القلم

تفسير سورة القلم

الترجمة البنغالية

বাংলা

الترجمة البنغالية

ترجمة معاني القرآن الكريم للغة البنغالية ترجمها د. أبو بكر محمد زكريا، نشرها مجمع الملك فهد لطباعة المصحف الشريف بالمدينة المنورة. عام الطبعة 1436هـ.

﴿بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ ن ۚ وَالْقَلَمِ وَمَا يَسْطُرُونَ﴾

নূন---শপথ কলমের [১] এবং তারা যা লিপিবদ্ধ করে তার,

﴿مَا أَنْتَ بِنِعْمَةِ رَبِّكَ بِمَجْنُونٍ﴾

আপনার রবের অনুগ্রহে আপনি উন্মাদ নন।

﴿وَإِنَّ لَكَ لَأَجْرًا غَيْرَ مَمْنُونٍ﴾

আর নিশ্চয় আপনার জন্য রয়েছে নিরবচ্ছিন্ন পুরস্কার,

﴿وَإِنَّكَ لَعَلَىٰ خُلُقٍ عَظِيمٍ﴾

আর নিশ্চয় আপনি মহান চরিত্রের উপর রয়েছেন [১] ।

﴿فَسَتُبْصِرُ وَيُبْصِرُونَ﴾

অতঃপর অচিরেই আপনি দেখবেন এবং তারাও দেখবে - - -

﴿بِأَيْيِكُمُ الْمَفْتُونُ﴾

তোমাদের মধ্যে কে বিকারগ্রস্ত [১]।

﴿إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعْلَمُ بِمَنْ ضَلَّ عَنْ سَبِيلِهِ وَهُوَ أَعْلَمُ بِالْمُهْتَدِينَ﴾

নিশ্চয় আপনার রব সম্যক অবগত আছেন কে তাঁর পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে এবং তিনি সম্যক জানেন তাদেরকে, যারা হিদায়াতপ্রাপ্ত।

﴿فَلَا تُطِعِ الْمُكَذِّبِينَ﴾

কাজেই আপনি মিথ্যারোপকারীদের আনুগত্য করবেন না।

﴿وَدُّوا لَوْ تُدْهِنُ فَيُدْهِنُونَ﴾

তারা কামনা করে যে, আপনি আপোষকামী হোন, তাহলে তারাও আপোষকামী হবে,

﴿وَلَا تُطِعْ كُلَّ حَلَّافٍ مَهِينٍ﴾

আর আপনি আনুগত্য করবেন না প্ৰত্যেক এমন ব্যক্তির যে অধিক শপথ কারী, লাঞ্ছিত,

﴿هَمَّازٍ مَشَّاءٍ بِنَمِيمٍ﴾

পিছনে নিন্দাকারী, যে একের কথা অন্যের কাছে লাগিয়ে বেড়ায় [১] ,

﴿مَنَّاعٍ لِلْخَيْرِ مُعْتَدٍ أَثِيمٍ﴾

কল্যাণের কাজে বাধা দানকারী, সীমালঙ্ঘনকারী, পাপিষ্ঠ,

﴿عُتُلٍّ بَعْدَ ذَٰلِكَ زَنِيمٍ﴾

রূঢ় স্বভাব [১] এবং তদুপরি কুখ্যাত [২];

﴿أَنْ كَانَ ذَا مَالٍ وَبَنِينَ﴾

এজন্যে যে, সে ধন-সম্পদ ও সন্তান – সন্ততিতে সমৃদ্ধশালী।

﴿إِذَا تُتْلَىٰ عَلَيْهِ آيَاتُنَا قَالَ أَسَاطِيرُ الْأَوَّلِينَ﴾

যখন তার কাছে আমাদের আয়াতসমূহ তেলাওয়াত করা হয় তখন সে বলে, ‘এ তো পূর্ববতীদের কল্প-কাহিনী মাত্ৰ।’

﴿سَنَسِمُهُ عَلَى الْخُرْطُومِ﴾

আমরা অবশ্যই তার শুঁড় দাগিয়ে দেব।

﴿إِنَّا بَلَوْنَاهُمْ كَمَا بَلَوْنَا أَصْحَابَ الْجَنَّةِ إِذْ أَقْسَمُوا لَيَصْرِمُنَّهَا مُصْبِحِينَ﴾

আমরা তো তাদেরকে পরীক্ষা করেছি [১] , যেভাবে পরীক্ষা করেছিলাম উদ্যান-অধিপতিদেরকে, যখন তারা শপথ করেছিল যে, তারা প্ৰত্যুষে আহরণ করবে বাগানের ফল,

﴿وَلَا يَسْتَثْنُونَ﴾

এবং তারা ‘ইন্শাআল্লাহ্’ বলেনি।

﴿فَطَافَ عَلَيْهَا طَائِفٌ مِنْ رَبِّكَ وَهُمْ نَائِمُونَ﴾

অতঃপর আপনার রবের কাছ থেকে এক বিপর্যয় হানা দিল সে উদ্যানে, যখন তারা ছিল ঘুমন্ত।

﴿فَأَصْبَحَتْ كَالصَّرِيمِ﴾

ফলে তা পুড়ে গিয়ে কালোবর্ণ ধারণ করল।

﴿فَتَنَادَوْا مُصْبِحِينَ﴾

প্রত্যুষে তারা একে অন্যকে ডেকে বলল,

﴿أَنِ اغْدُوا عَلَىٰ حَرْثِكُمْ إِنْ كُنْتُمْ صَارِمِينَ﴾

‘তোমরা যদি ফল আহরণ করতে চাও তবে সকাল সকাল তোমাদের বাগানে চল।’

﴿فَانْطَلَقُوا وَهُمْ يَتَخَافَتُونَ﴾

তারপর তারা চলল নিম্নস্বরে কথা বলতে বলতে,

﴿أَنْ لَا يَدْخُلَنَّهَا الْيَوْمَ عَلَيْكُمْ مِسْكِينٌ﴾

‘আজ সেখানে যেন তোমাদের কাছে কোন মিসকীন প্ৰবেশ করতে না পারে।’

﴿وَغَدَوْا عَلَىٰ حَرْدٍ قَادِرِينَ﴾

আর তারা নিবৃত্ত করতে সক্ষম ---- এ বিশ্বাস নিয়ে বাগানে যাত্রা করল।

﴿فَلَمَّا رَأَوْهَا قَالُوا إِنَّا لَضَالُّونَ﴾

অতঃপর তারা যখন বাগানের অবস্থা দেখতে পেল, তখন বলল, ‘নিশ্চয় আমরা পথ হারিয়ে ফেলেছি।’

﴿بَلْ نَحْنُ مَحْرُومُونَ﴾

‘বরং আমরা তো বঞ্চিত।’

﴿قَالَ أَوْسَطُهُمْ أَلَمْ أَقُلْ لَكُمْ لَوْلَا تُسَبِّحُونَ﴾

তাদের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি বলল, ‘আমি কি তোমাদেরকে বলিনি, এখনো তোমরা আল্লাহ্র পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করছনা কেন ?’

﴿قَالُوا سُبْحَانَ رَبِّنَا إِنَّا كُنَّا ظَالِمِينَ﴾

তারা বলল ‘আমরা আমাদের রবের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করছি, আমরা তো যালিম ছিলাম।”

﴿فَأَقْبَلَ بَعْضُهُمْ عَلَىٰ بَعْضٍ يَتَلَاوَمُونَ﴾

তারপর তারা একে অন্যের প্রতি দোষারোপ করতে লাগল।

﴿قَالُوا يَا وَيْلَنَا إِنَّا كُنَّا طَاغِينَ﴾

তারা বলল, ‘হায়, দুর্ভোগ আমাদের! আমরা তো ছিলাম সীমালঙ্ঘনকারী।

﴿عَسَىٰ رَبُّنَا أَنْ يُبْدِلَنَا خَيْرًا مِنْهَا إِنَّا إِلَىٰ رَبِّنَا رَاغِبُونَ﴾

সম্ভবতঃ আমাদের রব এ থেকে উৎকৃষ্টতর বিনিময় দেবেন; নিশ্চয় আমরা আমাদের রবের অভিমুখী হলাম।’

﴿كَذَٰلِكَ الْعَذَابُ ۖ وَلَعَذَابُ الْآخِرَةِ أَكْبَرُ ۚ لَوْ كَانُوا يَعْلَمُونَ﴾

শাস্তি এরূপই হয়ে থাকে এবং আখিরাতের শাস্তি কঠিনতর। যদি তারা জানত [১] !

﴿إِنَّ لِلْمُتَّقِينَ عِنْدَ رَبِّهِمْ جَنَّاتِ النَّعِيمِ﴾

নিশ্চয় মুত্তাকীদের জন্য রয়েছে নেয়ামতপূর্ণ জান্নাত তাদের রবের কাছে।

﴿أَفَنَجْعَلُ الْمُسْلِمِينَ كَالْمُجْرِمِينَ﴾

তবে কি আমরা মুসলিমদেরকে (অনুগতদেরকে) অপরাধীদের সমান গণ্য করব ?

﴿مَا لَكُمْ كَيْفَ تَحْكُمُونَ﴾

তোমাদের কী হয়েছে, তোমরা এ কেমন সিদ্ধান্ত দিচ্ছ ?

﴿أَمْ لَكُمْ كِتَابٌ فِيهِ تَدْرُسُونَ﴾

তোমাদের কাছে কি কোন কিতাব আছে যাতে তোমরা অধ্যয়ন কর ---

﴿إِنَّ لَكُمْ فِيهِ لَمَا تَخَيَّرُونَ﴾

যে, নিশ্চয় তোমাদের জন্য তাতে রয়েছে যা তোমরা পছন্দ কর ?

﴿أَمْ لَكُمْ أَيْمَانٌ عَلَيْنَا بَالِغَةٌ إِلَىٰ يَوْمِ الْقِيَامَةِ ۙ إِنَّ لَكُمْ لَمَا تَحْكُمُونَ﴾

অথবা তোমাদের কি আমাদের সাথে কিয়ামত পর্যন্ত বলবৎ এমন কোন অঙ্গীকার রয়েছে যে, তোমরা নিজেদের জন্য যা স্থির করবে তাই পাবে ?

﴿سَلْهُمْ أَيُّهُمْ بِذَٰلِكَ زَعِيمٌ﴾

আপনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করুন তাদের মধ্যে এ দাবির যিম্মাদার কে?

﴿أَمْ لَهُمْ شُرَكَاءُ فَلْيَأْتُوا بِشُرَكَائِهِمْ إِنْ كَانُوا صَادِقِينَ﴾

অথবা তাদের কি (আল্লাহ্র সাথে) অনেক শরীক আছে ? থাকলে তারা তাদের শরীকগুলোকে উপস্থিত করুক --- যদি তারা সত্যবাদী হয়।

﴿يَوْمَ يُكْشَفُ عَنْ سَاقٍ وَيُدْعَوْنَ إِلَى السُّجُودِ فَلَا يَسْتَطِيعُونَ﴾

স্মরণ করুন, সে দিনের কথা যেদিন পায়ের গোছা উন্মোচিত করা হবে [১], সেদিন তাদেরকে ডাকা হবে সিজদা করার জন্য, কিন্তু তারা সক্ষম হবে না;

﴿خَاشِعَةً أَبْصَارُهُمْ تَرْهَقُهُمْ ذِلَّةٌ ۖ وَقَدْ كَانُوا يُدْعَوْنَ إِلَى السُّجُودِ وَهُمْ سَالِمُونَ﴾

তাদের দৃষ্টি অবনত, হীনতা তাদেরকে আচ্ছন্ন করবে অথচ যখন তারা নিরাপদ ছিল তখন তো তাদেরকে ডাকা হত সিজদা করতে।

﴿فَذَرْنِي وَمَنْ يُكَذِّبُ بِهَٰذَا الْحَدِيثِ ۖ سَنَسْتَدْرِجُهُمْ مِنْ حَيْثُ لَا يَعْلَمُونَ﴾

অতএব ছেড়ে দিন আমাকে এবং যারা এ বাণীতে মিথ্যারোপ করে তাদেরকে, আমরা তাদেরকে ক্রমে ক্রমে ধরব এমনভাবে যে, তারা জানতে পারবে না।

﴿وَأُمْلِي لَهُمْ ۚ إِنَّ كَيْدِي مَتِينٌ﴾

আর আমি তাদেরকে সময় দিয়ে থাকি, নিশ্চয় আমার কৌশল অত্যন্ত বলিষ্ঠ।

﴿أَمْ تَسْأَلُهُمْ أَجْرًا فَهُمْ مِنْ مَغْرَمٍ مُثْقَلُونَ﴾

আপনি কি তাদের কাছে পারিশ্রমিক চাচ্ছেন যে, তা তাদের কাছে দুর্বহ দণ্ড মনে হয় ?

﴿أَمْ عِنْدَهُمُ الْغَيْبُ فَهُمْ يَكْتُبُونَ﴾

নাকি তাদের কাছে গায়েবের জ্ঞান আছে যে, তারা তা লিখে রাখে !

﴿فَاصْبِرْ لِحُكْمِ رَبِّكَ وَلَا تَكُنْ كَصَاحِبِ الْحُوتِ إِذْ نَادَىٰ وَهُوَ مَكْظُومٌ﴾

অতএব আপনি ধৈর্য ধারণ করুন আপনার রবের নির্দেশের অপেক্ষায়, আর আপনি মাছওয়ালার ন্যায় হবেন না, যখন তিনি বিষাদ আচ্ছন্ন অবস্থায় আহ্বান করেছিলেন [১]।

﴿لَوْلَا أَنْ تَدَارَكَهُ نِعْمَةٌ مِنْ رَبِّهِ لَنُبِذَ بِالْعَرَاءِ وَهُوَ مَذْمُومٌ﴾

যদি তার রবের অনুগ্রহ তার কাছে না পৌঁছত তবে তিনি লাঞ্ছিত অবস্থায় নিক্ষিপ্ত হতেন উন্মুক্ত প্ৰান্তরে।

﴿فَاجْتَبَاهُ رَبُّهُ فَجَعَلَهُ مِنَ الصَّالِحِينَ﴾

অতঃপর তার রব তাকে মনোনীত করে তাকে সৎকর্মপরায়ণদের অন্তর্ভুক্ত করলেন।

﴿وَإِنْ يَكَادُ الَّذِينَ كَفَرُوا لَيُزْلِقُونَكَ بِأَبْصَارِهِمْ لَمَّا سَمِعُوا الذِّكْرَ وَيَقُولُونَ إِنَّهُ لَمَجْنُونٌ﴾

আর কাফিররা যখন কুরআন শোনে তখন তারা যেন তাদের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দ্বারা আপনাকে আছড়ে ফেলবে এবং বলে, ‘এ তো এক পাগল।’

﴿وَمَا هُوَ إِلَّا ذِكْرٌ لِلْعَالَمِينَ﴾

অথচ তা [১] তো কেবল সৃষ্টিকুলের জন্য উপদেশ।

الترجمات والتفاسير لهذه السورة: