর্ণতাপ্রাপ্তি তখনই হয়, যখন যা সে অপছন্দ করে তা দূরীভূত হয় আর যা সে পছন্দ করে তা প্রাপ্ত হয়। সুতরাং তার মর্যাদা বৃদ্ধি পাওয়া সে পছন্দ করে আর গুনাহকে সে অপছন্দ করে। তাই যখন তার মর্যাদা বৃদ্ধি পায় ও গুনাহ মাফ হয় তখন তার উদ্দেশ্য অর্জিত হয় এবং ভীতিকর অবস্থা থেকে মুক্তি পায়।