الشعراء

تفسير سورة الشعراء

الترجمة البنغالية

বাংলা

الترجمة البنغالية

ترجمة معاني القرآن الكريم للغة البنغالية ترجمها د. أبو بكر محمد زكريا، نشرها مجمع الملك فهد لطباعة المصحف الشريف بالمدينة المنورة. عام الطبعة 1436هـ.

﴿بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ طسم﴾

ত্বা-সীন-মীম।

﴿تِلْكَ آيَاتُ الْكِتَابِ الْمُبِينِ﴾

এগুলো সুস্পষ্ট কিতাবের আয়াত।

﴿لَعَلَّكَ بَاخِعٌ نَفْسَكَ أَلَّا يَكُونُوا مُؤْمِنِينَ﴾

তারা মুমিন হচ্ছে না বলে আপনি হয়ত মনোকষ্টে আত্মঘাতী হয়ে পড়বেন।

﴿إِنْ نَشَأْ نُنَزِّلْ عَلَيْهِمْ مِنَ السَّمَاءِ آيَةً فَظَلَّتْ أَعْنَاقُهُمْ لَهَا خَاضِعِينَ﴾

আমরা ইচ্ছে করলে আসমান থেকে তাদের কাছে এক নিদর্শন নাযিল করতাম, ফলে সেটার প্রতি তাদের ঘাড় অবনত হয়ে পড়ত।

﴿وَمَا يَأْتِيهِمْ مِنْ ذِكْرٍ مِنَ الرَّحْمَٰنِ مُحْدَثٍ إِلَّا كَانُوا عَنْهُ مُعْرِضِينَ﴾

আর যখনই তাদের কাছে দয়াময়ের কাছ থেকে কোন নতুন উপদেশ আসে, তখনই তারা তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।

﴿فَقَدْ كَذَّبُوا فَسَيَأْتِيهِمْ أَنْبَاءُ مَا كَانُوا بِهِ يَسْتَهْزِئُونَ﴾

অতএব তারা তো মিথ্যারোপ করেছে। কাজেই তারা যা নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করত তার প্রকৃত বার্তা তাদের কাছে শীঘ্রই এসে পড়বে।

﴿أَوَلَمْ يَرَوْا إِلَى الْأَرْضِ كَمْ أَنْبَتْنَا فِيهَا مِنْ كُلِّ زَوْجٍ كَرِيمٍ﴾

তারা কি যমীনের দিকে লক্ষ্য করে না? আমরা তাতে প্ৰত্যেক প্রকারের অনেক উৎকৃষ্ট উদ্ভিদ উদ্গত করেছি [১]!

﴿إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَةً ۖ وَمَا كَانَ أَكْثَرُهُمْ مُؤْمِنِينَ﴾

নিশ্চয় এতে আছে নিদর্শন, আর তাদের অধিকাংশই মুমিন নয়।

﴿وَإِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ الْعَزِيزُ الرَّحِيمُ﴾

আর নিশ্চয় আপনার রব, তিনি তো পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।

﴿وَإِذْ نَادَىٰ رَبُّكَ مُوسَىٰ أَنِ ائْتِ الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ﴾

আর স্মরণ করুন, যখন আপনার রব মূসাকে ডেকে বললেন, ‘আপনি যালিম সম্পপ্রদায়ের কাছে যান,

﴿قَوْمَ فِرْعَوْنَ ۚ أَلَا يَتَّقُونَ﴾

‘ফির‘আউনের সম্পপ্রদায়ের কাছে; তারা কি তাকওয়া অবলম্বন করবে না?’

﴿قَالَ رَبِّ إِنِّي أَخَافُ أَنْ يُكَذِّبُونِ﴾

মূসা বলেছিলেন, ‘হে আমার রব! আমি আশংকা করছি যে, তারা আমার উপর মিথ্যারোপ করবে,

﴿وَيَضِيقُ صَدْرِي وَلَا يَنْطَلِقُ لِسَانِي فَأَرْسِلْ إِلَىٰ هَارُونَ﴾

‘এবং আমার বক্ষ সংকুচিত হয়ে পড়ছে, আর আমার জিহ্বা তো সাবলীল নেই। কাজেই হারূনের প্রতিও ওহী পাঠান।

﴿وَلَهُمْ عَلَيَّ ذَنْبٌ فَأَخَافُ أَنْ يَقْتُلُونِ﴾

‘আর আমার বিরুদ্ধে তো তাদের এক অভিযোগ আছে, সুতরাং আমি আশংকা করছি যে, তারা আমাকে হত্যা করবে।’

﴿قَالَ كَلَّا ۖ فَاذْهَبَا بِآيَاتِنَا ۖ إِنَّا مَعَكُمْ مُسْتَمِعُونَ﴾

আল্লাহ্‌ বললেন, ‘না, কখনই নয়, অতএব আপনারা উভয়ে আমাদের নিদর্শনসহ যান, আমরা তো আপনাদের সাথেই আছি, শ্রবণকারী।

﴿فَأْتِيَا فِرْعَوْنَ فَقُولَا إِنَّا رَسُولُ رَبِّ الْعَالَمِينَ﴾

‘অতএব আপনারা উভয়ে ফির‘আউনের কাছে যান এবং বলুন, ‘আমরা তো সৃষ্টিকুলের রব-এর রাসূল,

﴿أَنْ أَرْسِلْ مَعَنَا بَنِي إِسْرَائِيلَ﴾

যাতে তুমি আমাদের সাথে যেতে দাও বনী ইসরাইলকে [১]।’

﴿قَالَ أَلَمْ نُرَبِّكَ فِينَا وَلِيدًا وَلَبِثْتَ فِينَا مِنْ عُمُرِكَ سِنِينَ﴾

ফির‘আউন বলল, ‘আমরা কি তোমাকে শৈশবে আমাদের মধ্যে লালন-পালন করিনি? আর তুমি তো তোমার জীবনের বহু বছর আমাদের মধ্যে কাটিয়েছ,

﴿وَفَعَلْتَ فَعْلَتَكَ الَّتِي فَعَلْتَ وَأَنْتَ مِنَ الْكَافِرِينَ﴾

‘এবং তুমি তোমার কাজ যা করার তা করেছ; তুমি তো অকৃতজ্ঞ।’

﴿قَالَ فَعَلْتُهَا إِذًا وَأَنَا مِنَ الضَّالِّينَ﴾

মূসা বললেন, ‘আমি তো এটা করেছিলাম তখন, যখন আমি ছিলাম বিভ্ৰান্ত’ [২]।

﴿فَفَرَرْتُ مِنْكُمْ لَمَّا خِفْتُكُمْ فَوَهَبَ لِي رَبِّي حُكْمًا وَجَعَلَنِي مِنَ الْمُرْسَلِينَ﴾

‘তারপর আমি যখন তোমাদের ভয়ে ভীত হলাম তখন আমি তোমাদের কাছ থেকে পালিয়ে গিয়েছিলাম। এরপর আমার রব আমাকে প্রজ্ঞা (নবুওয়ত) দিয়েছেন এবং আমাকে রাসূলদের অন্তর্ভুক্ত করেছেন।

﴿وَتِلْكَ نِعْمَةٌ تَمُنُّهَا عَلَيَّ أَنْ عَبَّدْتَ بَنِي إِسْرَائِيلَ﴾

‘আর আমার প্রতি তোমার যে অনুগ্রহের কথা উল্লেখ করে তুমি দয়া দেখাচ্ছ তা তো এই যে, তুমি বনী ইসরাঈলকে দাসে পরিণত করেছ [১] ।’

﴿قَالَ فِرْعَوْنُ وَمَا رَبُّ الْعَالَمِينَ﴾

ফির‘আউন বলল, ‘সৃষ্টিকুলের রব আবার কী?’

﴿قَالَ رَبُّ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا ۖ إِنْ كُنْتُمْ مُوقِنِينَ﴾

মূসা বললেন, ‘তিনি আসমানসমূহ ও যমীন এবং তাদের মধ্যবর্তী সব কিছুর রব, যদি তোমরা নিশ্চিত বিশ্বাসী হও।’

﴿قَالَ لِمَنْ حَوْلَهُ أَلَا تَسْتَمِعُونَ﴾

ফির‘আউন তার আশেপাশের লোকদের লক্ষ করে বলল, ‘তোমরা কি ভাল করে শুনছ না?’

﴿قَالَ رَبُّكُمْ وَرَبُّ آبَائِكُمُ الْأَوَّلِينَ﴾

মূসা বললেন, ‘তিনি তোমাদের রব এবং তোমাদের পূর্বপুরুষদেরও রব।’

﴿قَالَ إِنَّ رَسُولَكُمُ الَّذِي أُرْسِلَ إِلَيْكُمْ لَمَجْنُونٌ﴾

ফির‘আউন বলল, ‘তোমাদের প্রতি প্রেরিত তোমাদের রাসূল তো অবশ্যই পাগল।’

﴿قَالَ رَبُّ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ وَمَا بَيْنَهُمَا ۖ إِنْ كُنْتُمْ تَعْقِلُونَ﴾

মূসা বললেন, ‘তিনি পূর্ব ও পশ্চিমের এবং তাদের মধ্যবর্তী সব কিছুর রব; যদি তোমরা বুঝে থাক!’

﴿قَالَ لَئِنِ اتَّخَذْتَ إِلَٰهًا غَيْرِي لَأَجْعَلَنَّكَ مِنَ الْمَسْجُونِينَ﴾

ফির‘আউন বলল, ‘তুমি যদি আমার পরিবর্তে অন্যকে ইলাহরূপে গ্ৰহণ কর আমি তোমাকে অবশ্যই কারারুদ্ধ করব’।

﴿قَالَ أَوَلَوْ جِئْتُكَ بِشَيْءٍ مُبِينٍ﴾

মূসা বললেন, ‘আমি যদি তোমার কাছে কোন স্পষ্ট বিষয় নিয়ে আসি, তবুও [১]?’

﴿قَالَ فَأْتِ بِهِ إِنْ كُنْتَ مِنَ الصَّادِقِينَ﴾

ফির‘আউন বলল, ‘তুমি যদি সত্যবাদী হও তবে তা উপস্থিত কর।’

﴿فَأَلْقَىٰ عَصَاهُ فَإِذَا هِيَ ثُعْبَانٌ مُبِينٌ﴾

তারপর মূসা তাঁর লাঠি নিক্ষেপ করলে তৎক্ষণাৎ তা এক স্পষ্ট অজগরে [১] পরিণত হল।

﴿وَنَزَعَ يَدَهُ فَإِذَا هِيَ بَيْضَاءُ لِلنَّاظِرِينَ﴾

আর মূসা তার হাত বের করলে তৎক্ষনাৎ তা দর্শকদের দৃষ্টিতে শুভ্র উজ্জ্বল প্রতিভাত হল।

﴿قَالَ لِلْمَلَإِ حَوْلَهُ إِنَّ هَٰذَا لَسَاحِرٌ عَلِيمٌ﴾

ফির‘আউন তার আশেপাশের পরিষদবৰ্গকে বলল, ‘এ তো এক সুদক্ষ জাদুকর!

﴿يُرِيدُ أَنْ يُخْرِجَكُمْ مِنْ أَرْضِكُمْ بِسِحْرِهِ فَمَاذَا تَأْمُرُونَ﴾

‘সে তোমাদেরকে তোমাদের দেশ থেকে তার জাদুবলে বহিস্কৃত করতে চায়। এখন তোমরা কী করতে বল?’

﴿قَالُوا أَرْجِهْ وَأَخَاهُ وَابْعَثْ فِي الْمَدَائِنِ حَاشِرِينَ﴾

তারা বলল, ‘তাকে ও তার ভাইকে কিছু অবকাশ দাও এবং নগরে নগরে সংগ্রাহকদেরকে পাঠাও,

﴿يَأْتُوكَ بِكُلِّ سَحَّارٍ عَلِيمٍ﴾

‘যেন তারা তোমার কাছে প্রতিটি অভিজ্ঞ জাদুকরকে উপস্থিত করে।’

﴿فَجُمِعَ السَّحَرَةُ لِمِيقَاتِ يَوْمٍ مَعْلُومٍ﴾

অতঃপর এক নির্ধারিত দিনে নির্দিষ্ট সময়ে জাদুকরদেরকে একত্র করা হল,

﴿وَقِيلَ لِلنَّاسِ هَلْ أَنْتُمْ مُجْتَمِعُونَ﴾

এবং লোকদেরকে বলা হল, ‘তোমরাও সমবেত হচ্ছে কি?

﴿لَعَلَّنَا نَتَّبِعُ السَّحَرَةَ إِنْ كَانُوا هُمُ الْغَالِبِينَ﴾

‘যেন আমরা জাদুকরদের অনুসরণ করতে পারি, যদি তারা বিজয়ী হয়।’

﴿فَلَمَّا جَاءَ السَّحَرَةُ قَالُوا لِفِرْعَوْنَ أَئِنَّ لَنَا لَأَجْرًا إِنْ كُنَّا نَحْنُ الْغَالِبِينَ﴾

অতঃপর জাদুকরেরা এসে ফির‘আউনকে বলল, ‘আমরা যদি বিজয়ী হই আমাদের জন্য পুরস্কার থাকবে তো?’

﴿قَالَ نَعَمْ وَإِنَّكُمْ إِذًا لَمِنَ الْمُقَرَّبِينَ﴾

ফির‘আউন বলল, ‘হ্যাঁ, তখন তো তোমরা অবশ্যই আমার ঘনিষ্ঠদের শামিল হবে।’

﴿قَالَ لَهُمْ مُوسَىٰ أَلْقُوا مَا أَنْتُمْ مُلْقُونَ﴾

মূসা তাদেরকে বললেন, ‘তোমরা যা নিক্ষেপ করার তা নিক্ষেপ কর।’

﴿فَأَلْقَوْا حِبَالَهُمْ وَعِصِيَّهُمْ وَقَالُوا بِعِزَّةِ فِرْعَوْنَ إِنَّا لَنَحْنُ الْغَالِبُونَ﴾

অতঃপর তারা তাদের রশি ও লাঠি নিক্ষেপ করল এবং তারা বলল, ‘ফির‘আউনের ইযযতের শপথ! আমরাই তো বিজয়ী হব।’

﴿فَأَلْقَىٰ مُوسَىٰ عَصَاهُ فَإِذَا هِيَ تَلْقَفُ مَا يَأْفِكُونَ﴾

অতঃপর মূসা তার লাঠি নিক্ষেপ করলেন, সহসা সেটা তাদের অলীক কীর্তিগুলোকে গ্ৰাস করতে লাগল।

﴿فَأُلْقِيَ السَّحَرَةُ سَاجِدِينَ﴾

তখন জাদুকরেরা সিজদাবনত হয়ে পড়ল।

﴿قَالُوا آمَنَّا بِرَبِّ الْعَالَمِينَ﴾

তারা বলল, ‘আমরা ঈমান আনলাম সৃষ্টিকুলের রব-এর প্রতি---

﴿رَبِّ مُوسَىٰ وَهَارُونَ﴾

‘যিনি মূসা ও হারূনেরও রব।’

﴿قَالَ آمَنْتُمْ لَهُ قَبْلَ أَنْ آذَنَ لَكُمْ ۖ إِنَّهُ لَكَبِيرُكُمُ الَّذِي عَلَّمَكُمُ السِّحْرَ فَلَسَوْفَ تَعْلَمُونَ ۚ لَأُقَطِّعَنَّ أَيْدِيَكُمْ وَأَرْجُلَكُمْ مِنْ خِلَافٍ وَلَأُصَلِّبَنَّكُمْ أَجْمَعِينَ﴾

ফির‘আউন বলল, ‘কী! আমি তোমাদেরকে অনুমতি দেয়ার আগেই তোমরা তার প্রতি বিশ্বাস করলে? সে-ই তো তোমাদের প্রধান যে তোমাদেরকে জাদু শিক্ষা দিয়েছে। সুতরাং শীঘ্রই তোমরা এর পরিণাম জানবে। আমি অবশ্যই তোমাদের হাত এবং তোমাদের পা বিপরীত দিক থেকে কেটে ফেলব এবং তোমাদের সবাইকে শূলবিদ্ধ করবই।’

﴿قَالُوا لَا ضَيْرَ ۖ إِنَّا إِلَىٰ رَبِّنَا مُنْقَلِبُونَ﴾

তারা বলল, ‘কোন ক্ষতি নেই [১], আমরা তো আমাদের রব-এর কাছেই প্রত্যাবর্তনকারী।

﴿إِنَّا نَطْمَعُ أَنْ يَغْفِرَ لَنَا رَبُّنَا خَطَايَانَا أَنْ كُنَّا أَوَّلَ الْمُؤْمِنِينَ﴾

আমরা আশা করি যে, আমাদের রব আমাদের অপরাধ ক্ষমা করবেন, কারণ আমরা মুমিনদের মধ্যে অগ্রণী।’

﴿۞ وَأَوْحَيْنَا إِلَىٰ مُوسَىٰ أَنْ أَسْرِ بِعِبَادِي إِنَّكُمْ مُتَّبَعُونَ﴾

আর আমরা মূসার প্রতি ওহী করেছিলাম এ মর্মে যে, ‘আমার বান্দাদেরকে নিয়ে রাতে বের হউন [১], অবশ্যই তোমাদের পশ্চাদ্ধাবন করা হবে।’

﴿فَأَرْسَلَ فِرْعَوْنُ فِي الْمَدَائِنِ حَاشِرِينَ﴾

তারপর ফির‘আউন শহরে শহরে লোক সংগ্রহকারী পাঠাল,

﴿إِنَّ هَٰؤُلَاءِ لَشِرْذِمَةٌ قَلِيلُونَ﴾

এ বলে, ‘এরা তো ক্ষুদ্র একটি দল

﴿وَإِنَّهُمْ لَنَا لَغَائِظُونَ﴾

আর তারা তো আমাদের ক্ৰোধ উদ্রেক করেছে;

﴿وَإِنَّا لَجَمِيعٌ حَاذِرُونَ﴾

আর আমরা তো সবাই সদা সতর্ক।’

﴿فَأَخْرَجْنَاهُمْ مِنْ جَنَّاتٍ وَعُيُونٍ﴾

পরিণামে আমরা ফির‘আউন গোষ্ঠীকে বহিষ্কৃত করলাম তাদের উদ্যানরাজি ও প্রস্রবণ হতে

﴿وَكُنُوزٍ وَمَقَامٍ كَرِيمٍ﴾

এবং ধন-ভাণ্ডার ও সুরম্য সৌধমালা হতে।

﴿كَذَٰلِكَ وَأَوْرَثْنَاهَا بَنِي إِسْرَائِيلَ﴾

এরূপই ঘটেছিল এবং আমরা বনী ইসরাঈলকে করেছিলাম এসবের অধিকারী [১]।

﴿فَأَتْبَعُوهُمْ مُشْرِقِينَ﴾

অতঃপর তারা সূর্যোদয়কালে ওদের পিছনে এসে পড়ল।

﴿فَلَمَّا تَرَاءَى الْجَمْعَانِ قَالَ أَصْحَابُ مُوسَىٰ إِنَّا لَمُدْرَكُونَ﴾

অতঃপর যখন দু‘দল পরস্পরকে দেখল, তখন মূসার সঙ্গীরা বলল, ‘আমরা তো ধরা পড়ে গেলাম!’

﴿قَالَ كَلَّا ۖ إِنَّ مَعِيَ رَبِّي سَيَهْدِينِ﴾

মূসা বললেন, ‘কখনই নয়! আমার সঙ্গে আছেন আমার রব [১]; সত্বর তিনি আমাকে পথনির্দেশ করবেন।’

﴿فَأَوْحَيْنَا إِلَىٰ مُوسَىٰ أَنِ اضْرِبْ بِعَصَاكَ الْبَحْرَ ۖ فَانْفَلَقَ فَكَانَ كُلُّ فِرْقٍ كَالطَّوْدِ الْعَظِيمِ﴾

অতঃপর আমরা মূসার প্রতি ওহী করলাম যে, আপনার লাঠি দ্বারা সাগরে আঘাত করুন। ফলে তা বিভক্ত প্ৰত্যেক ভাগ বিশাল পর্বতের মত হয়ে গেল [১];

﴿وَأَزْلَفْنَا ثَمَّ الْآخَرِينَ﴾

আর আমরা সেখানে কাছে নিয়ে এলাম অন্য দলটিকে,

﴿وَأَنْجَيْنَا مُوسَىٰ وَمَنْ مَعَهُ أَجْمَعِينَ﴾

এবং আমরা উদ্ধার করলাম মূসা ও তার সঙ্গী সকলকে,

﴿ثُمَّ أَغْرَقْنَا الْآخَرِينَ﴾

তারপর নিমজ্জিত করলাম অন্য দলটিকে।

﴿إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَةً ۖ وَمَا كَانَ أَكْثَرُهُمْ مُؤْمِنِينَ﴾

এতে তো অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে, কিন্তু তাদের অধিকাংশই মুমিন নয়।

﴿وَإِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ الْعَزِيزُ الرَّحِيمُ﴾

আর আপনার রব, তিনি তো পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।

﴿وَاتْلُ عَلَيْهِمْ نَبَأَ إِبْرَاهِيمَ﴾

আর আপনি তাদের কাছে ইবরাহীমের বৃত্তান্ত বর্ণনা করুন।

﴿إِذْ قَالَ لِأَبِيهِ وَقَوْمِهِ مَا تَعْبُدُونَ﴾

যখন তিনি তার পিতা ও তার সম্প্রদায়কে বলেছিলেন, ‘তোমরা কিসের ইবাদাত করা?’

﴿قَالُوا نَعْبُدُ أَصْنَامًا فَنَظَلُّ لَهَا عَاكِفِينَ﴾

তারা বলল, ‘আমরা মূর্তির পূজা করি সুতরাং আমরা নিষ্ঠার সাথে সেগুলোকে আঁকড়ে থাকব।’

﴿قَالَ هَلْ يَسْمَعُونَكُمْ إِذْ تَدْعُونَ﴾

তিনি বললেন, ‘তোমরা যখন আহ্বান কর তখন তারা তোমাদের আহ্বান শোনে কি?’

﴿أَوْ يَنْفَعُونَكُمْ أَوْ يَضُرُّونَ﴾

‘অথবা তারা কি তোমাদের উপকার কিংবা অপকার করতে পারে?’

﴿قَالُوا بَلْ وَجَدْنَا آبَاءَنَا كَذَٰلِكَ يَفْعَلُونَ﴾

তারা বলল, ‘না, তবে আমরা আমাদের পিতৃপুরুষদেরকে পেয়েছি, তারা এরূপই করত।’

﴿قَالَ أَفَرَأَيْتُمْ مَا كُنْتُمْ تَعْبُدُونَ﴾

ইবরাহীম বললেন, ‘তোমরা কি ভাবে দেখেছ, যাদের ‘ইবাদাত তোমরা করে থাক,

﴿أَنْتُمْ وَآبَاؤُكُمُ الْأَقْدَمُونَ﴾

‘তোমরা এবং তোমাদের পূর্ববর্তী পিতৃপুরুষরা!

﴿فَإِنَّهُمْ عَدُوٌّ لِي إِلَّا رَبَّ الْعَالَمِينَ﴾

সৃষ্টিকুলের রব ব্যতীত এরা সবাই তো আমার শত্ৰু।

﴿الَّذِي خَلَقَنِي فَهُوَ يَهْدِينِ﴾

‘যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তিনিই আমাকে হেদায়াত দিয়েছেন।

﴿وَالَّذِي هُوَ يُطْعِمُنِي وَيَسْقِينِ﴾

আর ‘তিনিই আমাকে খাওয়ান ও পান করান।

﴿وَإِذَا مَرِضْتُ فَهُوَ يَشْفِينِ﴾

‘এবং রোগাক্রান্ত হলে তিনিই আমাকে আরোগ্য দান করেন [১];

﴿وَالَّذِي يُمِيتُنِي ثُمَّ يُحْيِينِ﴾

‘আর তিনিই আমার মৃত্যু ঘটাবেন, তারপর আমাকে পুনর্জীবিত করবেন।

﴿وَالَّذِي أَطْمَعُ أَنْ يَغْفِرَ لِي خَطِيئَتِي يَوْمَ الدِّينِ﴾

‘এবং যার কাছে আশা করি যে, তিনি কিয়ামতের দিন আমার অপরাধ ক্ষমা করে দেবেন।

﴿رَبِّ هَبْ لِي حُكْمًا وَأَلْحِقْنِي بِالصَّالِحِينَ﴾

‘হে আমার রব! আমাকে প্রজ্ঞা দান করুন এবং সৎকর্মশীলদের সাথে মিলিয়ে দিন।

﴿وَاجْعَلْ لِي لِسَانَ صِدْقٍ فِي الْآخِرِينَ﴾

‘আর আমাকে পরবর্তীদের মধ্যে যশস্বী করুন [১],

﴿وَاجْعَلْنِي مِنْ وَرَثَةِ جَنَّةِ النَّعِيمِ﴾

‘এবং আমাকে সুখময় জান্নাতের অধিকারীদের অন্তর্ভুক্ত করুন,

﴿وَاغْفِرْ لِأَبِي إِنَّهُ كَانَ مِنَ الضَّالِّينَ﴾

‘আর আমার পিতাকে ক্ষমা করুন, তিনি তো পথভ্রষ্টদের শামিল ছিলেন [১]।

﴿وَلَا تُخْزِنِي يَوْمَ يُبْعَثُونَ﴾

‘এবং আমাকে লাঞ্ছিত করবেন না পুনরুত্থানের দিনে [২]

﴿يَوْمَ لَا يَنْفَعُ مَالٌ وَلَا بَنُونَ﴾

‘যে দিন ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি কোন কাজে আসবে না;

﴿إِلَّا مَنْ أَتَى اللَّهَ بِقَلْبٍ سَلِيمٍ﴾

‘সে দিন উপকৃত হবে শুধু সে, যে আল্লাহ্‌র কাছে আসবে বিশুদ্ধ অন্তঃকরণ নিয়ে।’

﴿وَأُزْلِفَتِ الْجَنَّةُ لِلْمُتَّقِينَ﴾

আর মুত্তাকীদের নিকটবর্তী করা হবে জান্নাত,

﴿وَبُرِّزَتِ الْجَحِيمُ لِلْغَاوِينَ﴾

এবং পথভ্রষ্টদের জন্য উন্মোচিত করা হবে জাহান্নাম [১];

﴿وَقِيلَ لَهُمْ أَيْنَ مَا كُنْتُمْ تَعْبُدُونَ﴾

তাদেরকে বলা হবে, ‘তারা কোথায়, তোমরা যাদের ‘ইবাদাত করতে---

﴿مِنْ دُونِ اللَّهِ هَلْ يَنْصُرُونَكُمْ أَوْ يَنْتَصِرُونَ﴾

‘আল্লাহ্‌র পরিবর্তে? তারা কি তোমাদের সাহায্য করতে পারে অথবা তারা কি আত্মরক্ষা করতে সক্ষম?’

﴿فَكُبْكِبُوا فِيهَا هُمْ وَالْغَاوُونَ﴾

অতঃপর তাদেরকে এবং পথ ভ্ৰষ্টকারীদেরকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে অধোমুখী করে [১],

﴿وَجُنُودُ إِبْلِيسَ أَجْمَعُونَ﴾

এবং ইবলীসের বাহিনীর সকলকেও।

﴿قَالُوا وَهُمْ فِيهَا يَخْتَصِمُونَ﴾

তারা সেখানে বিতর্কে লিপ্ত হয়ে বলবে,

﴿تَاللَّهِ إِنْ كُنَّا لَفِي ضَلَالٍ مُبِينٍ﴾

‘আল্লাহ্‌র শপথ! আমরা তো স্পষ্ট পথভ্রষ্টতায় নিমজ্জিত ছিলাম,’

﴿إِذْ نُسَوِّيكُمْ بِرَبِّ الْعَالَمِينَ﴾

‘যখন আমরা তোমাদেরকে সৃষ্টিকুলের রব-এর সমকক্ষ গণ্য করতাম।

﴿وَمَا أَضَلَّنَا إِلَّا الْمُجْرِمُونَ﴾

‘আর আমাদেরকে কেবল দুস্কৃতিকারীরাই পথভ্ৰষ্ট করেছিল;

﴿فَمَا لَنَا مِنْ شَافِعِينَ﴾

‘অতএব আমাদের কোন সুপারিশকারী নেই।

﴿وَلَا صَدِيقٍ حَمِيمٍ﴾

এবং কোন সহৃদয় বন্ধুও নেই।

﴿فَلَوْ أَنَّ لَنَا كَرَّةً فَنَكُونَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ﴾

‘হায়, যদি আমাদের একবার ফিরে যাওয়ার সুযোগ ঘটত, তাহলে আমরা মুমিনদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যেতাম [১]!’

﴿إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَةً ۖ وَمَا كَانَ أَكْثَرُهُمْ مُؤْمِنِينَ﴾

এতে তো অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে, কিন্তু তাদের অধিকাংশই মুমিন নয়।

﴿وَإِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ الْعَزِيزُ الرَّحِيمُ﴾

আর আপনার রব, তিনি তো পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।

﴿كَذَّبَتْ قَوْمُ نُوحٍ الْمُرْسَلِينَ﴾

নূহের সম্প্রদায় রাসূলগণের প্রতি মিথ্যা আরোপ করেছিল।

﴿إِذْ قَالَ لَهُمْ أَخُوهُمْ نُوحٌ أَلَا تَتَّقُونَ﴾

যখন তাদের ভাই নূহ তাদেরকে বলেছিলেন, ‘তোমরা কি তাকওয়া অবলম্বন করবে না?

﴿إِنِّي لَكُمْ رَسُولٌ أَمِينٌ﴾

‘আমি তো তোমাদের জন্য এক বিশ্বস্ত রাসূল।

﴿فَاتَّقُوا اللَّهَ وَأَطِيعُونِ﴾

‘অতএব তোমরা আল্লাহ্‌র তাকওয়া অবলম্বন কর এবং আমার আনুগত্য কর [১]।

﴿وَمَا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْرٍ ۖ إِنْ أَجْرِيَ إِلَّا عَلَىٰ رَبِّ الْعَالَمِينَ﴾

‘আর আমি তোমাদের কাছে এর জন্য কোন প্রতিদান চাই না; আমার পুরস্কার তো সৃষ্টিকুলের রব-এর কাছেই আছে।

﴿فَاتَّقُوا اللَّهَ وَأَطِيعُونِ﴾

‘কাজেই তোমরা আল্লাহ্‌র তাকওয়া অবলম্বন কর এবং আমার আনুগত্য কর।’

﴿۞ قَالُوا أَنُؤْمِنُ لَكَ وَاتَّبَعَكَ الْأَرْذَلُونَ﴾

তারা বলল, ‘আমরা কি তোমার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করব অথচ ইতরজনেরা তোমার অনুসরণ করছে?’

﴿قَالَ وَمَا عِلْمِي بِمَا كَانُوا يَعْمَلُونَ﴾

নূহ বললেন, ‘তারা কী করত তা আমার জানার কি দরকার?’

﴿إِنْ حِسَابُهُمْ إِلَّا عَلَىٰ رَبِّي ۖ لَوْ تَشْعُرُونَ﴾

‘তাদের হিসেব গ্রহণ তো আমার রব-এরই কাজ; যদি তোমরা বুঝতে!

﴿وَمَا أَنَا بِطَارِدِ الْمُؤْمِنِينَ﴾

আর আমি তো ‘মুমিনদেরকে তাড়িয়ে দেয়ার নই।

﴿إِنْ أَنَا إِلَّا نَذِيرٌ مُبِينٌ﴾

‘আমি তো শুধু একজন স্পষ্ট সতর্ককারী।’

﴿قَالُوا لَئِنْ لَمْ تَنْتَهِ يَا نُوحُ لَتَكُونَنَّ مِنَ الْمَرْجُومِينَ﴾

তারা বলল, ‘হে নূহ! তুমি যদি নিবৃত্ত না হও তবে তুমি অবশ্যই পাথরের আঘাতে নিহতদের মধ্যে শামিল হবে।’

﴿قَالَ رَبِّ إِنَّ قَوْمِي كَذَّبُونِ﴾

নূহ বললেন, ‘হে আমার রব! আমার সম্প্রদায় তো আমার উপর মিথ্যারোপ করেছে।

﴿فَافْتَحْ بَيْنِي وَبَيْنَهُمْ فَتْحًا وَنَجِّنِي وَمَنْ مَعِيَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ﴾

‘কাজেই আপনি আমার ও তাদের মধ্যে স্পষ্ট মীমাংসা করে দিন এবং আমাকে ও আমার সাথে যেসব মুমিন আছে, তাদেরকে রক্ষা করুন [১]।’

﴿فَأَنْجَيْنَاهُ وَمَنْ مَعَهُ فِي الْفُلْكِ الْمَشْحُونِ﴾

অতঃপর আমরা তাকে ও তার সঙ্গে যারা ছিল, তাদেরকে রক্ষা করলাম বোঝাই নৌযানে [১]।

﴿ثُمَّ أَغْرَقْنَا بَعْدُ الْبَاقِينَ﴾

এরপর আমরা বাকী সবাইকে ডুবিয়ে দিলাম।

﴿إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَةً ۖ وَمَا كَانَ أَكْثَرُهُمْ مُؤْمِنِينَ﴾

এতে তো অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে, কিন্তু তাদের অধিকাংশই ঈমানদার নয়।

﴿وَإِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ الْعَزِيزُ الرَّحِيمُ﴾

আর আপনার রব, তিনি তো পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।

﴿كَذَّبَتْ عَادٌ الْمُرْسَلِينَ﴾

‘আদ সম্প্রদায় রাসূলদের প্রতি মিথ্যারোপ করেছিল।

﴿إِذْ قَالَ لَهُمْ أَخُوهُمْ هُودٌ أَلَا تَتَّقُونَ﴾

যখন তাদের ভাই হূদ তাদেরকে বললেন, ‘তোমরা কি তাকওয়া অবলম্বন করবে না?

﴿إِنِّي لَكُمْ رَسُولٌ أَمِينٌ﴾

‘আমি তো তোমাদের জন্য এক বিশ্বস্ত রাসূল।

﴿فَاتَّقُوا اللَّهَ وَأَطِيعُونِ﴾

‘অতএব তোমরা আল্লাহ্‌র তাকওয়া অবলম্বন কর এবং আমার আনুগত্য কর।

﴿وَمَا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْرٍ ۖ إِنْ أَجْرِيَ إِلَّا عَلَىٰ رَبِّ الْعَالَمِينَ﴾

‘আর আমি তোমাদের কাছে এর জন্য কোন প্রতিদান চাই না, আমার পুরস্কার তো সৃষ্টিকুলের রব-এর কাছেই।

﴿أَتَبْنُونَ بِكُلِّ رِيعٍ آيَةً تَعْبَثُونَ﴾

‘তোমরা কি প্রতিটি উচ্চ স্থানে [১] স্তম্ভ নির্মাণ করছ নিরর্থক [২]?

﴿وَتَتَّخِذُونَ مَصَانِعَ لَعَلَّكُمْ تَخْلُدُونَ﴾

‘আর তোমরা প্রাসাদসমূহ [১] নির্মাণ করছ যেন তোমরা স্থায়ী হবে [২]।

﴿وَإِذَا بَطَشْتُمْ بَطَشْتُمْ جَبَّارِينَ﴾

আর যখন তোমরা আঘাত হান তখন আঘাত হেনে থাক স্বেচ্ছাচারী হয়ে।

﴿فَاتَّقُوا اللَّهَ وَأَطِيعُونِ﴾

সুতরাং তোমরা আল্লাহ্‌র তাকওয়া অবলম্বন কর এবং আমার আনুগত্য কর।

﴿وَاتَّقُوا الَّذِي أَمَدَّكُمْ بِمَا تَعْلَمُونَ﴾

আর তোমরা তাঁর তাকওয়া অবলম্বন কর যিনি তোমাদেরকে দান করেছেন সে সমুদয়, যা তোমরা জান।

﴿أَمَدَّكُمْ بِأَنْعَامٍ وَبَنِينَ﴾

তিনি তোমাদেরকে দান করেছেন চতুস্পদ জন্তু ও পুত্ৰ সন্তান,

﴿وَجَنَّاتٍ وَعُيُونٍ﴾

এবং উদ্যান ও প্রস্রবণ;

﴿إِنِّي أَخَافُ عَلَيْكُمْ عَذَابَ يَوْمٍ عَظِيمٍ﴾

‘আমি তো তোমাদের জন্য আশংকা করি মহাদিনের শাস্তির।’

﴿قَالُوا سَوَاءٌ عَلَيْنَا أَوَعَظْتَ أَمْ لَمْ تَكُنْ مِنَ الْوَاعِظِينَ﴾

তারা বলল, ‘তুমি উপদেশ দাও বা না-ই দাও, উভয়ই আমাদের জন্য সমান।

﴿إِنْ هَٰذَا إِلَّا خُلُقُ الْأَوَّلِينَ﴾

‘এটা তো কেবল পূর্ববর্তীদেরই স্বভাব।

﴿وَمَا نَحْنُ بِمُعَذَّبِينَ﴾

‘আমরা মোটেই শাস্তিপ্রাপ্ত হবো না।’

﴿فَكَذَّبُوهُ فَأَهْلَكْنَاهُمْ ۗ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَةً ۖ وَمَا كَانَ أَكْثَرُهُمْ مُؤْمِنِينَ﴾

সুতরাং তারা তার প্রতি মিথ্যারোপ করল ফলে আমরা তাদেরকে ধ্বংস করলাম। এতে তো অবশ্যই আছে নিদর্শন; কিন্তু তাদের অধিকাংশই মুমিন নয় [১]।

﴿وَإِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ الْعَزِيزُ الرَّحِيمُ﴾

আর আপনার রব, তিনি তো পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।

﴿كَذَّبَتْ ثَمُودُ الْمُرْسَلِينَ﴾

সামূদ সম্প্রদায় রাসূলগণের প্রতি মিথ্যারোপ করেছিল।

﴿إِذْ قَالَ لَهُمْ أَخُوهُمْ صَالِحٌ أَلَا تَتَّقُونَ﴾

যখন তাদের ভাই সালিহ তাদেরকে বললেন, ‘তোমরা কি তাকওয়া অবলম্বন করবে না?

﴿إِنِّي لَكُمْ رَسُولٌ أَمِينٌ﴾

‘আমি তো তোমাদের জন্য এক বিশ্বস্ত রাসূল।

﴿فَاتَّقُوا اللَّهَ وَأَطِيعُونِ﴾

সুতরাং তোমরা আল্লাহ্‌র তাকওয়া অবলম্বন কর এবং আমার আনুগত্য কর,

﴿وَمَا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْرٍ ۖ إِنْ أَجْرِيَ إِلَّا عَلَىٰ رَبِّ الْعَالَمِينَ﴾

‘আর আমি তোমাদের কাছে এর জন্য কোন প্রতিদান চাই না, আমার প্রতিদান তো সৃষ্টিকুলের রব-এর কাছেই আছে।

﴿أَتُتْرَكُونَ فِي مَا هَاهُنَا آمِنِينَ﴾

‘তোমাদেরকে কি নিরাপদ অবস্থায় ছেড়ে রাখা হবে, যা এখানে আছে তাতে-

﴿فِي جَنَّاتٍ وَعُيُونٍ﴾

‘উদ্যানে, প্রস্রবণে

﴿وَزُرُوعٍ وَنَخْلٍ طَلْعُهَا هَضِيمٌ﴾

‘ও শস্যক্ষেত্রে এবং সুকোমল গুচ্ছ বিশিষ্ট খেজুর বাগানে?

﴿وَتَنْحِتُونَ مِنَ الْجِبَالِ بُيُوتًا فَارِهِينَ﴾

‘আর তোমরা নৈপুণ্যের সাথে পাহাড় কেটে ঘর নির্মাণ করছ।

﴿فَاتَّقُوا اللَّهَ وَأَطِيعُونِ﴾

সুতরাং তোমরা আল্লাহ্‌র তাকওয়া অবলম্বন কর এবং আমার আনুগত্য কর

﴿وَلَا تُطِيعُوا أَمْرَ الْمُسْرِفِينَ﴾

আর তোমরা সীমালংঘনকারীদের নির্দেশের আনুগত্য করো না;

﴿الَّذِينَ يُفْسِدُونَ فِي الْأَرْضِ وَلَا يُصْلِحُونَ﴾

‘যারা যমীনে বিপর্যয় সৃষ্টি করে এবং সংশোধন করে না।’

﴿قَالُوا إِنَّمَا أَنْتَ مِنَ الْمُسَحَّرِينَ﴾

তারা বলল, ‘তুমি তো জাদুগ্ৰস্তাদের অন্যতম।

﴿مَا أَنْتَ إِلَّا بَشَرٌ مِثْلُنَا فَأْتِ بِآيَةٍ إِنْ كُنْتَ مِنَ الصَّادِقِينَ﴾

‘তুমি তো আমাদের মতই একজন মানুষ, কাজেই তুমি যদি সত্যবাদী হও তবে একটি নিদর্শন উপস্থিত কর।’

﴿قَالَ هَٰذِهِ نَاقَةٌ لَهَا شِرْبٌ وَلَكُمْ شِرْبُ يَوْمٍ مَعْلُومٍ﴾

সালিহ বললেন, ‘এটা একটা উষ্ট্ৰী, এর জন্য আছে পানি পানের পালা এবং তোমাদের জন্য আছে নির্ধারিত দিনে পানি পানের পালা;

﴿وَلَا تَمَسُّوهَا بِسُوءٍ فَيَأْخُذَكُمْ عَذَابُ يَوْمٍ عَظِيمٍ﴾

‘আর তোমরা এর কোন অনিষ্ট সাধন করো না; করলে মহাদিনের শাস্তি তোমাদের উপর আপতিত হবে।’

﴿فَعَقَرُوهَا فَأَصْبَحُوا نَادِمِينَ﴾

অতঃপর তারা সেটাকে হত্যা করল, পরিণামে তারা অনুতপ্ত হল।

﴿فَأَخَذَهُمُ الْعَذَابُ ۗ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَةً ۖ وَمَا كَانَ أَكْثَرُهُمْ مُؤْمِنِينَ﴾

অতঃপর শাস্তি তাদেরকে গ্ৰাস করল। এতে অবশ্যই রয়েছে নিদর্শন, কিন্তু তাদের অধিকাংশই মুমিন নয়।

﴿وَإِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ الْعَزِيزُ الرَّحِيمُ﴾

আর আপনার রব, তিনি তো পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।

﴿كَذَّبَتْ قَوْمُ لُوطٍ الْمُرْسَلِينَ﴾

লূতের সম্প্রদায় রাসূলগণের প্রতি মিথ্যারোপ করেছিল,

﴿إِذْ قَالَ لَهُمْ أَخُوهُمْ لُوطٌ أَلَا تَتَّقُونَ﴾

যখন তাদের ভাই লূত তাদেরকে বললেন, ‘তোমরা কি তাকওয়া অবলম্বন করবে না?

﴿إِنِّي لَكُمْ رَسُولٌ أَمِينٌ﴾

‘আমি তো তোমাদের জন্য এক বিশ্বস্ত রাসূল।

﴿فَاتَّقُوا اللَّهَ وَأَطِيعُونِ﴾

‘কাজেই তোমরা আল্লাহ্‌র তাকওয়া অবলম্বন কর এবং আমার আনুগত্য কর।

﴿وَمَا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْرٍ ۖ إِنْ أَجْرِيَ إِلَّا عَلَىٰ رَبِّ الْعَالَمِينَ﴾

‘আর আমি এর জন্য তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান চাই না, আমার প্রতিদান তো সৃষ্টিকুলের রব-এর কাছেই আছে।

﴿أَتَأْتُونَ الذُّكْرَانَ مِنَ الْعَالَمِينَ﴾

‘সৃষ্টিকুলের মধ্যে তো তোমরাই কি পুরুষের সাথে উপগত হও?

﴿وَتَذَرُونَ مَا خَلَقَ لَكُمْ رَبُّكُمْ مِنْ أَزْوَاجِكُمْ ۚ بَلْ أَنْتُمْ قَوْمٌ عَادُونَ﴾

‘আর তোমাদের রব তোমাদের জন্য যে স্ত্রীগণকে সৃষ্টি করেছেন তাদেরকে তোমরা বর্জন করে থাক। বরং তোমরা তো এক সীমালংঘনকারী সম্প্রদায়।’

﴿قَالُوا لَئِنْ لَمْ تَنْتَهِ يَا لُوطُ لَتَكُونَنَّ مِنَ الْمُخْرَجِينَ﴾

তারা বলল, ‘হে লূত! তুমি যদি নিবৃত্ত না হও, তবে অবশ্যই তুমি নির্বাসিত হবে।’

﴿قَالَ إِنِّي لِعَمَلِكُمْ مِنَ الْقَالِينَ﴾

লূত বললেন, ‘আমি অবশ্যই তোমাদের এ কাজের ঘৃণাকারী।

﴿رَبِّ نَجِّنِي وَأَهْلِي مِمَّا يَعْمَلُونَ﴾

‘হে আমার রব! আমাকে এবং আমার পরিবার-পরিজনকে, তারা যা করে, তা থেকে রক্ষা করুন।’

﴿فَنَجَّيْنَاهُ وَأَهْلَهُ أَجْمَعِينَ﴾

তারপর আমরা তাকে এবং তার পরিবার-পরিজনকে সকলকে রক্ষা করলাম

﴿إِلَّا عَجُوزًا فِي الْغَابِرِينَ﴾

এক বৃদ্ধা ছাড়া [১], যে ছিল পিছনে অবস্থানকারীদের অন্তর্ভুক্ত।

﴿ثُمَّ دَمَّرْنَا الْآخَرِينَ﴾

তারপর আমরা অপর সকলকে ধ্বংস করলাম।

﴿وَأَمْطَرْنَا عَلَيْهِمْ مَطَرًا ۖ فَسَاءَ مَطَرُ الْمُنْذَرِينَ﴾

আর আমরা তাদের উপর শাস্তি মূলক বৃষ্টি বর্ষণ করেছিলাম, ভীতি প্রদর্শিতদের জন্য এ বৃষ্টি ছিল কত নিকৃষ্ট [১]!

﴿إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَةً ۖ وَمَا كَانَ أَكْثَرُهُمْ مُؤْمِنِينَ﴾

এতে তো অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে, কিন্তু তাদের অধিকাংশই মুমিন নয়।

﴿وَإِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ الْعَزِيزُ الرَّحِيمُ﴾

আর আপনার রব, তিনি তো পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।

﴿كَذَّبَ أَصْحَابُ الْأَيْكَةِ الْمُرْسَلِينَ﴾

আইকাবাসীরা [১] রাসূলগণের প্রতি মিথ্যারোপ করেছিল,

﴿إِذْ قَالَ لَهُمْ شُعَيْبٌ أَلَا تَتَّقُونَ﴾

যখন শু‘আইব তাদেরকে বলেছিলেন, ‘তোমরা কি তাকওয়া অবলম্বন করবে না?

﴿إِنِّي لَكُمْ رَسُولٌ أَمِينٌ﴾

আমি তো তোমাদের জন্য এক বিশ্বস্ত রাসূল।

﴿فَاتَّقُوا اللَّهَ وَأَطِيعُونِ﴾

‘কাজেই তোমরা আল্লাহ্‌র তাকওয়া অবলম্বন কর এবং আমার আনুগত্য কর।

﴿وَمَا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْرٍ ۖ إِنْ أَجْرِيَ إِلَّا عَلَىٰ رَبِّ الْعَالَمِينَ﴾

‘আর আমি তোমাদের কাছে এর জন্য কোন প্রতিদান চাই না। আমার পুরস্কার তো সৃষ্টিকুলের রব-এর কাছেই আছে।

﴿۞ أَوْفُوا الْكَيْلَ وَلَا تَكُونُوا مِنَ الْمُخْسِرِينَ﴾

‘মাপে পূর্ণ মাত্রায় দেবে; আর যারা মাপে কম দেয় তোমরা তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না

﴿وَزِنُوا بِالْقِسْطَاسِ الْمُسْتَقِيمِ﴾

‘এবং ওজন করবে সঠিক দাঁড়িপাল্লায়।

﴿وَلَا تَبْخَسُوا النَّاسَ أَشْيَاءَهُمْ وَلَا تَعْثَوْا فِي الْأَرْضِ مُفْسِدِينَ﴾

‘আর লোকদেরকে তাদের প্রাপ্য বস্তু কম দিও না এবং পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করে বেড়িও না।

﴿وَاتَّقُوا الَّذِي خَلَقَكُمْ وَالْجِبِلَّةَ الْأَوَّلِينَ﴾

আর তাঁর তাকওয়া অবলম্বন কর যিনি তোমাদেরকে ও তোমাদের আগে যারা গত হয়েছে তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন।’

﴿قَالُوا إِنَّمَا أَنْتَ مِنَ الْمُسَحَّرِينَ﴾

তারা বলল, ‘তুমি তো জাদুগ্ৰস্তাদের অন্তর্ভুক্ত;

﴿وَمَا أَنْتَ إِلَّا بَشَرٌ مِثْلُنَا وَإِنْ نَظُنُّكَ لَمِنَ الْكَاذِبِينَ﴾

‘আর তুমি তো আমাদের মতই একজন মানুষ, আমরা তো তোমাকে মিথ্যাবাদীদের অন্তর্ভুক্ত মনে করি।

﴿فَأَسْقِطْ عَلَيْنَا كِسَفًا مِنَ السَّمَاءِ إِنْ كُنْتَ مِنَ الصَّادِقِينَ﴾

‘সুতরাং তুমি যদি সত্যবাদী হও তবে আকাশের এক খণ্ড আমাদের উপর ফেলে দাও।’

﴿قَالَ رَبِّي أَعْلَمُ بِمَا تَعْمَلُونَ﴾

তিনি বললেন, ‘আমার রব ভাল করে জানেন তোমরা যা কর।’

﴿فَكَذَّبُوهُ فَأَخَذَهُمْ عَذَابُ يَوْمِ الظُّلَّةِ ۚ إِنَّهُ كَانَ عَذَابَ يَوْمٍ عَظِيمٍ﴾

সুতরাং তারা তার প্রতি মিথ্যারোপ করল, ফলে তাদেরকে মেঘাচ্ছন্ন দিনের শাস্তি গ্রাস করল [১]। এ তো ছিল এক ভীষণ দিনের শাস্তি!

﴿إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَةً ۖ وَمَا كَانَ أَكْثَرُهُمْ مُؤْمِنِينَ﴾

এতে তো অবশ্যই রয়েছে নিদর্শন [১], আর তাদের অধিকাংশই মুমিন নয়।

﴿وَإِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ الْعَزِيزُ الرَّحِيمُ﴾

আর আপনার রব, তিনি তো পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।

﴿وَإِنَّهُ لَتَنْزِيلُ رَبِّ الْعَالَمِينَ﴾

আর নিশ্চয় এটা (আল-কুরআন) সৃষ্টিকুলের রব হতে নাযিলকৃত।

﴿نَزَلَ بِهِ الرُّوحُ الْأَمِينُ﴾

বিশ্বস্ত রূহ (জিবরাঈল) তা নিয়ে নাযিল হয়েছেন।

﴿عَلَىٰ قَلْبِكَ لِتَكُونَ مِنَ الْمُنْذِرِينَ﴾

আপনার হৃদয়ে, যাতে আপনি সতর্ককারীদের অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন।

﴿بِلِسَانٍ عَرَبِيٍّ مُبِينٍ﴾

সুস্পষ্ট আরবী ভাষায় [১]।

﴿وَإِنَّهُ لَفِي زُبُرِ الْأَوَّلِينَ﴾

আর পূর্ববর্তী কিতাবসমূহে অবশ্যই এর উল্লেখ আছে।

﴿أَوَلَمْ يَكُنْ لَهُمْ آيَةً أَنْ يَعْلَمَهُ عُلَمَاءُ بَنِي إِسْرَائِيلَ﴾

বনী ইসরাইলের আলেমগণ এ সম্পর্কে জানে---এটা কি তাদের জন্য নিদর্শন নয় [১]?

﴿وَلَوْ نَزَّلْنَاهُ عَلَىٰ بَعْضِ الْأَعْجَمِينَ﴾

আর আমরা যদি এটা কোন অনারবের উপর নাযিল করতাম

﴿فَقَرَأَهُ عَلَيْهِمْ مَا كَانُوا بِهِ مُؤْمِنِينَ﴾

এবং এটা সে তাদের কাছে পাঠ করত, তবে তারা তাতে ঈমান আনত না;

﴿كَذَٰلِكَ سَلَكْنَاهُ فِي قُلُوبِ الْمُجْرِمِينَ﴾

এভাবে আমরা সেটা অপরাধীদের অন্তরে সঞ্চার করেছি [১]।

﴿لَا يُؤْمِنُونَ بِهِ حَتَّىٰ يَرَوُا الْعَذَابَ الْأَلِيمَ﴾

তারা এতে ঈমান আনবে না যতক্ষণ না তারা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি দেখতে পাবে;

﴿فَيَأْتِيَهُمْ بَغْتَةً وَهُمْ لَا يَشْعُرُونَ﴾

সুতরাং তা তাদের কাছে এসে পড়বে হঠাৎ করে; অথচ তারা কিছুই উপলব্ধি করতে পারবে না।

﴿فَيَقُولُوا هَلْ نَحْنُ مُنْظَرُونَ﴾

তখন তারা বলবে, ‘আমাদেরকে কি অবকাশ দেয়া হবে?’

﴿أَفَبِعَذَابِنَا يَسْتَعْجِلُونَ﴾

তারা কি তবে আমাদের শাস্তি ত্বরান্বিত করতে চায়?

﴿أَفَرَأَيْتَ إِنْ مَتَّعْنَاهُمْ سِنِينَ﴾

আপনি ভেবে দেখুন, যদি আমরা তাদেরকে দীর্ঘকাল ভোগ-বিলাস করতে দেই [১],

﴿ثُمَّ جَاءَهُمْ مَا كَانُوا يُوعَدُونَ﴾

তারপর তাদেরকে যে বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছিল তা তাদের কাছে এসে পড়ে,

﴿مَا أَغْنَىٰ عَنْهُمْ مَا كَانُوا يُمَتَّعُونَ﴾

তখন যা তাদের ভোগ-বিলাসের উপকরণ হিসেবে দেয়া হয়েছিল তা তাদের কি উপকারে আসবে?

﴿وَمَا أَهْلَكْنَا مِنْ قَرْيَةٍ إِلَّا لَهَا مُنْذِرُونَ﴾

আর আমরা এমন কোন জনপদ ধ্বংস করিনি যার জন্য সতর্ককারী ছিল না [১];

﴿ذِكْرَىٰ وَمَا كُنَّا ظَالِمِينَ﴾

(তাদের জন্য) স্মরণ হিসেবে, আর আমরা যুলুমকারী নই,

﴿وَمَا تَنَزَّلَتْ بِهِ الشَّيَاطِينُ﴾

আর শয়তানরা এটাসহ নাযিল হয়নি।

﴿وَمَا يَنْبَغِي لَهُمْ وَمَا يَسْتَطِيعُونَ﴾

আর তারা এ কাজের যোগ্যও নয় এবং তারা এর সামর্থ্যও রাখে না।

﴿إِنَّهُمْ عَنِ السَّمْعِ لَمَعْزُولُونَ﴾

তাদেরকে তো শোনার সুযোগ হতে দূরে রাখা হয়েছে।

﴿فَلَا تَدْعُ مَعَ اللَّهِ إِلَٰهًا آخَرَ فَتَكُونَ مِنَ الْمُعَذَّبِينَ﴾

অতএব আপনি অন্য কোন ইলাহকে আল্লাহ্‌র সাথে ডাকবেন না, ডাকলে আপনি শাস্তিপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হবেন।

﴿وَأَنْذِرْ عَشِيرَتَكَ الْأَقْرَبِينَ﴾

আর আপনার নিকটস্থ জ্ঞাতি-গোষ্ঠীকে সতর্ক করুন।

﴿وَاخْفِضْ جَنَاحَكَ لِمَنِ اتَّبَعَكَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ﴾

এবং যারা আপনার অনুসরণ করে সেসব মুমিনদের প্রতি আপনার পক্ষপুট অবনত করে দিন।

﴿فَإِنْ عَصَوْكَ فَقُلْ إِنِّي بَرِيءٌ مِمَّا تَعْمَلُونَ﴾

অতঃপর তারা যদি আপনার অবাধ্য হয় তাহলে আপনি বলুন, ‘তোমরা যা কর নিশ্চয় আমি তা থেকে দায়মুক্ত।’

﴿وَتَوَكَّلْ عَلَى الْعَزِيزِ الرَّحِيمِ﴾

আর আপনি নির্ভর করুন পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু আল্লাহ্‌র উপর,

﴿الَّذِي يَرَاكَ حِينَ تَقُومُ﴾

যিনি আপনাকে দেখেন যখন আপনি দাঁড়ান [১],

﴿وَتَقَلُّبَكَ فِي السَّاجِدِينَ﴾

এবং সিজদাকারীদের মাঝে আপনার উঠাবসা [১]।

﴿إِنَّهُ هُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ﴾

তিনি তো সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।

﴿هَلْ أُنَبِّئُكُمْ عَلَىٰ مَنْ تَنَزَّلُ الشَّيَاطِينُ﴾

তোমাদেরকে কি আমি জানাব কার কাছে শয়তানরা নাযিল হয়?

﴿تَنَزَّلُ عَلَىٰ كُلِّ أَفَّاكٍ أَثِيمٍ﴾

তারা তো নাযিল হয় প্রত্যেকটি ঘোর মিথ্যাবাদী ও পাপীর কাছে।

﴿يُلْقُونَ السَّمْعَ وَأَكْثَرُهُمْ كَاذِبُونَ﴾

তারা কান পেতে থাকে এবং তাদের অধিকাংশই মিথ্যাবাদী [১]।

﴿وَالشُّعَرَاءُ يَتَّبِعُهُمُ الْغَاوُونَ﴾

আর কবিগণ, তাদের অনুসরণ তো বিভ্ৰান্তরাই করে।

﴿أَلَمْ تَرَ أَنَّهُمْ فِي كُلِّ وَادٍ يَهِيمُونَ﴾

আপনি কি দেখেন না যে, ওরা উদভ্ৰান্ত হয়ে প্রত্যেক উপত্যকায় ঘুরে বেড়ায়?

﴿وَأَنَّهُمْ يَقُولُونَ مَا لَا يَفْعَلُونَ﴾

এবং তারা তো বলে এমন কথা, যা তারা করে না।

﴿إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَذَكَرُوا اللَّهَ كَثِيرًا وَانْتَصَرُوا مِنْ بَعْدِ مَا ظُلِمُوا ۗ وَسَيَعْلَمُ الَّذِينَ ظَلَمُوا أَيَّ مُنْقَلَبٍ يَنْقَلِبُونَ﴾

কিন্তু তারা ছাড়া যারা ঈমান এনেছে, সৎকাজ করেছে, আল্লাহ্‌কে বেশী পরিমাণ স্মরণ করেছে এবং অত্যাচারিত হওয়ার পর প্রতিশোধ গ্ৰহণ করেছে। আর যালিমরা শীঘ্রই ফিরে যাবে জানবে কোন ধরনের গন্তব্যস্থলে তারা ফিরে যাবে।

الترجمات والتفاسير لهذه السورة: